|
|
|
|
‘অধিকার’ প্রকল্প নিয়ে আর শোরগোল চাইছে না তৃণমূল |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
লালগড়ের যুব নেতা তন্ময় রায়ের ইস্তফা নিয়ে আলোচনার সুযোগই দেওয়া হল না যুব তৃণমূলের বৈঠকে।
‘অধিকার’ প্রকল্প নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পর শুক্রবারই প্রথম বৈঠক ছিল জেলা যুব তৃণমূলের। যে বৈঠকে ডাকা হয়েছিল সংগঠনের ব্লক সভাপতি এবং জেলা কমিটির পদাধিকারীদের। সংগঠনের একাংশ মনে করেছিলেন, বৈঠকে লালগড়ের যুব নেতার ইস্তফা নিয়ে আলোচনা হবে। কিন্তু তেমন কিছুই হয়নি।
দলীয় সূত্রে খবর, বৈঠক চলাকালীন এক নেতা লালগড়ের প্রসঙ্গটি তোলার চেষ্টা করেছিলেন। তা চাপা দিয়ে সংগঠনের জেলা সভাপতি তথা শালবনির বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাতো জানিয়ে দেন, পঞ্চায়েত নির্বাচন সামনে রেখে এই বৈঠক। ফলে, ওই নির্বাচনের বাইরের কোনও প্রসঙ্গ নিয়ে এখানে আলোচনা হবে না। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, ‘অধিকার’ প্রকল্প নিয়ে যে অভিযোগ উঠেছে, তাতে বেশ অস্বস্তিতে তৃণমূল। বিশেষ করে সামনে পঞ্চায়েত নির্বাচন থাকায় তাদের অস্বস্তি আরও বেড়েছে। এই অবস্থায় আবার বিষফোঁড়া হয়ে দেখা দিয়েছে লালগড়ের ওই যুব নেতার ইস্তফার প্রসঙ্গ। নেতৃত্ব না পারছেন, অভিযোগটি একেবারে উড়িয়ে দিতে। আবার না-পারছেন ওই যুব নেতার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে। শুক্রবার শ্রীকান্তের বক্তব্যেও এই অস্বস্তি ঘুরেফিরে এসেছে। যেমন, এক প্রশ্নের উত্তরে শালবনির এই তরুণ বিধায়কের মন্তব্য, “যাঁরা ওই প্রকল্পের চেক পাওয়ার যোগ্য নন, আমরা তাঁদের চেক ফেরত দিতে বলেছি।” আবার অন্য এক প্রশ্নের উত্তরে তাঁর বক্তব্য, “বিষয়টি নিয়ে বৈঠকে কোনও আলোচনাই হয়নি। হবে কেন? পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে বৈঠক হয়েছে। যুব কর্মীদের দায়িত্ব-কর্তব্য বোঝানো হয়েছে।” তন্ময়ের ইস্তফা কী গ্রহণ করা হয়েছে? উত্তর এড়িয়ে যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতি বলেন, “ইস্তফাপত্র পেয়েছি। এখন এটুকুই বলতে পারি।”
‘অধিকার’ প্রকল্পের দুর্নীতি নিয়ে দলের অন্দরের ক্ষোভ সামাল দিতে বৃহস্পতিবার লালগড়ের কাঁটাপাহাড়িতে এক বৈঠক করেছেন শ্রীকান্ত। তিনি জানান, এই নিয়ে শোরগোল চলতে থাকলে বিরোধীদের হাত শক্ত হবে। বুঝিয়ে দেন, বিতর্কের ইতি টানতে হবে। অন্য দিকে, বিনপুরের আঁধারিয়ায় এক সভা করেন মন্ত্রী সুকুমার হাঁসদা। যেখানে আবার উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের লালগড় ব্লক সভাপতি বনবিহারী রায়যাঁর বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, দলের ব্লক সভাপতিকে পাশে রেখে মন্ত্রী এই বার্তাই দিতে চেয়েছেন যে, বিষয়টিকে তাঁরা সে ভাবে গুরুত্ব দিতে চাইছেন না। বিশেষ করে সামনে যখন পঞ্চায়েত নির্বাচন।
শুক্রবার মেদিনীপুরের বৈঠকে কী আলোচনা হয়েছে? দলীয় সূত্রে খবর, প্রতি বুথে দল তৈরি করে যুব কর্মীদের নির্বাচনী প্রচারে ঝাঁপিয়ে পড়ার নির্দেশ দিয়েছেন যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতি। তিনি জানান, মা-মাটি-মানুষের সরকারের বিরুদ্ধে যে কুৎসা-অপপ্রচার চলছে তার জবাব দিতে হলে বাড়ি বাড়ি পৌঁছনো জরুরি। এ ক্ষেত্রে যুব কর্মীদেরও দায়িত্ব রয়েছে। যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতির বক্তব্য, “আমরা চাইছি, যোগ্যদের প্রার্থী করা হোক। দল যাঁদের প্রার্থী করবে, তাঁদের সমর্থনেই প্রচার চালাব।”
এ দিনই সন্ধ্যায় ঝাড়গ্রাম রাজবাড়িতে জেলা, মহকুমা ও ব্লক স্তরের নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেন তৃণমূল সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী। সেই বৈঠকেও ছিলেন না তন্ময় রায়। |
|
|
|
|
|