টাকার অভাবে বিভিন্ন জেলায় কার্যত বন্ধ একশো দিনের কাজের প্রকল্প। শ্রমিকেরা মজুরি না পেয়ে বিভিন্ন পঞ্চায়েতে বিক্ষোভও দেখাচ্ছেন। গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই চলছে এই পরিস্থিতি। পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, “রাজ্য জুড়ে বিপুল বকেয়া ছিল। কিছু টাকা পাওয়া গিয়েছে। খুব শীঘ্রই তা জেলায় ছাড়া হবে।”
পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর সূত্রের খবর, গত রবিবার পর্যন্ত অনলাইনের তথ্যের ভিত্তিতে গোটা রাজ্যে একশো দিনের কাজের প্রকল্পে প্রায় ৪০০ কোটি টাকা মজুরি বকেয়া ছিল। বাস্তব পরিস্থিতিটা আরও খারাপ বলে মনে করেন দফতরের কর্তারাই। সব থেকে বেশি বকেয়া পশ্চিম মেদিনীপুরে (৬৫ কোটি টাকা)। দ্বিতীয় স্থানে আছে দার্জিলিং। বকেয়ার পরিমাণ প্রায় ৪৭ কোটি টাকা। তৃতীয় হুগলি। এখানে মজুরি বাকি প্রায় ৪৬ কোটি টাকা। হুগলির মধ্যে আবার সব থেকে করুণ অবস্থা আরামবাগ ব্লক এলাকায়। এখানে বকেয়ার পরিমাণ প্রায় সাড়ে ৭ কোটি টাকা। তারপরে আছে খানাকুলের ১ ও ২ ব্লক (৬ কোটি ও ৫ কোটি টাকা)। আরামবাগের ১৫টি পঞ্চায়েতের অধিকাংশ জায়গাতেই কাজ বন্ধ চলতি মাসের গোড়া থেকে। খানাকুলের ২ টি ব্লক ছাড়াও বলাগড় (বকেয়া ৪ কোটি টাকারও বেশি), জাঙ্গিপাড়া (বকেয়া প্রায় পৌনে ৪ কোটি), পোলবা-দাদপুর (বকেয়া প্রায় ৩ কোটি) ব্লকেও বিক্ষিপ্ত ভাবে কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছে বলে হুগলি জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর। আরামবাগের তিরোল, বাতানল, আরান্ডি ২ প্রভৃতি পঞ্চায়েত এলাকায় প্রত্যেকটিতে বকেয়া প্রায় এক কোটি ছুঁই ছুঁই।
তিরোল পঞ্চায়েতের প্রধান স্বান্তনা বাগ বলেন, “শ্রমিকেরা ক্রমশ মারমুখী হয়ে উঠছেন। গত দু’মাস ধরে তাঁদের মজুরি দেওয়া যাচ্ছে না। কাজ বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছি।” অন্য বেশ কিছু পঞ্চায়েতের প্রধানদের বক্তব্য, টাকার জোগান থাকলে অনুমোদিত বেশ কয়েকটি কাজ এই সময়কালের মধ্যে করিয়ে নেওয়া যেত। বছরের এই সময়ে একশো দিনের কাজে গতি বেশ ভাল থাকে। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ এই সময়েই টাকার জোগানের অভাবে কাজ থমকে যাওয়ায় গড় কাজের দিনের ক্ষেত্রেও প্রভাব পড়বে বলে প্রশাসনের কর্তাদের আশঙ্কা। এই পরিস্থিতিতে বিডিওরাও উদ্বিগ্ন। অবিলম্বে টাকা আসা জরুরি বলে মনে করেন তাঁরাও। পরিস্থিতির গুরুত্ব অনুধাবন করে জেলাশাসক মনমীত নন্দা বলেন, “রাজ্যের টাকা ঢুকলে আমরা পাব।” |