|
|
|
|
কোন্দলেই আটকে রাজনাথের টিম ঘোষণা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
বিজেপি সভাপতি পদের দায়িত্ব নিয়েছেন মাস দুয়েক হয়ে গেল। কথা ছিল, রাজনাথ সিংহের টিম ঘোষণা হয়ে যাবে আজ। কিন্তু তা হল না। টিমে কারা ঠাঁই পাবেন, তা নিয়ে নেতাদের মধ্যে কোন্দলের জেরে ঝুলেই রইল বিষয়টি। যদিও বিজেপির তরফে বলা হয়েছে, আগামিকাল এই তালিকা ঘোষণা করে দেওয়া হবে।
রাজনাথ চাইছিলেন দোলের আগেই নিজের নতুন টিম ঘোষণা করে ফেলতে। কারণ, সামনেই কর্নাটকে বিধানসভা নির্বাচন। তা ছাড়া এই বছরের শেষে মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ়, দিল্লি, রাজস্থানেও বিধানসভা নির্বাচন। সর্বোপরি, মনমোহন সিংহ সরকার তার মেয়াদ পূর্ণ করলে এক বছরের মাথায় লোকসভা ভোটও হবে। ফলে রাজনাথ যে টিম গড়তে চলেছেন, তার লক্ষ্যই হবে লোকসভার কথা ভেবে দল সাজানো। সেই লক্ষ্যে যেমন নরেন্দ্র মোদীকে সংসদীয় বোর্ডে এনে কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে তাঁর গুরুত্ব বাড়ানোর প্রস্তাব রয়েছে, তেমনই গো-বলয়ের কথা মাথায় রেখে বরুণ গাঁধী, উমা ভারতীর মতো মুখকেও সংগঠনে গুরুত্বপূর্ণ জায়গা দেওয়ার কথা রয়েছে। মোদীও নিজের প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁর ঘনিষ্ঠ নেতা অমিত শাহকে সাধারণ সম্পাদক করার সম্ভাবনার কথা শোনা যাচ্ছে। আজ লালকৃষ্ণ আডবাণী গুজরাত সফরে গিয়ে প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা মোদীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। পরে আডবাণী বলেন, ২০১৩-এ লোকসভা ভোট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মোদীকে সংসদীয় বোর্ডে আনার ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, “সভাপতি বিষয়টি বিবেচনা করছেন।”
আসলে সংগঠন সাজানোর প্রক্রিয়া চলছে অনেক দিন ধরেই। কিন্তু শেষ পর্যন্ত টিমে কাদের রাখা হবে, তা নিয়েই বিস্তর টানাপোড়েন। রাজনাথ ইতিমধ্যেই আডবাণী, সুষমা স্বরাজ, অরুণ জেটলি, আরএসএসের ভাইয়াজি জোশী, সুরেশ সোনিদের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা করেছেন। আজও দিনভর বৈঠক চলেছে রাজনাথের বাড়িতে। দলের এক সূত্রের মতে, নিতিন গডকড়ী সভাপতি থাকার সময় ধর্মেন্দ্র প্রধানকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছিল। তাঁকে বাদ দিতে চান রাজনাথ। আবার জেটলি তাঁকে রাখতে চান। কিন্তু ধর্মেন্দ্র প্রধান সাধারণ সম্পাদক হলে মধ্যপ্রদেশের প্রভাত ঝা কিংবা উমা ভারতীকে কী পদ দেওয়া হবে, তা নিয়ে ধন্দে রয়েছেন রাজনাথ।
মহিলা মোর্চার দায়িত্বে থাকা স্মৃতি ইরানি খুব একটা ভালো ফল দেখাতে পারেননি। তাঁকে সাধারণ সম্পাদক করার প্রস্তাব ওঠায় সুষমা ঘোরতর আপত্তি জানান। ছত্তীসগঢ়ের নেত্রী সরোজ পাণ্ডে, দিল্লির আরতি মেহরা-রা মহিলা মোর্চার দায়িত্ব নিতে মুখিয়ে রয়েছেন। যুব মোর্চার দায়িত্বে থাকা হিমাচলের নেতা অনুরাগ ঠাকুরও তেমন আশাব্যঞ্জক ফল করতে পারেননি। তবু জেটলি চান, অনুরাগকে বহাল রাখা হোক। আবার মহারাষ্ট্রে নিতিন গডকড়ী ও গোপীনাথ মুন্ডের লড়াইয়ের মধ্যে সে রাজ্য থেকে কাকে সাধারণ সম্পাদক করা হবে, তা চূড়ান্ত হয়নি। এ দিকে, শাহনওয়াজ হুসেন মুখপাত্র থেকে সাধারণ সম্পাদক হতে চাইছেন। তিনি টেক্কা দিতে চান মোক্তার আব্বাস নাকভিকে। সে জন্য সুষমার কাছে গিয়েও তদ্বির করেছেন শাহনওয়াজ। আবার রাজনাথ আসায় প্রত্যাশা বেড়েছে রাজীব প্রতাপ রুডির।
কাজেই চার দিক থেকে এত প্রত্যাশার মধ্যে নতুন টিম গড়তে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন রাজনাথ। দলের এক নেতার মতে, “যে দল লোকসভা জয়ের স্বপ্ন দেখছে, তার টিম গঠন হতেই দু’মাস কেটে গেল। এ বার তো গোটা নির্বাচন পর্ব বাকি। কংগ্রেস যতই দুর্বল হোক, দলের মধ্যে এত কোন্দলের জন্যই বিরোধী পরিসরটি এখনও ঠিকমতো দখল করতে পারছে না বিজেপি!” |
|
|
|
|
|