অবশেষে অনিশ্চয়তার ইতি। পূর্ব গারো পাহাড়ের জেলাশাসক বিজয় মন্ত্রীর হস্তক্ষেপে এই জেলারই একটি স্কুলে ভর্তি হল উইলিয়ামনগরের গণধর্ষিতা ছাত্রী। সেই সঙ্গে ওই ছাত্রীর নিরাপত্তা ও অভিভাবকত্বের ভারও আপাতত জেলাশাসক নিজের হাতে তুলে নিলেন।
গত ডিসেম্বরে ধর্ষণের ঘটনার পর ওই ছাত্রী ও তার পরিবার কার্যত সামাজিক বয়কটের মুখে পড়ে। প্রতিবেশীদের চাপে তাঁদের বাসস্থান ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে হয়। ওই ছাত্রীকে ভর্তি করতে চায়নি তার আগের স্কুল। অন্য স্কুলও তাকে ফিরিয়ে দেয়। শুধু তাই নয়, ধর্ষণের অভিযোগে এক মন্ত্রীর আত্মীয় ও এক আত্মসমর্পণকারী জঙ্গি গ্রেফতার হওয়ায় ওই মন্ত্রী ও এএনভিসি জঙ্গি সংগঠনের তরফে মেয়েটিকে মামলা প্রত্যাহারের জন্য সমানে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। এই ঘটনা নিয়ে ‘সিভিল সোসাইটি উওমেন্স অর্গাাইজেশন’ সরব হয়।
এনসিপি দলের প্রাক্তন রাজ্যসভা সাংসদ রবার্ট খারসিং সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি আলতামাস কবীরের কাছে স্মারকলিপি পাঠান। বিধানসভাতেও বিষয়টি উত্থাপিত হয়। রাজ্যপাল আর এস মুশাহারি ঘটনার দ্রুত বিচার ও মেয়েটির প্রতি ন্যায়ের আশ্বাস দেন।
এর পরেই গত কাল পূর্ব গারো পাহাড়ের জেলাশাসক বিজয় মন্ত্রী নিজে উদ্যোগী হয়ে উইলিয়ামনগরেই একটি স্কুলে মেয়েটির ভর্তির ব্যবস্থা করান।
পড়শিদের চাপ ও জঙ্গি হুমকির জেরে মেয়েটি ও তার পরিবার এতদিন তুরায় আত্মগোপন করে ছিল। জেলাশাসক জানান, মেয়েটির নিরাপত্তার পুরো দায়িত্ব জেলা প্রশাসন নেবে। উইলিয়ামনগরে তিনি নিজে মেয়েটির স্থানীয় অভিভাবক হবেন। পাশাপাশি এ নির্দেশও তিনি দেন যে, মেয়েটিকে এএনভিসি সংগঠনের কেউ হুমকি দিলে সঙ্গে সঙ্গে তাকে জামিন অযোগ্য ধারায় গ্রেফতার করতে হবে। জেলাশাসক বলেন, “আপাতত আমাদের লক্ষ্য লেখাপড়ার মেয়েটির যে ক্ষতি হয়েছে তা পূরণ করা এবং তাকে ফের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে নিয়ে আসা।” সমাজকল্যাণ মন্ত্রী দেবোরা মারাক বলেন, “মেয়েটিকে সাহায্য করতে সরকার সব রকম ব্যবস্থা নেবে। তদন্ত বা বিচার প্রক্রিয়াকে কেউ প্রভাবিত করতে পারবে না। আইন নিজের
পথে চলবে।”
|