|
|
|
|
|
|
পূর্ব কলকাতা |
পুর-উদ্যোগ |
রাত-ঠিকানা |
কৌশিক ঘোষ |
পাইকপাড়ায় সৌন্দর্যায়নের জন্য অনেকগুলি পার্ক তৈরি হয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ পার্ক নোংরা হচ্ছে। অভিযোগ, এর জন্য দায়ী এক শ্রেণির ভবঘুরে। তাঁরা রাতে পার্কে থাকছেন এবং নোংরা করছেন। তাই ভবঘুরেদের জন্য পাইকপাড়ায় রাত-ঠিকানা (নাইট শেল্টার) তৈরির পরিকল্পনা করছে কলকাতা পুরসভা। পাইকপাড়ায় রাজা মণীন্দ্র রোডে রাস্তার পাশে পুরসভার পার্কের জমির একাংশে এই নাইট শেল্টার তৈরি হওয়ার কথা। যদিও পার্কের মধ্যে এই নির্মাণ নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে।
|
|
পুরসভার মেয়র পারিষদ (বস্তি) স্বপন সমাদ্দার বলেন, “উত্তর কলকাতার এই অংশে পুরসভার অনেক ফাঁকা জমি সুন্দর করে সাজানো হয়েছে। কিন্তু কিছু ভবঘুরে রাতে পার্কে থাকছেন। তাঁরা এলাকা নোংরাও করছেন। এঁদের রাতে থাকার ব্যবস্থা করলে সমস্যার অনেকটাই সমাধান হবে।” পাশাপাশি, মেয়র পারিষদ (উদ্যান) দেবাশিস কুমার বলেন, “আইন মেনে পার্কে নির্মাণ হলে কোনও আপত্তি নেই। টালাপার্ক অঞ্চলে ভবঘুরেদের একাংশ পার্কগুলি নোংরা করছেন বলে অভিযোগ এসেছে। এঁদের জন্য রাতে থাকার ব্যবস্থা করলে সমস্যা অবশ্যই কমবে।” বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের রাজা মণীন্দ্র রোড এবং তার আশপাশের কয়েকটি পার্ক ভবঘুরেরা নোংরা করছেন। তাঁদের জিনিসপত্রও রাখছেন। পুরসভা সূত্রে খবর, এঁদের সরাতে পুরসভা কয়েক বছর আগেই অভিযান চালিয়েছিল। অনেকে সরে গেলেও কেউ কেউ এখনও রাতে পার্কে থাকছেন।
২০১০-এ সুপ্রিম কোর্ট রাজ্য সরকারকে গৃহহীনদের জন্য নাইট শেল্টার তৈরির নির্দেশ দেয়। |
|
সেই নির্দেশ মোতাবেক রাজ্য সরকার কলকাতা পুরসভাকে নাইট শেল্টার করতে আর্জি জানায়। পুরসভার এক আধিকারিক জানান, পুরসভা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মাধ্যমে উত্তর ও দক্ষিণ কলকাতায় দু’টি নাইট শেল্টার চালাচ্ছে। বেলেঘাটায় রাজ্য সমাজকল্যাণ দফতরের একটি নাইট শেল্টার রয়েছে। জায়গার সমস্যায় শহরে সব জায়গায় নাইট শেল্টার তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে না। স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর তথা ১ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান তরুণ সাহা বলেন, “এলাকা পরিষ্কার রাখতেই প্রাথমিক ভাবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এখান থেকে অভিযান চালিয়ে অনেককে সরানো হয়েছিল। তার পরেও সমস্যার সমাধান হয়নি।
তাই আপাতত যে জমি পাওয়া গিয়েছে তাতে কয়েক জন ভবঘুরের জন্য নাইট শেল্টার করে রাতে থাকতে দেওয়া যেতে পারে। পার্কের মাত্র একশো বর্গফুট জায়গা নেওয়া হয়েছে। পুরসভার নিয়ম ও রাজ্যের ল্যান্ড ইউজ ডেভেলপমেন্ট কন্ট্রোল প্ল্যান মেনেই পার্কের কোণায় নির্মাণ হচ্ছে। তা ছাড়া পার্কে বহিরাগতদের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি।” তরুণবাবু জানান, দোতলা বাড়ির এক তলায় সুলভ শৌচালয় থাকবে। ওপরে ১৫ শয্যাবিশিষ্ট একটি নাইট শেল্টার থাকবে। এর পাশেই ভবিষ্যতে আরও একটি তিনশো শয্যাবিশিষ্ট নাইট শেল্টার তৈরির পরিকল্পনা আছে বলেও তরুণবাবু জানান।
পার্কের জন্য নিরাপত্তারক্ষীর ব্যবস্থা করা হয় না কেন?
মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের কথায়: “পুরসভার সেই পরিকাঠামো নেই। তবে, দখলদারি রুখতে পুরসভা অভিযান চালায়। তার পরেও সমস্যা থেকে যায়। মানবিক কারণেই ভবঘুরেদের জন্য নাইট শেল্টারে রাখা আমাদের কর্তব্য। এতে রাতে ফুটপাথ বা পার্কে থাকার প্রবণতা কমবে। সব কাউন্সিলরকেই নাইট শেল্টারের জন্য জায়গা চিহ্নিত করতে বলেছি।” |
ছবি : শুভাশিস ভট্টাচার্য |
|
|
|
|
|