সিকিমে ধস
গুরুদ্বারের বারান্দায় রাত কাটছে পর্যটকদের
ত্তর সিকিমের চুঙথাঙ এলাকার দুর্গম পাহাড়ের গুরুদ্বারই এখন ধসে আটকে পড়া বাঙালি পর্যটকদের ভরসা।
শুক্রবার শেষ বিকেলে, ধস নামার পর থেকে ওই গুরুদ্বারের বারান্দা কিংবা এক চিলতে ঘরই তাঁদের মাথার ছাদ। আর কিছু না মিলুক, লঙ্গরখানা থেকে খাবার আর জলটুকু পৌঁছে দিচ্ছেন গুরুদ্বারের ধর্মীয় উপাসকেরা।
দুর্যোগের ২৪ ঘণ্টা পরেও সিকিমের স্থানীয় প্রশাসনের তরফে কোনও সাহায্য আসেনি। তবে, গুরুদ্বারের কর্মীরা সর্বক্ষণ তাঁদের পাশে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন পর্যটকেরা। নিরুপায় পর্যটকেরা শনিবার সকালেই গিয়েছিলেন চুঙথাঙ থানায়। কসবার রাজডাঙার বাসিন্দা মহুয়া দত্ত তাঁদেরই একজন। ফোনে তিনি বলেন, “থানায় যায় পুলিশের কাছে সাহায্য চাইতে। সেখানে স্পষ্ট জানানো হল, গাড়ি বা থাকার ব্যবস্থা করা সম্ভব নয়। উল্টে তাঁদের পরামর্শ, হোটেলে ফোন করে গাড়ি চেয়ে পাঠাতে হবে আমাদেরই।”
তবে, ওই পর্যটকদের কয়েকজন জানান, তাঁদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন দার্জিলিঙের জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন। মহাকরণের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর থেকেও তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করে দ্রুত ‘ব্যবস্থা’ নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। পর্যটন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরীও এ দিন মহাকরণে বলেন, “পড়শি রাজ্যের সরকারের সঙ্গে আমার দফতরের অফিসাররা যোগাযোগ রেখেছেন। সেনাবাহিনীর ‘বর্ডার রোড অর্গানাইজেশন’-এর (বিআরও) তরফে সিকিমকে জানানো হয়েছে শনিবার বিকেলের মধ্যে রাস্তা পরিষ্কার করে দেওয়া হবে।”
রাস্তা সারাইয়ের কাজ যে হচ্ছে না তা নয়। তবে, বৃষ্টি আর নতুন করে দু-একটি জায়গায় ধস নামায় মাঝে মধ্যেই থমকে যাচ্ছে কাজ। শনিবার বিকেলে অবশ্য সেনা নামায় কাজে গতি এসেছে বলে জানা গিয়েছে।
শুক্রবার বিকেল পৌনে পাঁচটা নাগাদ, উত্তর সিকিম জেলার লাচুঙ এবং চুঙথাঙের মাঝে মালটিন এবং টুঙ এলাকায় পর পর দু-বার ধস নামে। বন্ধ হয়ে যায় রাস্তা। বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে রাজধানী গ্যাংটকের সঙ্গে সড়ক যোগাযোগ। পাহাড় থেকে গড়িয়ে পড়া পাথরে রাস্তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আটকে পড়েন অসংখ্য পর্যটক। রাতভর অন্তত ২৫০ জন পর্যটক আটকে থাকেন ওই রাস্তাতেই।
দিন তিনেক আগে সপরিবারে গ্যাংটক পৌঁছে ছিলেন মহুয়াদেবী। শুক্রবার সেখান থেকে ইয়ুমথাং যাচ্ছিলেন তাঁরা। তিনি জানান, লাচুং-এর কিছুটা আগে ধস নামে। সার-সার গাড়ি দাঁড়িয়ে যায়। ওই এলাকায় জনবসতি প্রায় নেই। প্রবল শীতে কাঁপতে কাঁপতেই প্রায় পাঁচ কিলোমিটার উৎরাইয়ে চুঙথাঙ পৌঁছন আটক শ’পাঁচেক পর্যটক। আশ্রয় নেন সেখানকার গুরুদ্বারে। পর্যটকদের অনেকেরই অভিযোগ, স্থানীয় বাসিন্দারা কিন্তু তাঁদের সাহায্যে এগিয়ে আসেননি। উল্টে সুযোগ বুঝে, জিনিসপত্রের দাম চড়িয়ে দিয়েছেন।
প্রশাসন সূত্রে খবর, আলোর অভাবে রাতের বেলায় উদ্ধার কাজ শুরু করা যায় নি। রাতভর রাস্তাতেই আটকে থাকতে হয়েছে পর্যটকদের। নির্জন পাহাড়ি এলাকায় খাবার ও জলের অভাবে দুর্ভোগের কথাও এ দিন মেনে নিয়েছেন সিকিম প্রশাসন। চুঙথাঙের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক তাসি জেঙপো বলেন, ‘‘রাতে উদ্ধার কাজ শুরু করা যায়নি। তবে পর্যটকদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। শনিবার সকাল ১০টার মধ্যে অন্তত দেড়শো জন পর্যটককে চুঙথাঙে নিয়ে আসা হয়। তাঁদের গ্যাংটকে ফিরিয়ে আনার জন্য গাড়ির ব্যবস্থা হচ্ছে।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.