গ্রেগের মতো অশালীন ইঙ্গিত করে বিতর্কে গুরপ্রীত
ঠাৎ করেই গুরু গ্রেগের কথা মনে করিয়ে দিলেন গুরপ্রীত সিংহ!
ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন কোচ গ্রেগের মতোই এ দিন সমর্থকদের উদ্দেশে মধ্যমা দেখিয়ে অশালীন ইঙ্গিত করেন ইস্টবেঙ্গল গোলকিপার! যিনি কিনা ২-০ এগিয়ে লাল-হলুদের আই লিগের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ ড্র করার পিছনে প্রধান খলনায়ক বিবেচিত হচ্ছেন!
২০০৫-এর নভেম্বরে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে এক দিনের ম্যাচে ১০ উইকেটে হারের পর ইডেন ছাড়ার আগে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কে বাদ দেওয়ার প্রতিবাদে যাঁরা বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন, তাঁদের উদ্দেশ্যে মধ্যমা দেখিয়ে অশালীন ইঙ্গিত করেছিলেন গ্রেগ। বিতর্কের ঝড় বয়ে গেছিল।
শুক্রবার কল্যাণী স্টেডিয়ামে একই ঘটনা ঘটিয়ে শিল্ড ডার্বির নায়ক গুরপ্রীত ভিলেন হয়ে গেলেন লাল-হলুদ সমর্থকদের চোখে। জঘন্য গোল হজম করার জন্য বাসে ওঠার সময় সমর্থকদের তোপের মুখে পড়তে হয় পঞ্জাবতনয়কে। যার প্রত্যুত্তরে তিনি অশালীন ইঙ্গিত করেন। ফলে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে স্টেডিয়াম চত্বর। ইস্টবেঙ্গল বাস আটকে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন সমর্থকেরা।
এর পরই বিক্ষোভকারীদের উপর লাঠি চার্জ করেন কমব্যাট ফোর্সের জওয়ানরা। তাতে উত্তাপের পারদ আরও চড়ে। অনেক সমর্থক আহত হন। এমনকী পথচলতি সাধারণ মানুষকেও অকারণে মার খেতে হয়। যার মধ্যে একজন মহিলাও ছিলেন। পরে পুলিশ এসে পুরো পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন।

স্টেডিয়ামের বাইরে পুলিশের লাঠি চার্জে আহত মহিলা।
গুরপ্রীতের আচরণে বেজায় চটেছেন ইস্টবেঙ্গল কর্তারা। শোনা যাচ্ছে তাঁকে শো-কজ করা হবে। ফুটবল সচিব সন্তোষ ভট্টাচার্য বললেন, “গুরপ্রীত অন্যায় করেছে। আমরা ওঁর সঙ্গে কথা বলব। প্রয়োজনে কড়া শাস্তি দেওয়া হতে পারে।” যাঁর জন্য এ দিন দু’পয়েন্ট মাঠে রেখে আসতে হল ইস্টবেঙ্গলকে, সেই গুরপ্রীত অবশ্য নির্বিকার। ড্রেসিংরুম থেকে বেরোলেন কানে হেডফোন লাগিয়ে গান শুনতে শুনতে। মুখে অবশ্য বলছিলেন, “জিততে না পারায় আফসোস তো হবেই। তবে এটা ফুটবলেরই অঙ্গ।”
গুরপ্রীতের হেলদোল নেই দেখে ক্ষুব্ধ ইস্টবেঙ্গলের কিছু সিনিয়র ফুটবলারও। ড্রেসিংরুমে ফিরেই তাঁরা বলতে শুরু করেন, “এ ভাবে গোল খেতে হলে আর আই লিগ জিতব কী ভাবে?” কেউ কেউ গুরপ্রীতের দায়বদ্ধতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন। কোচ মর্গ্যান অবশ্য ধমক দিয়ে ড্রেসিংরুমের পরিবেশ নিয়ন্ত্রণ করেন। কিন্তু ফুটবলাদের মনে ক্ষোভের আগুন যে সম্পূর্ণ নেভেনি সেটা টিম বাসে তাঁদের ওঠা পর্যন্ত হাবেভাবে টের পাওয়া যাচ্ছিল।
পুরো ঘটনার জন্য ইস্টবেঙ্গলের কিছু কর্তা আবার সাহেব কোচের ‘পক্ষপাতিত্বের’ দিকে আঙ্গুল তুলেছেন। মর্গ্যানের দল নির্বাচন নিয়ে তাঁরা ক্ষুব্ধ। ভাল ফর্মে থাকা সত্ত্বেও কেন সঞ্জুকে শুরু থেকে খেলানো হয়নি? কেন মননদীপকে আরও আগে তুলে বলজিৎকে নামানো হয়নি? হঠাৎ ইসফাককে খেলানোর কারণ কী? বরিসিচকে নামিয়ে কী লাভ হচ্ছে? এ সব নিয়ে চলছে কাটাছেঁড়া।

লাঠি চালালেন যিনি।
মর্গ্যানের বিরুদ্ধে কর্তাদের আরও মারাত্মক অভিযোগ, কোচের জন্যই দলের ফুটবলারদের মধ্যে দূরত্ব বাড়ছে। এ দিন অধিনায়কের দায়িত্বে থাকা মেহতাবের বারণ সত্ত্বেও মননদীপ চিডির হাত থেকে বল কেড়ে নিয়ে পেনাল্টি মারেন। যা নিয়ে বিরতির পর প্রকাশ্যেই ঝামেলায় জড়ান ইসফাক-মননদীপ।
অন্য দিকে, চিডিদের নাটকীয়ভাবে আটকে দেওয়ার পরেও ক্ষোভের আগুন জ্বলছে র‌্যান্টিদের শিবিরেও। লালকমল ভৌমিককে ম্যাচের সেরা বাছায় তীব্র চটেছেন কার্লোস। সতীর্থকে শুভেচ্ছা জানানো তো দূরের কথা, স্টেডিয়াম ছাড়ার আগে বরং বললেন, “ভাল খেলে, গোল করেও তো কোনও সম্মান পাওয়া যায় না। ম্যাচের সেরার সম্মান অন্য কেউ নিয়ে যায়।” উল্লেখ্য, এ দিন কার্লোসের করা গোলটাই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট ছিল মেনে নিচ্ছেন অনেক বিশেষজ্ঞই।

শুক্রবার। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.