বকেয়া প্রকল্পের কাজ শেষ করতে নিজস্ব আয় বাড়িয়ে স্বনির্ভর হওয়ার বিকল্প পথ বের করার লক্ষ্য নিয়ে জলপাইগুড়ি পুরসভার চলতি বছরের বাজেট প্রস্তাব পেশ হতে চলেছে। এই লক্ষ্যে আজ, শনিবার পুরসভার চেয়ারম্যান মোহন বসু প্রায় ১৭২ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব পেশ করতে চলেছেন। পুরসভা সূত্রের খবর, বাজেটে প্রায় সব ধরনের পরিষেবার ফি বৃদ্ধির প্রস্তাব থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে কয়েকটি জরুরি পরিষেবা এবং নিম্ন আয়ের ব্যাক্তিদের পরিষেবা ফি বাড়ছে না। আগামী ২০১৫ সালে বর্তমান পুরবোর্ডের কার্যকাল শেষ হচ্ছে। এই সময়ের মধ্যে বকেয়া সব প্রকল্প শেষ করাই এবারের বাজেটের মূল লক্ষ্য। বকেয়া প্রকল্প শেষ করতে প্রয়োজনীয় অর্থ সংস্থানের দিশা বাজেটে থাকবে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, শহরকে যানজট মুক্ত করতে দুটি বিকল্প রাস্তা, পুর এলাকার বিভিন্ন বাজার সংস্কার, শহরের সব কটি ব্যস্ত রাস্তা সম্প্রসারণ করে ডিভাইডার বসানো, সুসংহত পানীয় জল ও নিকাশি পরিকল্পনার মত যে প্রকল্পগুলি শুরু হয়েও অর্থ বরাদ্দের অভাবে থমকে রয়েছে বা ঢিমেতালে চলছে, সেগুলি দ্রুত শেষ করতে অন্তত ৫০ কোটি টাকা প্রয়োজন। পুরসভার অভিযোগ, সম্প্রতি রাজ্য সরকারের বিভিন্ন খাতে বরাদ্দ কমে যাওয়ায় বা না আসায় টাকার সংস্থান হচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে আয় বাড়ানোর উপরে জোর দেওয়া হয়েছে।
পুরসভার চেয়ারম্যান মোহন বসু বলেন, “উত্তরবঙ্গের অন্যতম প্রাচীন জলপাইগুড়ি পুরসভা আধুনিক হতে চলেছে। শহরবাসীকে পরিষেবা দেওয়ার লক্ষ্যে বকেয়া প্রকল্পগুলি শেষ করাকেই অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। রাজ্য সরকারের থেকে বরাদ্দ না পাওয়া সহ অন্যান্য আর্থিক প্রতিকূলতা কাটিয়ে কী ভাবে স্বনির্ভর হওয়া যায়, তার রূপরেখাই বাজেটে থাকছে।” বাজেট প্রস্তাবে আলোচনার আগে বাজাটের বিস্তারিত তথ্য নিয়ে চেয়ারম্যান মুখ খুলতে চাননি।
তবে পুরসভা সূত্রের খবর, আয় বাড়াতে বেশ কয়েকটি পুর পরিষেবার ফি বাড়তে চলেছে। এই তালিকায় রয়েছে, অতিরিক্ত পানীয় জলের ফি, হোর্ডিং ফি, বাড়ি থেকে ময়লা পরিষ্কারের ফি, নামজারি বা বাড়ি তৈরির অনুমতি বাবদ ফি, বাণিজ্যিক কর বাড়তে চলেছে। আয় বাড়ানোর পাশাপাশি দ্রুত পরিষেবা দেওয়ার লক্ষ্যে কয়েকটি ক্ষেত্রে তত্কাল পরিষেবা চালু করার কথা বাজেটে থাকতে পারে। সম্ভাব্য ক্ষেত্রগুলি হল, বাড়ি তৈরির নকশা অনুমোদন, নাম জারি, ট্রেড লাইসেন্স. বর্ধিত ফি দিয়ে দ্রুত পরিষেবাগুলি দেওয়ার ব্যবস্থা করতে পারে পুর কর্তৃপক্ষ।
পুরসভার প্রাপ্য সম্পত্তি কর বা হোল্ডিং ট্যাক্স যাঁদের প্রচুর পরিমাণে বকেয়া রয়েছে, কিছু ছাড় দিয়ে একলপ্তে সেই বকেয়া পরিশোধ করার সুযোগ দেওয়া হতে পারে বাজেটে। শহরের কেবল ব্যবসায়ীদের ট্রেড লাইসেন্স ও পুরসভার অনুমতি নেওয়া বাধ্যতামুলক করার কথা থাকতে পারে। পুরসভার কিছু ফি বাড়লেও নতুন করে কোনও ফি বসানো হচ্ছে না বলে পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে। |