দক্ষিণ কলকাতা
পুর-উদ্যোগ
উদ্যানেই সাঁতার
সুইমিং পুলের প্রস্তাব অনেক দিনের। কিন্তু প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ না থাকায় এই প্রকল্প পিছিয়ে গিয়েছিল। সম্প্রতি, রাজ্য ক্রীড়া দফতরের উদ্যোগে কলকাতা পুরসভা সুইমিং পুল তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই রানিকুঠিতে এই কাজ শুরু হবে বলে পুরকর্তৃপক্ষ জানান।
পুরসভার মেয়র পারিষদ (উদ্যান) দেবাশিস কুমার বলেন, “এই সুইমিং পুল তৈরির ক্ষেত্রে মূল সমস্যা ছিল অর্থ। পুরসভা ছাড়াও ক্রীড়া দফতর এই প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সম্প্রতি মেয়র পারিষদের আলোচনায় এই প্রকল্প তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছে। দরপত্র ডাকার পরেই সুইমিং পুলের কাজ শুরু হবে। এই প্রকল্পে কত টাকা বরাদ্দ করা হবে তা নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।”
ক্রীড়ামন্ত্রী মদন মিত্র বলেন, “পুরসভা আমাকে বিষয়টি জানিয়েছে। পুরকর্তৃপক্ষের সঙ্গে প্রাথমিক ভাবে এই প্রকল্প রূপায়ণের ব্যাপারে কথা হয়েছে। পরে সবিস্তার আলোচনা করব।”
রানিকুঠি সেন্ট্রাল পার্কের একাংশে প্রায় ৭৫০ বর্গফুট এলাকা জুড়ে সুইমিং পুল তৈরি করা হবে। পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে, রিজেন্ট পার্ক এলাকায় পুরসভার এই পার্কটি অনেক দিনের। শিশুদের খেলাধুলোর জন্য পুরসভা উদ্যানটি তৈরি করেছিল। পার্কের একাংশে একটি ঘেরা বাগানও রয়েছে। সেই বাগানের ধার ঘেঁষেই এই সুইমিং পুল তৈরি হবে। তবে এখানে কোনও রকম গাছ কাটা বা সবুজ ধ্বংস হবে না বলেও পুরকর্তৃপক্ষ জানান। প্রাথমিক পর্যায়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে যে, এলাকার উন্নয়নে কাউন্সিলরদের বরাদ্দ অর্থের কিছু টাকা এবং রাজ্য ক্রীড়া দফতরের বরাদ্দ অর্থেই এই প্রকল্প রূপায়িত হবে। উদ্যানের যে অংশে এই সুইমিং পুল তৈরি হবে সেখানে সম্প্রতি পুরসভা একটি সমীক্ষাও করেছে।
রানিকুঠি হাউসিং এস্টেটের একাংশে তৈরি এই উদ্যানটির ধারেই রয়েছে পুরকর্মীদের কোয়ার্টার্স। বাসিন্দাদের একাংশের বক্তব্য, এখানে অনেক দিন ধরেই সুইমিং পুল নির্মাণের প্রস্তাব ছিল। প্রথমে এখানকার বাসিন্দারা আপত্তি জানানোয় এই প্রকল্প আটকে যায়। পরে স্থানীয় বাসিন্দারাই এই প্রকল্প নিয়ে ফের উত্‌সাহ প্রকাশ করায় পুরসভা প্রকল্পটি নিয়ে চিন্তাভাবনা করে।
স্থানীয় কাউন্সিলর তথা পুরসভার মেয়র পারিষদ (জঞ্জাল) দেবব্রত মজুমদার বলেন, “এই এলাকায় দীর্ঘ দিন ধরেই সুইমিং পুলের চাহিদা রয়েছে। আশপাশে যে সমস্ত সুইমিং পুল রয়েছে সেগুলির খরচ অনেক বেশি। মধ্যবিত্তদের ধরাছোঁয়ার বাইরে। পুরসভা অল্প খরচে যদি এই সুইমিং পুল নির্মাণ করে তা হলে এখানকার বাসিন্দাদের সুবিধা হবে। সেই কারণেই এই উদ্যোগ।”
রিজেন্ট পার্ক গভর্নমেন্ট এস্টেট রেসিডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ভূষণচন্দ্র দে বলেন, “এই পার্কের একাংশে সুইমিং পুল তৈরি করলে উদ্যানের সৌন্দর্যায়নও হবে। মাঠটি অরক্ষিত থাকার ফলে অনেক সময়েই বহিরাগতরা প্রবেশ করেন। সুইমিং পুল নির্মাণ করলে সেই সুযোগ হবে না। এলাকার বাসিন্দারাও উপকৃত হবেন। আমরা দেবব্রতবাবুকে এই বিষয়টি চিঠি দিয়ে জানিয়েছি।” তবে এই সুইমিং পুলটি পুরসভা কী ভাবে চালাবে?
দেবাশিসবাবু জানান, এই ব্যাপারে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে পুরকর্তৃপক্ষ নিজেই চলান অথবা কোনও সংস্থার মাধ্যমেই চালানো হোক, সে ক্ষেত্রে স্থানীয় বাসিন্দাদের মতামতকে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।

ছবি : শুভাশিস ভট্টাচার্য




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.