পঞ্চায়েত নির্বাচনের ঠিক আগে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার বরাদ্দের কৃতিত্ব দাবি নিয়ে কাজিয়া শুরু হয়েছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা কংগ্রেস, তৃণমূল ও সিপিএম নেতৃত্বের মধ্যে। প্রত্যেকেই এখন দাবি করছেন তাঁদের চেষ্টায় রাস্তা তৈরি করার টাকা জেলায় এসেছে।
শুক্রবার বালুরঘাটের চিঙ্গিশপুর অঞ্চলে প্রায় ৩ কিলোমিটার রাস্তার কাজ শুরুর বরাত পেয়ে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার সংস্থা ‘সাইনবোর্ড’ ঝুলিয়ে কাজ শুরু করে। পরে সমবায় মন্ত্রী তথা এলাকার তৃণমূল বিধায়ক শঙ্কর চক্রবর্তীকে দিয়ে রাস্তাটির আনুষ্ঠানিক শিলান্যাস করানোর করেন ঘোষণা করে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। ঠিকাদার সংস্থার লাগানো সাইনবোর্ড খুলে ফেলার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের সমর্থকদের বিরুদ্ধে। কংগ্রেস কর্মীরা বিক্ষোভ দেখালে এলাকায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। |
প্রধানমন্ত্রী সড়ক যোজনায় ৬০টি রাস্তার ব্লকভিত্তিক বিবরণ |
তপন ব্লকে |
২২টি , ৭৮.৬ কিমি |
বালুরঘাট ব্লকে |
১০টি, ৩৮.৪ কিমি |
বংশীহারী ব্লকে |
৫টি, ১৬.৭ কিমি |
গঙ্গারামপুরে |
৩টি, ৯.৩ কিমি |
হরিরামপুরে |
৬টি, ২১.৩ কিমি |
হিলি |
১টি, ২.১ কিমি |
কুমারগঞ্জে |
৪টি, ১০.১ কিমি |
কুশমন্ডি ব্লকে |
৯টি, ২৮. ৯ কিমি |
|
পুলিশ মোতায়েন করা হয়। যদিও মন্ত্রী শঙ্কর চক্রবর্তীর বদলে শিলান্যাস করেন তৃণমূলের জেলা নেতা সুভাষ চাকী। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা কংগ্রেস সভাপতি নীলাঞ্জন রায় অভিযোগ করেন, কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্পকে হাতিয়ার করে তৃণমূল পঞ্চায়েত ভোটের আসরে নেমেছে। রাস্তাগুলি ফের শিলান্যাস করে কৃতিত্ব দাবি করা হচ্ছে। তিনি বলেন, “কংগ্রেস কর্মীরা মানুষকে সব খুলে বলছেন।” শুধু ওই ৩ কিলোমিটার রাস্তা নয়। কাজিয়া শুরু হয়েছে, প্রকল্পের অন্য বরাদ্দ নিয়েও। সিপিএম পরিচালিত দক্ষিণ দিনাজপুর জেলাপরিষদের সিপিএমের সভাধিপতি মাগদালিনা মুর্মু বলেন, “প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়কের রাস্তাগুলির প্রকল্প তৈরি করে আমরা আগেই কেন্দ্রের কাছে পাঠিয়েছিলাম। ফলে জেলার জন্য ৬০টি রাস্তা অনুমোদনের কৃতিত্ব আমাদের। তৃণমূল রাস্তাগুলির শিলান্যাস অনুষ্ঠান করে যতই কৃতিত্ব নেওয়ার চেষ্টা করুক মানুষ বিশ্বাস করবে না।” অন্যদিকে, তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক বিপ্লব মিত্র বলেন, “সিপিএম এবং কংগ্রেস এখন ওই রাস্তাগুলি নিয়ে যে দাবি করছে তা হাস্যকর। আগেই পাঠানো প্রকল্পগুলি এতদিন কেন তাঁরা আদায় করতে পারলেন না!” তিনি দাবি করেন, দু’বছর আগে ৮৬টি রাস্তা প্রধানমন্ত্রী সড়ক যোজনায় ডিপিআর পাঠানো হলেও জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে কোনও রকম তদ্বির করা হয়নি। সম্প্রতি পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় দিল্লিতে গিয়ে ৬০টি রাস্তা আদায় করে আনে। ওই ৬০টি রাস্তার মধ্যে আদিবাসী অধ্যুষিত তপন ব্লকে রয়েছে ২২টি।
যে রাস্তাগুলির কৃতিত্ব নিয়ে তিন দলের কাজিয়া, সেগুলির কাজ কেমন চলছে? প্রশ্নের জবাবে জেলা পরিষদে নির্বাহী বাস্তুকার অমিতাভ ঘোষ এই দিন বলেন, “জেলার জন্য প্রধানমন্ত্রী সড়ক যোজনায় ৬০টি রাস্তা তৈরির অনুমোদন দিয়ে প্রায় ১২২ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ৫৪টি রাস্তার টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ করে কাজ শুরু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বাকি ৬টি রাস্তার কাজ শুরু করার প্রক্রিয়া প্রায় শেষের পথে।” |