ফ্ল্যাট ভাঙচুরের পরে এ বার দফতরে মারধর। পরপর দু’দিন দু’টি বিচ্ছিন্ন ঘটনায় নাম জড়াল বিশ্বভারতীর আধিকারিক ও অধ্যাপকদের। শুক্রবার বোলপুর থানায় দফতরে ঢুকে তাঁকে মারধর করা ও প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ জানিয়েছেন বিশ্বভারতীর শিল্প সদনের অধ্যাপক রাজকুমার কোনার। বৃহস্পতিবার বিকালে শ্রীনিকেতনের শিল্প সদনের ওই ঘটনায় অভিযুক্ত তাঁরই সহকর্মী, অধ্যাপক বিশাল ভান। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। বিশ্বভারতীর মুখপাত্র অমৃত সেন বলেন, “এক সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।”
পুলিশ ও বিশ্বভারতী সূত্রে খবর, শিল্প সদনের দুই অধ্যাপক রাজকুমার কোনার ও বিশাল ভানের মধ্যে ঝামেলা দীর্ঘ দিনের। এ দিন রাজকুমারবাবু বলেন, “ওই দিন বিকালে তিনটে পনেরো নাগাদ বিশালবাবু আমার দফতরে আচমকা ঢুকে পড়েন। কিছু বোঝার আগেই দরজা বন্ধ করে আমাকে ঘুষি মারতে শুরু করেন। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় দফতরের এক কর্মী আমাকে উদ্ধার করে পিয়ার্সন মেমোরিয়াল হাসপাতালে ভর্তি করেন।” বিশালবাবু দিন সাতেক আগেও তাঁকে হুমকি দিয়েছিলেন বলে রাজকুমারবাবুর দাবি। কী কারণে হুমকি তা নিয়ে অবশ্য রাজকুমারবাবু কোনও মন্তব্য করতে চাননি। বিশালবাবু অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, “রাজকুমারবাবুর বেশ কিছু অসঙ্গতিপূর্ণ কাজকর্ম নিয়ে আমি অভিযোগ জানাব বলে ঠিক করেছি। তা জানতে পেরেই তিনি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছেন। আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করা হচ্ছে।” বিশালবাবুর দাবি, গত এক বছর ধরে রাজকুমারবাবুর সঙ্গে তাঁর কোনও কথাবার্তাই হয়নি।
বৃহস্পতিবারের ঘটনাকে নিন্দা করে বিভাগীয় তদন্তের পাশাপাশি আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বিশ্বভারতীর শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের সংগঠন। বিশ্বভারতীর অধ্যাপকসভার সাধারণ সম্পাদক কিশোর ভট্টাচার্য বলেন, “ঘটনাটি নিন্দাজনক। বিশ্বভারতীর মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোন অধ্যাপককে মারধর করা চরম উদ্বেগের। আমরা বিভাগীয় তদন্ত দাবি করছি।” একই দাবি জানিয়েছেন বিশ্বভারতীর কর্মী সভার সভাপতি দেবব্রত সরকারও। এ দিকে বিশ্বভারতী সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজকুমারবাবুর বিভাগীয় প্রধান থাকার সময়ের বেশ কিছু আর্থিক অসঙ্গতি নিয়ে অতীতে বিশালবাবু সরব হয়েছিলেন। আবার কয়েক মাস আগেই স্ত্রী-কে নির্যাতন করার অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত হয়েছিলেন বিশালবাবু। পরে অবশ্য বিশ্বভারতী সেই সিদ্ধান্ত তুলে নেয়। সম্প্রতি তিনি ফের কাজে যোগ দিয়েছেন।
|