দক্ষিণ কলকাতা: গড়িয়া
উদাসীন প্রশাসন
জতুগৃহে বিকিকিনি
গ্নিনির্বাপণ বিধি না মেনেই চলছে গড়িয়া, রাজপুর, সোনারপুর এবং বারুইপুর এলাকার অধিকাংশ বাজার। পুরসভা এবং প্রশাসন এ বিষয়ে উদাসীন। ফলে বাজারগুলি জতুগৃহ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমনই অভিযোগ এলাকার বাসিন্দাদের। কলকাতার নানা বাজারে একের পর এক অগ্নিকাণ্ডের পরেও কারও টনক নড়েনি বলে অভিযোগ তাঁদের।

গড়িয়া বাজার
অভিযোগ, এই এলাকার অধিকাংশ বাজারে ঢোকা এবং বের হওয়ার রাস্তা অত্যন্ত সরু। তার উপরে রাস্তার দু’পাশে ব্যবসায়ীরা পসরা সাজিয়ে রাখেন। ফলে যাতায়াত করতেই অসুবিধে হয়। কোনও বিপদ হলে কঠিন হয়ে পড়বে দমকলের গাড়ি ঢোকাও। বাসিন্দা সুভাষ রায় বলেন, “একটা বড় বিপদ না হওয়া পর্যন্ত কারও টনক নড়বে না।” গড়িয়া এলাকার অধিকাংশ বাজারে ইলেকট্রিকের তার ঝুলে থাকে। তা ছাড়া অধিকাংশ দোকান বেড়া এবং টিনের। একই হাল সোনারপুর স্টেশন-সংলগ্ন সোনারপুর বাজার এবং বোড়াল কালীবাবুর বাজারেরও। রাজপুর, সুভাষগ্রাম এলাকার বাজারগুলিতেও অগ্নিনির্বাপণের কোনও ব্যবস্থা নেই বলে অভিযোগ। এই বাজারগুলির ব্যবসায়ীরা জানান, দীর্ঘ দিন বাজারগুলির কোনও সংস্কার করা হয়নি। অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থাও গড়ে ওঠেনি। এ ভাবেই দিনের পর দিন চলছে।
রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার প্রাক্তন উপ পুরপ্রধান সিপিআইয়ের তড়িত্‌ চক্রবর্তী বলেন, “আমাদের সময়ে বাজারগুলির উপরে নজরদারি রাখতাম।
সোনারপুর বাজার বারুইপুর কাছারি বাজার
এখন কী চলছে বলতে পারব না।” যদিও সোনারপুর উত্তরের বিধায়ক এবং রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার উপ পুরপ্রধান তৃণমূলের ফিরদৌসি বেগম বলেন, “এলাকার প্রতিটি বাজারের উপরে আমাদের নজর রয়েছে। ব্যবসায়ীদের অগ্নিনির্বাপণ বিধি মেনে চলার জন্য অনুরোধ করেছি।” বারুইপুর এলাকার পুরাতন এবং কাছারি বাজারের অবস্থাও অত্যন্ত বিপজ্জনক বলে অভিযোগ। এই দুই বাজারের উপরেই বারুইপুর এবং সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা নির্ভরশীল। দুই বাজারেই বিপজ্জনক ভাবে বিদ্যুতের তার ঝুলছে। যদিও কাছারি বাজারের দু’একটি বড় দোকানে অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র রয়েছে। অভিযোগ, বাজারের ভিতরে গুদামগুলি খুবই ছোট। তা ছাড়া ঘরগুলির অবস্থাও খারাপ। দু’টি বাজারই অত্যন্ত জনবহুল এলাকার মধ্যে রয়েছে।
রাজপুর বাজার বারুইপুর পুরাতন বাজার
বারুইপুরের এই বাজার দু’টির ব্যবসায়ীরা জানান, দীর্ঘ দিন ধরে বাজারগুলির সংস্কারের কথা শুনে আসছি। কিন্তু এখনও কিছুই হয়নি। যদিও বারুইপুর পুরসভার চেয়ারম্যান তৃণমূলের শক্তি রায়চৌধুরী বলেন, “বাজারগুলির উপরে আমাদের কড়া নজরদারি রয়েছে। ব্যবসায়ীদের অগ্নিকাণ্ড রুখতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশও দেওয়া রয়েছে।”
দমকলমন্ত্রী জাভেদ খান বলেন, “ওই এলাকার বাজারগুলি নিয়ে অভিযোগ পেয়েছি। বাজারগুলির অগ্নি-নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখা হবে। সোনারপুরে একটি দমকলকেন্দ্রের শিলান্যাস হয়েছে। ওই অঞ্চলে আরও কয়েকটি দমকলকেন্দ্র তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে।”
ছবি: সুব্রত রায়




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.