হেলিকপ্টারে কলকাতা ঘুরিয়ে দেখাতে ১০ মিনিটের উড়ান চালু করল একটি সংস্থা। অথচ, যে ভাবনা-চিন্তার উপরে দাঁড়িয়ে এই উড়ানের পরিকল্পনা করা হয়েছে, সেগুলো বাস্তবে আদৌ কতটা হওয়া সম্ভব, প্রশ্ন রয়েছে তা নিয়েই।
দিঘা, শান্তিনিকেতন, হলদিয়ায় উড়ান চালাতে চেয়েছিল এই সংস্থাই। এ বার উৎসুক শহরবাসী বা পর্যটকদের নিয়ে কলকাতার আকাশে ১০ মিনিট চক্কর কাটতে চায় তারা। সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, একসঙ্গে ছ’জন উঠতে পারবেন হেলিকপ্টারে। আপাতত কলকাতা বিমানবন্দরে থাকবে এটি। তবে, ‘মজার উড়ান’ চলবে বেহালার পরিত্যক্ত বিমানবন্দর থেকে।
কিন্তু প্রত্যেক দফায় কমপক্ষে ১০ বার যদি হেলিকপ্টার উড়তে না পারে, তা হলে আর্থিক ভাবে লাভ হবে না সংস্থার। সে ক্ষেত্রে কমপক্ষে ৬০ জন উৎসুক শহরবাসীকে একসঙ্গে জোগাড় করা গেলে তবেই হবে মজার উড়ান।
প্রশ্ন উঠেছে, প্রতি মাসে কত বার এ রকম ভাবে ৬০ জন করে উৎসুক মানুষ পাওয়া যাবে? ১০ মিনিট ওড়ার জন্য খরচ ধরা হয়েছে যাত্রী-প্রতি দু’হাজার টাকা। এতে কি হেলিকপ্টার চালানোর খরচ উঠবে? যে রাজ্যে শিল্পের প্রসার তুলনায় কম, পর্যটন কেন্দ্রে পরিকাঠামোর অভাব, এর আগেও যেখানে হেলিকপ্টার নিয়ে এসে যাত্রীর অভাবে ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছে কয়েকটি সংস্থা, সেখানে কতটা ফলপ্রসূ হবে সংস্থাটির এই প্রয়াস? |
বেহালা ফ্লাইং ক্লাবে সেই হেলিকপ্টার। সঙ্গে দুই অভিনেত্রী, পূজা ও মিমি। শুক্রবার।—নিজস্ব চিত্র |
সংস্থার এমডি, ২৮ বছরের যুবক অভীক বাগচী আশাবাদী। তিনি বলেন, “ছোট ছোট শিল্পগোষ্ঠীর সঙ্গে আমাদের চুক্তি হচ্ছে। তারা ভাড়া নেবে। অন্ডালের নতুন বিমানবন্দরে যাতায়াত করা নিয়েও আলোচনা চলছে।” বাগডোগরা থেকে বিদেশিদের দার্জিলিং, গ্যাংটক এবং ডুয়ার্সে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়ারও চিন্তা-ভাবনা রয়েছে তাদের মনে। সে কারণে মাস তিনেকের মধ্যে দ্বিতীয় হেলিকপ্টারটি কিনতে চলেছেন তাঁরা। এমনকী, কয়েক মাসের মধ্যে একটি ছোট বিমানও কেনার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন অভীকবাবু। সব মিলিয়ে ১০০ কোটি টাকা বিনিয়োগের কথাও জানানো হয়েছে সংস্থার তরফে।
তবে কি এটা ‘স্বপ্নের ফানুস’?
পশ্চিমবঙ্গ থেকে যদি ব্যবসা করতে না পারেন, যদি সে অনুপাতে যাত্রী না পান, তা হলে ব্যবসার খাতিরে অন্য রাজ্যে চলে যাওয়ার কথাও জানাতে ভোলেননি অভীকবাবু। |