পিয়ালির রহস্য-মৃত্যু
ময়নাতদন্তের পরে গেস্ট হাউসে একা বিমর্ষ মন্ত্রী
রাজারহাটের ফ্ল্যাটে মৃত তৃণমূল ছাত্রনেত্রী পিয়ালি মুখোপাধ্যায়ের দেহের ময়নাতদন্ত হয়েছিল রাজ্যের এক প্রভাবশালী মন্ত্রীর উপস্থিতিতে। দোলের দিন, ২৭ মার্চ আর জি কর হাসপাতালে ময়নাতদন্তের সময়ে আগাগোড়া উপস্থিত ছিলেন ওই মন্ত্রী।
মন্ত্রীর সেই উপস্থিতি ময়নাতদন্ত রিপোর্টে কোনও প্রভাব ফেলেছে কি না, পুলিশ তা খতিয়ে দেখছে। বিধাননগর কমিশনারেটের গোয়েন্দা প্রধান অর্ণব ঘোষ বলেন, “আমরা সব দিকই খতিয়ে দেখছি। এখনই সব প্রকাশ করা যাবে না। যাদের দরকার, সবাইকেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।”
পুলিশ জানতে পেরেছে, আর জি করে ময়নাতদন্তের পরে মন্ত্রী একাই বাঙুরের ‘এ’ ব্লকে একটি গেস্ট হাউসে যান। সেখানে তিনি বিমর্ষ ভাবে অনেকক্ষণ বসে ছিলেন বলে কর্মীরা জানিয়েছেন। পিয়ালির আয়ের উৎস সন্ধান করতে গিয়ে প্রথম ওই গেস্ট হাউসের সন্ধান পায় পুলিশ। কয়েক জন মন্ত্রীর সঙ্গে পিয়ালি সেখানে ঘনঘন যাতাযাত করতেন। গত বছর পুজোর আগে ওই গেস্ট হাউসে তল্লাশি চালিয়ে কয়েক জনকে আপত্তিকর অবস্থায় ধরেছিল লেকটাউন থানার পুলিশ। পরে এক মন্ত্রীর হস্তক্ষেপে বিষয়টি মিটমাট হয়। পিয়ালি সেখানে যেতেন কেন, সে ব্যাপারে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। গেস্ট হাউসের অতিথি তালিকাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
দু’বছর আগেও যিনি বর্ধমানের একটি প্রাথমিক স্কুলে পড়াতেন, সেই পিয়ালি কী করে ব্যাঙ্কশাল কোর্টে আইনজীবীর কাজ করতে এসেই দামি ফ্ল্যাটে থাকতে শুরু করলেন তা নিয়ে পুলিশ যথেষ্ট সন্দিহান। গত ২৬ মার্চ রাজাহাটের নারায়ণপুরে সেই ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙেই পিয়ালির ঝুলন্ত দেহ বের করা হয়। পুলিশ সূত্রের খবর, ওই ফ্ল্যাটেও যে কিছু নেতা-মন্ত্রীর যাতায়াত ছিল তা পিয়ালির ল্যাপটপ থেকে পাওয়া কিছু ভিডিও ক্লিপিংসে পরিষ্কার। পিয়ালির সঙ্গে তাঁদের সম্পর্ক এতটাই ঘনিষ্ঠ ছিল যে এক মন্ত্রী পিয়ালিকে একটি দামি গাড়ি সব সময়ের জন্য ব্যবহার করতে দেন।
তবে পিয়ালির মৃত্যুর পর থেকেই রাজারহাট নিউটাউনের অধিকাংশ তৃণমূল নেতা দাবি করছেন, তাঁরা কেউ ওই তরুণীকে চিনতেন না। এমনকী নামটা প্রথম বার শুনলেন বলেও অনেকে পুলিশকে জানান। যদিও তদন্তকারী অফিসারদের মতে, বড়-বড় নেতা ও মন্ত্রীর সঙ্গে সুসম্পর্কের কারণে এলাকার ছোটো ও মাঝারি মাপের নেতারাও পিয়ালির নাম জানতেন। তবে কেন তাঁরা এখন তা লুকোতে চাইছেন? কাউকে আড়াল করতে বা কোনও তথ্য গোপন করতে কিছু না জানার ভান করা হচ্ছে কি না তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
তবে প্রশ্ন রয়েছে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও। পিয়ালির ঘর থেকে যে ‘সুইসাইড নোট’ পাওয়া গিয়েছিল, সেটির হাতের লেখা পিয়ালিরই কি না সে ব্যাপারে এখনও পরিষ্কার জবাব মেলেনি। পিয়ালির বাড়ির লোকের অভিযোগ, পুলিশ তাঁদের ‘সুইসাইড নোট’ ভাল করে দেখায়নি। দূর থেকে দেখিয়েই সেটি সরিয়ে নেওয়া হয়। বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের কোনও অফিসার এ ব্যাপারে মুখ খোলেননি। নোটটি কোনও হস্তরেখা বিশেষজ্ঞের কাছে পাঠানো হয়েছে কি না, তার সদুত্তর মেলেনি। পুলিশ ফ্ল্যাটের দরজা ভাঙার আগেই কী করে পিয়ালির আত্মহত্যার খবর সর্বত্র রটে গেল, তারও ব্যাখ্যা মেলেনি।

পুরনো খবর:
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.