অস্বাভাবিক মৃত্যু হল সল্টলেকের রূপকলা কেন্দ্রে পাঠরতা এক ছাত্রীর। পুলিশ জানায়, মৃতার নাম ত্রিপর্ণা নাগ (২৩)। বাড়ি বৌবাজারের কানাই ধর লেনে। বুধবার দুপুরে এসএসকেএম হাসপাতালে ত্রিপর্ণার মৃত্যু হয়। ময়না-তদন্তের পরে বৃহস্পতিবার নিমতলা শ্মশানে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে। কী ভাবে ওই ছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে, তা নিয়ে ধন্দে পুলিশও। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, ময়না-তদন্তের রিপোর্টে বিষক্রিয়ার প্রমাণ মিলেছে।
পুলিশ জানায়, ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে স্নাতক হওয়ার পরে রূপকলা কেন্দ্রে অ্যানিমেশন ক্রিয়েশন অ্যান্ড ডিরেকশন
|
ত্রিপর্ণা নাগ |
নিয়ে ভর্তি হন ত্রিপর্ণা। তৃতীয় বর্ষের ওই ছাত্রী ২৬ মার্চ রূপকলা কেন্দ্রে অসুস্থ হয়ে পড়েন। পুলিশ সূত্রে খবর, কেন্দ্রের শৌচাগারে অচৈতন্য অবস্থায় ত্রিপর্ণাকে পড়ে থাকতে দেখেন তাঁর সহপাঠীরা। এর পরেই সল্টলেকের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ওই তরুণীকে। ১ এপ্রিল তাঁকে এসএসকেএম হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। পুলিশ জানায়, ভবানীপুর থানায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু হয়েছে। বিধাননগর কমিশনারেটের তরফে তদন্ত রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে কলকাতা পুলিশকে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, বিষক্রিয়ার জেরেই মৃত্যু।
ত্রিপর্ণার বাবা তপনকুমার নাগ স্বাস্থ্য দফতরের কর্মচারী। তিনি জানান, ঘটনার দিন সকাল সাড়ে এগারোটার সময়ে তাঁর স্ত্রী তপতীদেবীর সঙ্গে মেয়ের কথা হয়েছিল। তখন কোনও অস্বাভাবিক আচরণ দেখা যায়নি। দুপুর দেড়টা নাগাদ একটি ছেলে ফোন করে জানায়, কিছু খেয়ে ফেলে ত্রিপর্ণা অসুস্থ হয়েছেন। তপনবাবু বলেন, “হাসপাতালে গিয়ে দেখি মেয়ের অবস্থা সঙ্কটজনক। আইসিসিইউতে ভর্তি। কোথা থেকে কী ঘটে গেল, বুঝতেই পারছি না।”
এ দিন কানাই ধর লেনে গিয়ে দেখা যায়, পাড়া থমথমে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বাবা-মায়ের একমাত্র মেয়ে ত্রিপর্ণা ওরফে গুড্ডু খুবই মিশুকে স্বভাবের ছিলেন। বিকেলে ত্রিপর্ণার দেহ তাঁর বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হলে কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিজনেরা। এক প্রতিবেশী প্রশান্ত মালাকার বলেন, “গুড্ডুকে দেখে বোঝা দায় যে, বিষক্রিয়ায় ওর প্রাণ গেল। হাতের আঙুলে এমন একটা ছাপ রয়েছে যেন টিপ সই দিয়েছে। এই মৃত্যু রহস্যজনক। কারণ জানতে চেয়ে আমরা প্রশাসনের দ্বারস্থ হব।” স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, ত্রিপর্ণার দু’বার করে ময়না-তদন্ত হয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, ওই দিন রূপকলা কেন্দ্রে ঠিক কী ঘটেছিল, তা জানা গেল না। কেন রূপকলা কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ কিংবা ত্রিপর্ণার সহপাঠীরা নিশ্চুপ, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন প্রতিবেশীরা। মৃত্যুর কারণ জানতে অভিযোগ দায়ের হবে বলে জানায় ত্রিপর্ণার পরিবার। অভিযোগের জবাবে রূপকলা কর্তৃপক্ষ বা ওই তরুণীর সহপাঠীরা কেউ মন্তব্য করতে চাননি। |