বারবার ডাকার পরেও চিকিৎসক প্রসূতিকে দেখতে না আসায় উত্তেজিত পরিজনেরা স্বাস্থ্য আধিকারিককে মারধর করে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ। রবিবার বিকেলে কালিয়াচক থানা লাগোয়া সিলামপুর ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ঘটনার। অভিযোগ, পরিজনেরা ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিককের কোয়ার্টারে ঢুকে তাঁকে কিল, চড়, ঘুষি, লাথি মেরে মাটিতে ফেলে দেয়। চশমা ভেঙে দেওয়া হয়। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতির সামলায়। রাতে ওই আধিকারিককে মালদহ মেডিক্যালে ভর্তি করানো হয়।
ওই প্রসূতি আরজিনিবিবির স্বামী বরকত শেখ বলেন, ‘‘আমার স্ত্রীর অবস্থা খারাপ। অথচ চিকিৎসকদের বারবার ডাকলেও তাদের কেউ আসতে চাননি।” জেলা পুলিশ সুপার কল্যাণ মুখোপাধ্যায় বলেন, “পুলিশ পৌঁছনোর আগেই পরিজনেরা পালিয়ে যায়। অভিয়োগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এ দিন রাত ৩টা নাগাদ প্রসব যন্ত্রণা শুরু হলে বাড়ির লোকেরা সুলতানগঞ্জের আরজিনা বিবিকে সিলামপুর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ভর্তি করান। অভিযোগ, চিকিৎসক তাঁকে দেখে জানিয়েছিলেন এখনই প্রসব করানো যাবে না। দুপুর ২টা নাগাদ হঠাৎ তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। বাড়ির লোকেরা ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে গিয়ে তা জানালে তিনি এখন ‘ডিউটি’তে নেই বলে জানান। এমনকী রোগীর পরিস্থিতি ভাল নয় বলে বারবার জানালেও তিনি যেতে পারবেন না বলে জানান। যে চিকিৎসক কর্তব্যরত রয়েছে তাঁকে দেখাতে বলেন। বারবার ডাকলেও ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক বা কোনও চিকিৎসক না আসায় রোগীর পরিচিতরা উত্তেজিত হয়ে পড়েন।
ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক কিশোর ঠাকুর বলেন, “প্রসূতিকে ভর্তি করার পরই জানিয়েছিলাম শিশুর অবস্থা ভাল নয়। বাইরে নিয়ে যেতে হবে। তারা ফের আসার ৫ মিনিট আগেও রোগীকে দেখি। স্বাস্থ্যকর্মীরা এসে জানান রোগীর লোকেরা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভাঙচুর করছে।” ওই সময়ই অন্তত ৪০ জন কোয়ার্টারে ঢুকে তাঁকে মারধর শুরু করে বলে অভিযোগ। চিকিৎসক বলেন, “পুলিশে অভিযোগ জানাব।” পুলিশ জানিয়েছে, গর্ভস্থ শিশুর অবস্থা খারাপ দেখে পরিবারের লোকেরা আরজিনা বিবিকে সিলামপুর স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে অ্যাম্বুল্যান্সে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ উদ্দেশ্যে রওনা হয়। জেলার মুখ্যস্বাস্থ্য আধিকারিক বিধান মিশ্র বলেন, “রোগীর পরিবার অভিযোগ করেছেন। তা খতিয়ে দেখা হবে। চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রামাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |