এক দলীয় কাউন্সিলর বাজেট অধিবেশন বয়কট করায় উলুবেড়িয়া পুরসভায় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এল বৃহস্পতিবার।
প্রায় দেড় বছর ধরে পুরসভায় পূর্ত দফতরের অধীনে উন্নয়নমূলক কাজকর্মের বিষয়ে তাঁকে অন্ধকারে রাখা হয়েছে, এই অভিযোগ তুলে বৃহস্পতিবার বাজেট অধিবেশন বয়কট করেন ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর তথা পুরসভায় পূর্ত দফতরের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পারিষদ শেখ সেলিম। পুরসভা তৃণমূল পরিচালিত। সেলিমের মূল নালিশ পুরসভার চেয়ারম্যান, তাঁর দলেরই দেবদাস ঘোষের বিরুদ্ধে। দেবদাসবাবু অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন।
৩০ সদস্যের ওই পুরসভায় তৃণমূলের সদস্যসংখ্যা ১৮। বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজকর্ম নিয়ে গত কয়েক মাস ধরেই পুরসভায় তৃণমূল কাউন্সিলরদের একাংশের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। তাঁদের অভিযোগ, চেয়ারম্যান নিজের মর্জিমতো পেটোয়া ঠিকাদার সংস্থাকে দিয়ে কাজকর্ম করাচ্ছেন। অনেক ছোট ঠিকাদার পুরসভায় নাম নথিভুক্ত করালেও তাদের কাজ দেওয়া হচ্ছে না।
ওই অসন্তোষের খবর যায় উলুবেড়িয়ার তৃণমূল সাংসদ সুলতান আহমেদ এবং উলুবেড়িয়া পূর্ব কেন্দ্রের বিধায়ক তথা রাজ্যের কারামন্ত্রী হায়দর আজিজ সফির কানেও। চলতি মাসের প্রথম দিকে চেয়ারম্যান এবং দলীয় কাউন্সিলরদের মুখোমুখি বসিয়ে সুলতান এবং সফি পুরসভায় বৈঠক করেন। সব থেকে বেশি সমালোচনা হয় পূর্ত দফতরের কাজকর্ম নিয়ে। তাঁদের সামনেই দলীয় কাউন্সিলরদের একাংশ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন বলে পুরসভা সূত্রের খবর।
সেলিমের অভিযোগ, “আমার দফতরের অধীন বিভিন্ন প্রকল্পে কোটি কোটি টাকার কাজ হচ্ছে। কোনও ক্ষেত্রেই নিয়ম মানা হচ্ছে না। আমার সন্দেহ, ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। আমাকে কিছুই না জানিয়ে চেয়ারম্যান এ সব করাচ্ছেন। এর প্রতিবাদেই বাজেট অধিবেশন বয়কট করেছি।” এই পদ ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে তাঁর সংযোজন, “সুলতান আহমেদ এবং বিধায়ককে সব কথা জানিয়েছি। তাঁরা পুরসভায় এ নিয়ে বৈঠক করবেন বলে কথা দিয়েছেন। বৈঠক না-হওয়া পর্যন্ত আমি পুরসভার কোনও অধিবেশনে যাব না।”
অভিযোগ অস্বীকার করে দেবদাসবাবু বলেন, “পুরসভার কাজে বেনিয়ম হয়নি। মিথ্যা কথা বলে সেলিমই দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করছেন।” গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা কার্যত মেনে নিয়ে হায়দর আজিজ সফি বলেন, “চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কাউন্সিলরদের একাংশের ক্ষোভ রয়েছে। আমরা ইতিমধ্যে দু’টি বৈঠক করেছি। আগামী ২ মে ফের বৈঠক করা হবে। আশা করি ভুল বোঝাবুঝি মিটে যাবে।” |