পিয়ালি মৃত্যু-রহস্য
দরজা কি ভিতর থেকে বন্ধ ছিল, এখনও প্রশ্ন
তৃণমূল ছাত্রনেত্রী ও আইনজীবী পিয়ালি মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাটের দরজা কি ভিতর থেকে বন্ধ ছিল? নাকি বাইরে থেকে কেউ টেনে দরজা বন্ধ করে দিয়েছিল? তদন্তে নেমে এখন এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, পিয়ালি যে ফ্ল্যাটে থাকতেন সেই ফ্ল্যাটের দরজা বাইরে থেকে টেনে দিলে বন্ধ হয়ে যায়। পিয়ালির ঘরের দরজা ভেতর থেকে লক করা ছিল কিনা, তার নিশ্চিত উত্তর মিলছে না।
ঘটনার দিন দরজা ভাঙার সময় উপস্থিত ছিলেন পিয়ালির ভাই প্রীতম। তিনি বলেন, “দিদির ঘরের দরজা বাইরে থেকে টেনে বন্ধ করা যায়। আর ল্যাচটা ভেতর থেকে ঘুরিয়ে লক করে দেওয়া যায়। ঘটনার দিন প্রচুর ধাক্কাধাক্কি করার পরেও দরজা খোলেনি। তখন ফ্রেম কেটে পুরো দরজাটা খুলে নেওয়া হয়।” দরজার ওই ল্যাচ ভেতর থেকে লক করা ছিল কিনা, খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা। বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের গোয়েন্দা প্রধান অর্ণব ঘোষ বলেন, “দরজার পাল্লা পরীক্ষা করে দেখছি। ল্যাচের লক কী অবস্থায় ছিল, তা-ও পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।”
তদন্তকারী অফিসাররা জানিয়েছেন, ঘটনার দিন, অর্থাৎ ২৬ মার্চ, ফ্ল্যাটের দরজা ভাঙার আগেই পিয়ালির মৃত্যুর খবর রটে গিয়েছিল। সে দিন দুপুরেই এক তৃণমূল নেতার ফোনে পিয়ালির মৃত্যুর খবর পেয়ে যান বলে সংবাদমাধ্যমকে জানান পিয়ালি-ঘনিষ্ঠরা। অথচ ফ্ল্যাটের বাইরে থেকে পিয়ালির ঝুলন্ত দেহ দেখতে পাওয়া যাচ্ছিল না। তাই ফ্ল্যাটের দরজা কেউ বাইরে থেকে টেনে বন্ধ করে চলে গিয়েছিল কিনা, সেই বিষয়টিও পুলিশকে ভাবাচ্ছে।
উঠছে আরও বেশ কয়েকটি প্রশ্ন। ২৭ মার্চ কলকাতার আর জি কর হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পরে পিয়ালির দেহ রাত সাড়ে সাতটা নাগাদ বর্ধমানে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর আটটার মধ্যে খুব দ্রুত শ্মশানে দাহ সারা হয় বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ। পিয়ালির প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, কোনও বড় নেতা বা মন্ত্রী পিয়ালির শবদেহর সঙ্গে বর্ধমানে আসেননি। এসেছিলেন কলকাতারই কিছু তৃণমূল সমর্থক। কয়েক জন প্রতিবেশী জানিয়েছেন, তাঁদের পিয়ালির দেহের কাছে যেতে দেওয়া হয়নি। তাঁদের প্রশ্ন, এত দ্রুত কেন দাহকাজ সারা হল? তা হলে কি ফের ময়নাতদন্ত হোক, স্থানীয়দের এই দাবি ওঠার আগেই দেহ দাহ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়?
এ দিকে, পিয়ালির সম্পত্তি খতিয়ে দেখতে গিয়ে পুলিশ জানতে পেরেছে, রাজারহাটের যে ফ্ল্যাটে পিয়ালি ভাড়া থাকতেন সেটা ২৩০০ বর্গফুটের। এর আগে পিয়ালি কেষ্টপুরের যে ফ্ল্যাটে থাকতেন সেটা ছিল ৭৫০ বর্গফুটের। কেষ্টপুরের থেকে কয়েক গুণ বেশি ভাড়া ছিল রাজারহাটের ফ্ল্যাটের। মাত্র কয়েক মাসের মধ্যে কেষ্টপুর থেকে এত বেশি ভাড়ার ফ্ল্যাটে তিনি কেন, কী করে উঠে গেলেন, সেটাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
পিয়ালির আয়ের উৎস সন্ধান করতে গিয়ে পুলিশ জানতে পেরেছে, ব্যাঙ্কশাল কোর্টের আইনজীবী ছাড়াও দু’টি সংস্থার আইনি পরামর্শদাতা হিসেবে কাজ করতেন পিয়ালি। ওই দু’টি সংস্থা থেকে তিনি মোটা টাকার বেতন পেতেন। ওই দুই সংস্থায় কোনও মন্ত্রীর প্রভাব খাটিয়ে পিয়ালি কাজ পেয়েছিলেন বলে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান। ওই দুই বেসরকরি সংস্থায় কাজ করতে করতেই বর্ধমানের একটি প্রাথমিক স্কুলেও চাকরি করতেন পিয়ালি। তা-ও ওই মন্ত্রীর প্রভাবে কিনা, সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সপ্তাহের শেষে স্কুল সংক্রান্ত কাজে লালবাতি লাগানো গাড়িতে পিয়ালিকে কলকাতা থেকে বর্ধমানে আসতে দেখা যেত বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারী অফিসারররা।

পুরনো খবর:
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.