উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের (এনবিএসটিসি) অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের বকেয়া মেটানোর জন্য বরাদ্দ টাকা ফেরত চলে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার ওই টাকা নিগমের কোচবিহার সদর দফতরে পৌঁছয়। এ দিকে ওই দিনই কাউকে দায়িত্ব না দিয়ে ম্যানেজিং ডিরেক্টর ছুটিতে চলে যান। ওই পরিস্থিতিতে আজ, শনিবারের মধ্যে কেমন করে বরাদ্দ টাকা খরচের প্রক্রিয়া শুরু করা সম্ভব হবে তা নিয়ে নিগমের কর্তাদের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে উদ্যোগী হয়েছেন সংস্থার চেয়ারম্যান তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। আলোচনা হয়েছে পরিবহণ দফতরের সচিবের সঙ্গে। বিকল্প ব্যবস্থা করতে আর্জি জানানো হয়েছে পরিবহণ মন্ত্রীকে। উত্তরবঙ্গ মন্ত্রী বলেন, “বিষয়টি জানার পরে ম্যানেজিং ডিরেক্টরকে ফোনে না পেয়ে ফিনান্স অফিসারের সঙ্গে কথা বলেছি। পরিবহণ সচিবের সঙ্গেও আলোচনা হয়েছে।”
নিগম সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাজ্য সরকার নিগমের দুই শতাধিক অবসরপ্রাপ্ত কর্মীর ‘লিভস্যালারি’ ও ‘গ্র্যাচুইটির’ বকেয়া মেটাতে ২৩ কোটি ৩ লক্ষ টাকা পাঠিয়ে দেয়। এর পাশাপাশি নতুন বাস কেনার জন্য ব্যাঙ্ক ঋণ মেটাতে দেওয়া হয় আরও ২ কোটি ১৬ লক্ষ এবং ১ কোটি ৯৮ লক্ষ দুই কিস্তির টাকা। ৩১ মার্চের মধ্যে খরচের প্রক্রিয়া শুরু না করলে বরাদ্দ টাকা ফেরত চলে যাবে বলে জানান নিগমের কর্তাদের কয়েকজন। ঘটনাচক্রে বৃহস্পতিবার এক সপ্তাহের ছুটিতে চলে যান নিগমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সি মুরুগণ। তিনি সংস্থার ‘ড্রয়িং অ্যান্ড ডিসবার্সিং’ (ডিডিও)। বরাদ্দ টাকা খরচের জন্য ম্যানেজিং ডিরেক্টরের সই আবশ্যিক। ওই পরিস্থিতিতে বরাদ্দ টাকা খরচ নিয়ে অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়। ঘটনার কথা শোনার পরে পরিস্থিতি সামল দিতে আসরে নামেন নিগমের চেয়ারম্যান গৌতমবাবু।
জানা গিয়েছে, ম্যানেজিং ডিরেক্টর ছুটিতে যাওয়ার আগে অন্য কোন অফিসারকে দায়িত্ব দিয়ে যাননি। তাই বরাদ্দ ফিরে যাওয়ার আশঙ্কা বেড়েছে। গৌতমবাবু বৃহস্পতিবার রাতে বিষয়টি নিয়ে রাজ্যের পরিবহণ সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনা করেন। বরাদ্দ টাকা যেন ফেরত না যায় তার বিকল্প উপায় বের করতে উদ্যোগী হন। পরিবহণ দফতরের কয়েকজন কর্তা জানান, পরিবহণ মন্ত্রী মদন মিত্রের কাছেও নিগমের তরফে সমস্যা এড়ানোর আর্জি জানানো হয়েছে। রাজ্যের অর্থ সচিব ও পরিবহণ সচিবের মধ্যে ওই বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। কোচবিহারের জেলাশাসক মোহন গাঁধী বলেন, “নয়া আর্থিক বছরে ফের ওই বরাদ্দ দেওয়ার বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তারা আশ্বাস দিয়েছেন। আশা করি কোনও সমস্যা হবে না।”
বরাদ্দ টাকা ফেরতের আশঙ্কার কথা জেনে শুক্রবার ছুটিতে থাকা ম্যানেজিং ডিরেক্টরকে ফোন করে ক্ষোভের কথা জানান এনবিএসটিসি পরিচালন বোর্ডের সদস্য আবদুল জলিল আহমেদ। তিনি বলেন, “এমডি অন্য কোনও অফিসারকে দায়িত্ব দিয়ে গেলে টাকা ফেরত যাওয়ার এমন আশঙ্কা দেখা দিত না। শনিবারের মধ্যে বরাদ্দ টাকা খরচের প্রক্রিয়া শুরু করা জরুরি। এমডিকে ফোন করে দ্রুত এসে পরিস্থিতি সামাল দিতে বলেছি।” |