গৃহকর্ত্রীর চোখে অ্যাসিড ছুড়ে ধৃত আয়া
বাড়ির আয়ার নামে সংশ্লিষ্ট আয়া সেন্টারে অভিযোগ করেছিলেন গৃহকর্ত্রী। ঘুণাক্ষরেও ভাবেননি বাড়ি এসে তাঁর চোখে অ্যাসিড ছুড়বে সেই আয়া। তবে চোখে-মুখে অ্যাসিডের জ্বালা নিয়ে গুরুতর জখম অবস্থাতেও গৃহকর্ত্রী ছাড়েননি আক্রমণকারীকে। ধরা পড়ে যায় শুভ্রা দাস (২৮) নামে ওই আয়া। শুক্রবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে বিধাননগরের শ্যামলী আবাসনে। ওই আয়াকে গ্রেফতার করেছে বিধাননগর উত্তর থানার পুলিশ। বিধাননগর পুর-এলাকার শান্তিনগরের বাসিন্দা শুভ্রার বিরুদ্ধে অ্যাসিড ছুড়ে মারা, ছিনতাইয়ের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের করেছে আক্রান্ত মহিলার পরিবার।
আক্রান্ত গৃহকর্ত্রী শম্পা সিংহকে সল্টলেকের এক হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। হাসপাতাল সূত্রে খবর, অ্যাসিডের জেরে তাঁর দু’টি চোখই গুরুতর জখম হয়েছে। রাতে শম্পাদেবীকে এনআরএসে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
জখম শম্পা সিংহ। —নিজস্ব চিত্র
শ্যামলী আবাসনের বি ব্লকের চারতলায় একটি ফ্ল্যাটে থাকেন শম্পাদেবী। তাঁর স্বামী, সরকারি কর্মী গৌতম সিংহ কর্মসূত্রে বহরমপুরে থাকেন। তাঁদের এক আত্মীয় রাজ্য পুলিশের উচ্চপদস্থ অফিসার।
শম্পাদেবী জানান, তাঁর শাশুড়ি কয়েক মাস তাঁদের ফ্ল্যাটে ছিলেন। শম্পাদেবীর ভাইও তাঁর সঙ্গে থাকেন। শাশুড়ির জন্য বিধাননগরের একটি আয়া সেন্টার থেকে শুভ্রাকে নিয়োগ করা হয়। মার্চের প্রথম সপ্তাহে শম্পাদেবীর বাড়িতে রোজ রাত আটটা থেকে বারো ঘণ্টার ডিউটিতে যোগ দেয় সে। তার কাজে গাফিলতি দেখে শম্পাদেবী আয়া সেন্টারে অভিযোগ করেন। শুভ্রাকে সরিয়ে অন্য এক আয়া বহাল হন। শম্পাদেবীর বাড়িতে জামাকাপড়ের ব্যাগ ফেলে যায় শুভ্রা।
পুলিশ জানায়, শম্পাদেবী তাদের জানিয়েছেন, সকালে এক আত্মীয়ের বাড়িতে চলে যান তাঁর শাশুড়ি। ভাইও কাজে বেরিয়ে যান। বেলা ১১টার পরে শুভ্রা ওই বাড়িতে যায়। জামাকাপড়ের ব্যাগ নিয়ে যাবে বলে থলে হাতে ঘরে ঢোকে সে। তার পরে সে বলে বাথরুমে যাবে। শম্পাদেবী বলেন, “বাথরুমে গিয়েই হাতে গ্লাভস পরে আয়া। হাতের থলে থেকে একটা বোতল বার করে বলে আমার সঙ্গে রং খেলবে।” কিছু বুঝে ওঠার আগেই গৃহকর্ত্রীর মুখে ওই বোতল থেকে অ্যাসিড ছুড়ে দেয় শুভ্রা। শম্পাদেবী বলেন, “চোখ-মুখ ভীষণ জ্বলছিল। তখনই মনে হয়, ঘরের বাইরে না গেলে বাঁচব না।” প্রাণপণে আয়ার হাত চেপে ধরেন তিনি। শুভ্রা শম্পাদেবীর গলার হার টানার চেষ্টা করলে তার হাতে কামড় বসান। শুভ্রার হাত চেপে ধরে কোনও মতে দরজা খুলে তাকে সিঁড়ি থেকে হিঁচড়ে টেনে নীচের তলা পর্যন্ত নিয়ে গিয়ে একটি ফ্ল্যাটের দরজার সামনে পড়ে যান শম্পা। তাঁর চিৎকারে বেরিয়ে আসেন অন্য বাসিন্দারা। প্রতিবেশী কস্তুরী দত্ত বলেন, “দরজা খুলে দেখি এক হাতে আয়াকে ধরে পড়ে আছে শম্পা। অসীম সাহস, তাই ও বেঁচে গেল।”
কী কারণে শুভ্রা এমন করল, তা নিয়ে ধন্দে পুলিশ। পুলিশের দাবি, জিজ্ঞাসাবাদে সে অসংলগ্ন কথা বলছে। শম্পাদেবীর প্রতি আক্রোশের কথা যেমন বলছে, তেমন টাকার প্রয়োজনের কথাও বলেছে। শম্পাদেবীর দাবি, “ওর অন্য উদ্দেশ্য ছিল মনে হয়। আমার বাড়ি থেকে চলে গিয়েও এখনকার আয়ার সঙ্গে রোজ যোগাযোগ করত।”
আয়া সেন্টার কর্তৃপক্ষ জানান, শুভ্রা মার্চ মাসে তাঁদের সেন্টারে যোগ দেয়। শম্পাদেবীর অভিযোগ পেয়ে কর্তৃপক্ষ তাঁকে বিধাননগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে কাজে পাঠায়। এ দিন সেখানে যায়নি শুভ্রা। অসুস্থতার জন্যই এ দিন সে কাজে যোগ দেয়নি বলে আয়া সেন্টারকে জানিয়েছিল সে। শুভ্রার শান্তিনগরের বাড়িতে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.