ধস সরিয়ে ক্রমশ স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে উত্তর সিকিম। রবিবার লাচুংয়ে আটকে থাকা পর্যটকদের গ্যাংটক রওনা করিয়ে দেয় প্রশাসন। তবে শনিবার থেকে পূর্ব সিকিমে তুষারপাত শুরু হওয়ায় ছাঙ্গু থেকে নাথুলা পর্যন্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের সিকিমের আধিকারিক গোপীনাথ রাহা বলেন, “বৃষ্টিপাত চলবে। পূর্ব সিকিমে তুষারপাত অব্যাহত থাকবে।”
শনিবারের পর রবিবারেও উত্তর সিকিম জুড়েই বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির কারণে ব্যাহত হয়েছে ধসে বিধ্বস্ত রাস্তা মেরামতির কাজ। রবিবার রাস্তা মেরামতির কাজ শেষ না হলেও গাড়ি চলাচলের উপযোগী করে দেওয়া হয়েছে বলে প্রশাসন জানিয়েছে। এ দিন সকাল থেকে স্বাভাবিক যান চলাচল শুরু হয়। লাচুংয়ে আটক প্রায় ১০০ পর্যটককে এ দিন সকালে গ্যাংটকের পথে রওনা করিয়ে দেওয়া হয়। সিকিম প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, ধসে উত্তর সিকিমে কোনও পর্যটক দল আটকে নেই। চুংথাঙের গুরুদ্বারে আটকে থাকা পর্যটকদেরও গাড়ি পাঠিয়ে গ্যাংটকে পাঠানো হয়েছে বলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে। তবে, বৃষ্টি চলতে থাকায় নতুন করে বড়সর ধসের আশঙ্কা উড়িয়ে দেয়নি প্রশাসন।
গত শুক্রবার সন্ধ্যায়ও অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণেই পরপর দু’দফায় ধস নেমেছিল উত্তর সিকিমের মালটিন এবং টুঙে। রাস্তা বন্ধ হয়ে গিয়ে লাচুং এবং চুংথাঙের মত দু’টি জনপ্রিয় পর্যটন এলাকার সঙ্গে উত্তর সিকিমের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। আটকে পড়েন কয়েকশো পর্যটক। রাতভর পযর্টকদের নির্জন পাহাড়ি এলাকায় কাটাতে হয়। এই পরিস্থিতি এড়াতে উত্তর সিকিম প্রশাসন সূত্রে পর্যটন সংস্থা এবং গাড়ি চালকদের সংগঠনগুলিকে নির্দেশ দিয়ে জানানো হয়েছে, দুপুরের পরে চুংথাং, লাচুং-সহ উত্তর সিকিমের দুর্গম এলাকা দিয়ে পর্যটকদের গাড়ি চলাচল করতে পারবে না। দুপুরের আগেই ওই এলাকাগুলি পেরিয়ে যেতে হবে। চুংথাঙের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক তাসি জেঙপো বলেন, “এটি
কোনও নতুন নির্দেশ নয়। এর
আগেও একাধিকবার এই নির্দেশ জানানো হয়েছিল। শুক্রবারের
পরে ফের এই নির্দেশ জারি করা হয়েছে। অমান্য করলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
অন্য দিকে, শনিবার থেকেই তুষারপাত শুরু হয়েছে পূর্ব সিকিমে। সড়কের ওপরে বরফের পুরু স্তর জমে থাকায় ছাঙ্গু থেকে নাথুলা পাস পযর্ন্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত। ছাঙ্গু বাজার এলাকায় শনিবার বিকেলে পর্যটকদের বেশ কয়েকটি গাড়ি আটকে যায়। স্থানীয় বাসিন্দা এবং গাইডরা রাস্তা পরিষ্কার করলে ফের যান চলাচল শুরু হয়। তুষারপাতের কারণে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার আশঙ্কায় প্রশাসন থেকেও বাড়তি সর্তকতা নেওয়া হয়েছে। কলকাতার বাসিন্দা শুভাশিস দত্ত বর্তমানে পূর্ব সিকিমে। তিনি বলেন, “ছাঙ্গুর আগে থেকেই তুষারে রাস্তা বন্ধ হয়ে ছিল। ফেরার সময়েও বরফের জন্য অনেকক্ষণ রাস্তায় আটকে থাকতে হয়েছে। তবে তুষারপাতের আনন্দ ভালই উপভোগ করেছি। প্রশাসনও সাহায্য করেছে।”
|