|
|
|
|
মিজোরাম |
জঙ্গি কবল থেকে মুক্ত পাঁচ বনকর্মী |
নিজস্ব সংবাদদাতা • গুয়াহাটি |
টানা ৩৭ দিন বাংলাদেশের জঙ্গি ঘাঁটিতে বন্দি থাকার পরে মিজোরাম বন দফতরের তিন কর্মী ও দুই ঠিকাকর্মী অবশেষে মুক্তি পেলেন। মিজোরাম ও ত্রিপুরা পুলিশের যৌথ অভিযান এবং বাংলাদেশ সরকারের সাহায্যে পাঁচ অপহৃতকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। কাল পরিবারের সঙ্গে মিলিত হলেন তাঁরা।
ফেব্রুয়ারির ১৯ তারিখে ত্রিপুরী জঙ্গি সংগঠন এনএলএফটির বিশ্বমোহন গোষ্ঠীর ৯ জঙ্গি ও ১৬ জন ব্রু জঙ্গি মামিত জেলার ডাম্পা অভয়ারণ্যে হানা দেয়। নেলসন ভানলালরুয়াতকিমা, ভানলালফাকা রিয়াং, লালসাংমাওইয়া নামে তিন বনকর্মী ও হাংথার ভেং ও লালরিনমাওইয়া নামে দুই ঠিকাভিত্তিক জেসিবি চালককে তারা অপহরণ করে। ২৩ ফেব্রুয়ারি এনএলএফটির তরফে ডাম্পা ব্যাঘ্র প্রকল্পের অধিকর্তা লানা জাথাংকে ফোন করে মুক্তিপণ চাওয়া হয়। পুলিশ, সিআইডি (স্পেশ্যাল ব্রাঞ্চ), আইআরবি যৌথ ভাবে উদ্ধার কাজে নামে। সাহায্য চাওয়া হয় ত্রিপুরা পুলিশেরও। সিআইডির এসপি (স্পেশ্যাল ব্রাঞ্চ) এইচ রামথেনলিয়ান জানান, অপহৃতদের এনএলএফটি সংগঠনের বাংলাদেশের থংনাং ঘাঁটিতে রাখা হয়েছিল। তাই, মিজোরাম ও ত্রিপুরা পুলিশ উদ্ধার অভিযান চালাতে পারছিল না। প্রতিদিন জঙ্গিরা ফোন করে এক কোটি টাকা চাইত। কিন্তু, সরকারি তরফে সাফ জানানো হয়, মুক্তিপণ দেওয়া হবে না। এর ফলে অপহৃত পাঁচ বনকর্মীর পরিবার কার্যত আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন।
মিজোরাম ও ত্রিপুরা সরকারের তরফে বাংলাদেশ সরকারকে গোটা ঘটনাটি জানানো হয়। সেই সঙ্গে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর গোয়েন্দারা এনএলএফটির নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন। জানা যায়, এনএলএফটি সংগঠনের শীর্ষ নেতাদের অজান্তেই অন্য এক নেতা ব্রু-উপজাতির যুবকদের নিয়ে নতুন জঙ্গি সংগঠন গড়ে তোলাবাজি ও অপহরণ চালাচ্ছে। এরপর এক দিকে এনএলএফটির উপরে চাপ বাড়ানো হতে থাকে, অন্যদিকে কূটনৈতিকভাবেও উদ্ধারের চেষ্টা চলে। শেষ পর্যন্ত ২৮ মাচ থংনাং ঘাঁটি থেকে পাঁচ অপহৃতকে মুক্তি দেওয়া হয়।
থংনাং থেকে ভারতের সীমান্ত বহুদূর। পাহাড় ও জঙ্গলের মধ্য দিয়ে ২১ ঘণ্টা হেঁটে ২৯ মার্চ ভোরে ওই পাঁচজন বাংলাদেশ-মিজোরাম সীমান্তে পৌঁছন। সেখান থেকে বিকেল তিনটে নাগাদ সিআইডির গাড়িতে আইজল পাড়ি। জাথাং বলেন, “আশা ছেড়ে দেওয়া পরিবারের সদস্যরা ওই পাঁচজনকে ফিরে পেয়ে খুব খুশি। আমাদের উপর দিয়েও ঝড় বয়ে গিয়েছে। প্রতিদিনই জঙ্গিরা টাকা না পেলে কর্মীদের মেরে ফেলার হুমকি দিত। কিন্তু, সরকারের মাথা নত করার উপায় নেই। এ দিকে, ওঁদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলারও মুখ ছিল না। গত কালের মিলনোৎসবে আমরাও কেঁদে ফেলেছিলাম।” |
|
|
|
|
|