জাল পাসপোর্ট বা অন্য কোনও নকল নথি নয়। বিমানযাত্রীর কাছে মিলল প্রায় এক হাজার খালি বোর্ডিং কার্ড।
বিমানযাত্রীর বোর্ডিং কার্ডে উড়ান ও আসনের নম্বর লেখা থাকে। বিমানে ওঠার আগে সেই কার্ডের একটি অংশ ছিঁড়ে নেয় বিমান সংস্থা। অন্য অংশ থেকে যায় যাত্রীর কাছে। শুক্রবার সকালে কলকাতা থেকে স্পাইসজেটের উড়ানে পোর্ট ব্লেয়ার যাচ্ছিলেন সতেন্দ্র বর্মা নামে বিহারের এক বাসিন্দা। সঙ্গে ছিল একটি প্যাকিং বাক্স। বোর্ডিং কার্ডের যে-অংশ যাত্রীর কাছে থাকে, প্রায় এক হাজার সেই কার্ড পাওয়া গিয়েছে ওই বাক্সে। পুলিশ জানায়, কার্ডগুলি এয়ার ইন্ডিয়ার। কোনওটিতেই উড়ান বা আসনের নম্বর ছাপা নেই। এয়ার ইন্ডিয়ার অভিযোগ পেয়ে সতেন্দ্রকে ধরে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রের খবর, বিহারের নালন্দার বাসিন্দা সতেন্দ্র দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। স্ত্রী ও দুই ছেলেমেয়ে রয়েছেন। তিনি সেখানে চাষ-আবাদ করতেন। তাঁর দাবি, পোর্ট ব্লেয়ারে চাকরির খোঁজ পেয়ে তিনি কোনও রকমে বিমানের ভাড়া জোগাড় করে সেখানে যাচ্ছিলেন।
সত্যেন্দ্রের কাছে অত বোর্ডিং কার্ড এল কী ভাবে? সেগুলি নিয়েই বা তিনি কী করতেন?
সত্যেন্দ্রকে জেরা করে পুলিশ জেনেছে, বৃহস্পতিবার বাড়ি থেকে কলকাতায় আসার পথে একানসরাই নামে একটি স্টেশনে তাঁর শ্যালক আপ্পু এসে তাঁকে ওই বোর্ডিং কার্ডগুলি দেন। সত্যেন্দ্রকে বলা হয়, পোর্ট ব্লেয়ারে একটি লোক তাঁর কাছ থেকে ওই কার্ডগুলি নিয়ে যাবেন।
এয়ার ইন্ডিয়া সূত্রে খবর, মুম্বইয়ে ছাপা হয় ওই কার্ড। বিমানে তা পৌঁছে যায় দেশের অন্যত্র। কিন্তু কী কাজে লাগতে পারে বোর্ডিং কার্ডের ওই খালি অংশ?
বিমানবন্দর সূত্রের খবর, কেউ এই বোর্ডিং কার্ডে উড়ান নম্বর, আসনের সংখ্যা, ছাপিয়ে আনলেও সেটি নিয়ে তিনি কোনও বিমানবন্দরে ঢুকতে পারবেন না। কারণ, বিমানবন্দরে ঢোকার জন্য প্রয়োজন হয় ই-টিকিটের। বিভিন্ন সংস্থার কর্মীরা কর্মসূত্রে যাতায়াতের জন্য বিমানের ভাড়া পান, তেমনই বেড়াতে যাওয়ার জন্যও পান। পুলিশের অনুমান, বেড়াতে বা কাজে না-গিয়েও ওই কার্ডে উড়ান নম্বর ও আসন-সংখ্যা ছেপে অফিসে দেখালে তার পরিবর্তে টাকা পাওয়া যেতে পারে। সেই জন্য দুষ্টচক্রের লোকজন খালি বোর্ডিং কার্ড বাইরে বিক্রি করে। সতেন্দ্র পুলিশকে জানান, তাঁর শ্যালক আপ্পু মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে। আপ্পুর মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করে অবশ্য এ দিন সাড়া পায়নি পুলিশ। তবে চাষ-আবাদের কাজে যুক্ত সতেন্দ্র চাকরির খোঁজে বিমানে চেপে কেন পোর্ট ব্লেয়ার যাচ্ছিলেন, এত টাকাই বা কোথা থেকে পেলেন সবই খতিয়ে দেখছে পুলিশ। |