তিনি ভাল গিটার বাজান, ‘স্টেজ শো’ করেন, বলিউডে শাহরুখ খানের সঙ্গে অভিনয় করার ইচ্ছে আছে। আবার ভাল বলটাও করেন। টিমের এক নম্বর ক্ষেপণাস্ত্র, যিনি কিনা আবার এ বছর থেকে ‘বোলিং গুরু’-ও!
নিজে চার ওভার বল করে উইকেট নেবেন, কাজ সেখানেই শেষ নয়। জেমস প্যাটিনসন বা লক্ষ্মীপতি বালাজির কোথায় অসুবিধা হচ্ছে, সেটাও হাতে ধরিয়ে বুঝিয়ে দিতে হবে তাঁকে। যেটা এত দিন নাইট সংসারে ওয়াসিম আক্রমকে করতে দেখা যেত।
দায়িত্ব নতুন, নতুন ‘জব প্রোফাইল’। তার উপর ঘাড়ের মহাশত্রু হিসেবে বসে আছে চ্যাম্পিয়নের চাপ। টিম আইপিএল ফাইভ-জয়ী। সামান্য ভুলচুককেও তো মাইক্রোস্কোপের তলায় ফেলবে মিডিয়া।
ব্রেট লি-র তাতে কোনও হেলদোলই নেই!
বছর তিনেক ধরে কেকেআর সংসারে। বাঙালি আদব-কায়দা, আচার-আচরণ শিখেছেন অল্পস্বল্প। মিডিয়া দেখলে হাত জোড় করে নমস্কারও করছেন!
কিন্তু আক্রমের প্রোফাইলে মানিয়ে নেওয়া যাবে? |
ব্রুস নয়, ব্রেট। নাইট সংসারে নতুন ভূমিকায় লি। |
“মজাটা হচ্ছে, আমি নিজে এখনও খেলছি। আর খেলতে খেলতে এ রকম একটা প্রস্তাব এলে, তাকে তো বিশাল সুযোগ বলতেই হবে। ওয়াসিম এ বার থাকতে পারছে না পারিবারিক কারণে। সেটা আমাদের মেনে নিতে হবে। কিন্তু ওর প্রোফাইলের দায়িত্ব নেওয়াটা আমার কাছে খুব গর্বের ব্যাপার। আমি এনজয় করছি,” শুক্রবার ইডেনে কেকেআরের প্র্যাকটিস শেষে বলছিলেন ব্রেট লি। যাঁকে এ দিন নেটে ছোট রান আপে বল করার পাশাপাশি বালাজিদের সঙ্গে মাঝেমধ্যে ছুটকো বৈঠক করতেও দেখা গেল।
এবং নিজের ‘টিম’ নিয়ে অস্ট্রেলীয় পেসার বেশ আত্মবিশ্বাসীও। “আমাদের টিমে বোলাররা কিন্তু বেশ ভাল। কালিস একাই বিশাল একটা দায়িত্ব নিয়ে নেবে। বলতে গেলে, আমাদের আসল অস্ত্র কালিসই। সঙ্গে থাকবে সঙ্গওয়ান-বালাজিরা,” বলে দিচ্ছেন লি। কিন্তু শিবির শুরু হয়ে গেলেও ক্রিকেটাররা সবাই এসে পৌঁছননি। সুনীল নারিন, জেমস প্যাটিনসনদের আসা বাকি এখনও। সবাইকে পাচ্ছেন না, অসুবিধা হবে না? “মানছি হাতে সময় কম। কিন্তু যা সময় পাব, তার মধ্যেই নিজে যা জানি, বাকিদের বলে দেব। আর আইপিএলটা এক দিনের টুর্নামেন্ট নয়। ষোলোটা ম্যাচ খেলতে হবে। সময় থাকবেও।”
চাপ আছে জানেন, কিন্তু চাপকে বিশেষ পাত্তাও দিচ্ছেন না। “চাপ কোন বছর থাকে না? আমরা গত বারের চ্যাম্পিয়ন বলে বোধহয় সেটা একটু বেশিই থাকবে। আমাদের শুধু বেসিকস ঠিকঠাক রেখে এগোতে হবে,” বলছিলেন লি। যাঁকে ভারতের টেস্ট টিম থেকে নাইট অধিনায়ক গৌতম গম্ভীরের বাদ পড়াও বিশেষ ভাবাচ্ছে না। উল্টে হুমকি, “ক্যাপ্টেনকে একবার কলকাতায় আসতে দিন। দেখবেন কী ভাবে আইপিএলের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে!”
বরং চিন্তা নিজের দেশ নিয়ে। মাইকেল ক্লার্কের অস্ট্রেলিয়া নিয়ে। নিজে অবসর নিয়েছেন। বল হাতে আর নেমে পড়ার উপায় নেই। বাইরে থেকে আফসোসই করতে হচ্ছে। আর কতটা আহত বোঝা যায় যখন মাথা নাড়তে নাড়তে বলে ফেলেন, “এই অবস্থা হবে ভাবিনি। সামনে অ্যাসেজ আসছে। ভারত স্রেফ পিষে মেরে ফেলল আমাদের। সত্যি বলতে কী, অস্ট্রেলিয়া বলে কোনও টিম খেলছে, সিরিজে দেখে একবারও মনে হয়নি!” |