নিষেধ করার পরেও বাড়ি তৈরির কাজ বন্ধ না করর ‘শাস্তি’ হিসাবে ৮০ বছরের এক বৃদ্ধা ও তাঁর ছেলেকে বেধড়ক মারধর করার অভিযোগ উঠল এক তৃণমূল কর্মীর বিরুদ্ধে। শনিবার ইংরেজবাজার থানার রামকেলি গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। জখম ওই বৃদ্ধা কিরণবালা সাহাকে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। ওই ঘটনায় পুলিশ এখনও পর্যন্ত অভিযুক্ত তৃণমূল কর্মীকে গ্রেফতার না করায় এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার কল্যাণ মুখোপাধ্যায় বলেন, “অভিযুক্ত ব্যক্তি গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছে। তার খোঁজে তল্লাশি চলছে।”
প্রহৃত বৃদ্ধার পুত্রবধূ মধুমিতাদেবী অভিযোগ করেন, এলাকায় তৃণমূল কর্মী হিসেবে পরিচিত তপন ঘোষ নামে এক ব্যক্তি মদ্যপ অবস্থায় তাঁর স্বামীর উপরে হামলা করেন। স্বামীকে মারধর করে নবনির্মিত লিন্টন ও সানসেট ভেঙে দেন। শাশুড়ি ছেলেকে বাঁচাতে গেলে তাঁকেও মারধর করা হয়। মধুমিতা দেবী বলেন, “তপনবাবু বাড়ি ভাঙচুর করে আমার স্বামী ও শাশুড়িকে মারধর করার সময় চিৎকার করে বলতে থাকেন তিনি কৃষ্ণেন্দু চৌধুরীর লোক। তাঁকে কেউ কিছু করতে পারবে না। পুলিশ আজ নিয়ে গেলে কাল ছেড়ে দেবে।” তাঁর অভিযোগ, ওই ব্যক্তি মন্ত্রীর ঘনিষ্ট বলেই পুলিশ তাদের গ্রেফতার করছে না। |
যদিও রাজ্যের পযর্টন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী ঘটনাটি সিপিএমের একটা চাল বলে অভিযোগ করেছেন। তিনি বলেন, “প্রত্যেকেই জানেন রামকেলি সিপিএমের দুর্গ। সেখানে তৃণমূল কর্মীর এত সাহস নেই যে কাউকে মারবে। তবুও আমি পুলিশকে বলব ওই বৃদ্ধাকে যে মেরেছে সে যে দলেরই হোক গ্রেফতার করুক। দল ওই কাজকে প্রশয় দেবে না, মারধর বরদাস্ত করবে না।” অভিযুক্ত তপন ঘোষের দাদা পেশায় চাষি দরবারি ঘোষ ঘটনাটি অরাজনৈতিক বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেছেন, “ভাই মদ খেয়ে একটা ঝামেলা করেছে। এর মধ্যে রাজনীতি কিছু নেই।”
প্রহৃত বৃদ্ধার পরিবারের লোকের নালিশ, বাড়ি তৈরি করার কাজ শুরু করার পরে তপনবাবু মদ খেতে চায়। কিন্তু সেটা না দেওয়ায় হামলা চালায়। বৃদ্ধার ছেলে গোপাল সাহা রামকেলি এলাকায় সিপিএম সমর্থক বলে পরিচিত। বাড়িতে ছোট মুদি দোকান আছে। এত দিন ইটের গাঁথনির উপরে টিনের চাল দেওয়া বাড়ি ছিল। টিনের চাল সরিয়ে ঢালাই ছাদ দেওয়ার জন্য গোপালবাবু কয়েক দিন আগে কাজ শুরু করেন। অভিযোগ, দাবি মতো মদ না দেওয়ায় তপনবাবু জানতে চান কার অনুমতি নিয়ে বাড়ির কাজ চলছে। জানালার সানসেট পিডব্লুডির জায়গায় হয়েছে জানিয়ে তিনি গোপালবাবুকে কাজ বন্ধ রাখতে বলেন। জানিয়ে দেন কাজ বন্ধ না করলে বাড়ি ভেঙে দেবেন।
তপনবাবুর হুমকির পরেও শুক্রবার লিন্টন ও সানসেট ঢালাই করেন গোপালবাবু। তপন ঘোষ খেপে গিয়ে শনিবার গোপালবাবুর বাড়িতে চড়াও হয়ে ভাঙচুর চালান। বাঁধা দিলে গোপালবাবুকে মাটিতে ফেলে তপনবাবু বেধড়ক মারধর শুরু করেন। মা কিরণবালা দেবী বাধা দিলে তাঁকেও মারধর করা হয়। মধুমিতা দেবী বলেন, “শনিবার থানায় অভিযোগ জানানো হয়। কিন্তু রবিবারেও পুলিশ তদন্ত করতে এই বাড়িতে আসেনি।” |