দূরদূরান্ত থেকে রোগী আসছেন রোজই। কিন্তু আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালের বেহাল পরিষেবার কোনও উন্নতি নেই। এ নিয়ে রোগীদের ক্ষোভ বাড়ছে। ‘নেই’-এর তালিকা ক্রমেই বাড়ছে। আর সেই কারণে বাড়ছে অপ্রীতিকর ঘটনাও। কখনও রোগীদের হয়রানির জেরে চিকিৎসক হেনস্থা হচ্ছেন, কখনও যথাযথ পরিষেবা না মেলায় রোগীদের আত্মীয়দের হাতে নিগৃহীত হচ্ছেন হাসপাতালের কর্মীরা।
সমস্যা নিয়ে ওয়াকিবহাল হাসপাতালের সুপার নির্মাল্য রায়। তিনি বলেন, “হাসপাতালের যাবতীয় অসুবিধার কথা স্বাস্থ্য দফতরে একাধিকবার জানিয়েছি। কিন্তু কিছু হয়নি। সমস্যার মধ্যেই যাবতীয় পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি আমরা।”
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, সেখানে অনুমোদিত শয্যাসংখ্যা ২৬৩টি। প্রতিদিন গড়ে রোগী থাকেন চারশো থেকে সাড়ে চারশো জন। হুগলি ছাড়াও বর্ধমান, বাঁকুড়া, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং হাওড়া জেলার রোগীদেরও ভিড় হয়। যেখানে এত রোগীর চাপ, সেখানে বর্তমানে চিকিৎসক রয়েছেন ২২ জন। অনুমোদিত পদ ৩৭টি। স্বাস্থ্যকর্মীর অনুমোদিত পদ ৮০টি। কিন্তু রয়েছেন ৩২ জন। সাফাইকর্মীর অনুমোদিত পদ ৩৪টি। বর্তমানে রয়েছেন ১৫ জন। খালি নার্সের সংখ্যা যথাযথ রয়েছে।
গত নভেম্বর মাস থেকে হাসপাতালে মাত্র এক জন শল্য চিকিৎসক রয়েছেন। বেশির ভাগ গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্রোপচারই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আলট্রা-সোনোগ্রাফি যন্ত্র বিকল হয়ে পড়ে রয়েছে গত বছর এপ্রিল মাস থেকে। সেটি মেরামত করা বা নতুন যন্ত্র কেনা হয়নি। রোগীদের বাইরে থেকে খরচসাপেক্ষ ওই পরীক্ষা করাতে হচ্ছে। ইসিজি যন্ত্র চালানোর জন্য মাত্র এক জন টেকনিশিয়ান রয়েছেন। ব্লাড ব্যাঙ্ক এবং প্যাথলজি কেন্দ্রেও কর্মীসংখ্যা কম। এ সবের জন্য রোগীদের পরিষেবা ব্যাহত হচ্ছে। দিন কয়েক আগে হাসপাতালে অবশ্য একটি ন্যায্য মূল্যের ওষুধের দোকান চালু হয়েছে। উদ্বোধন করেন হুগলির মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তণিমা মণ্ডল। হাসপাতালের সার্বিক পরিষেবা উন্নীতকরণে অবশ্য তাঁর আশ্বাস, “সব ঘাটতি মিটে যাবে।” |