কাঁকসায় অসুস্থ আরও ৫৬
প্রাথমিক স্কুলে খাদ্যে বিষক্রিয়ায় মৃত ছাত্রী
কটি আবাসিক প্রাথমিক স্কুলে খাদ্যে বিষক্রিয়া থেকে মৃত্যু হল তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীর। অসুস্থ আরও ৫৬ জন পড়ুয়া। মৃত ছাত্রী অর্চনা হেমব্রমের (৯) বাড়ি পুরুলিয়ার নিতুড়িয়ার কেয়াকানালি গ্রামে। এক ছাত্রীর অবস্থা আশঙ্কাজনক।
মৃত ও অসুস্থেরা বর্ধমানের কাঁকসার ডাঙাল এলাকায় পণ্ডিত রঘুনাথ মুর্মু আদিবাসী আবাসিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পড়ুয়া। অসুস্থ ছাত্রছাত্রীরা দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ওই হাসপাতালের চিকিৎসক তথা ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সহ-সভাপতি মিহির নন্দী বলেন, “প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে, খাদ্যে বিষক্রিয়ার জন্য এমনটা ঘটেছে। মৃত ছাত্রীর ভিসেরা, বমির নমুনা সংগ্রহ করে ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।” ছাত্রী মৃত্যুর তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। জেলা প্রশাসনও অসুস্থ পড়ুয়াদের হাসপাতালে পাঠানোয় গাফিলতি ছিল কিনা, তা খতিয়ে দেখছে।
স্কুল সূত্রের খবর, শনিবার দুপুরে খাওয়ার পর থেকে বমি-পায়খানা শুরু হয় ২৫ জন ছাত্রীর। তাদের কাঁকসা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। কয়েক ঘণ্টা পরে তাদের ছেড়েও দেওয়া হয়। রাতে আরও ৪২ জন অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাদের বীরভূমের ইলামবাজার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। রবিবার সকালে তাদের দুর্গাপুর হাসপাতালে পাঠানোর সময় পথেই মারা যায় অর্চনা। এ দিন স্কুলের আরও নয় ছাত্রী ও পাঁচ ছাত্র অসুস্থ হয়ে পড়ে। মহকুমা স্বাস্থ্য দফতরের একটি দল তাদের হাসপাতালে ভর্তি করায়। বিকেলে এক ছাত্রী ছাড়া পায়।
একমাত্র মেয়ের মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন অর্চনার বাবা, পেশায় দিনমজুর বৃন্দাবন হেমব্রম। হাসপাতালে দাঁড়িয়ে বলছিলেন, “ও বলেছিল, বড় হয়ে ইঞ্জিনিয়ার হবে। সব শেষ হয়ে গেল!” বিকালে পড়ুয়াদের দেখতে আসেন রাজ্যের অনগ্রসর কল্যাণ দফতরের মন্ত্রী উপেন বিশ্বাস। তিনি বলেন, “পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” হাসপাতালে আসা জেলাশাসক ওঙ্কার সিংহ মিনা অসুস্থ পড়ুয়া ও তাদের পরিজনদের সাহায্যের আশ্বাস দেন।
২০০৪ সালে গড়ে ওঠা এই স্কুলটি কেন্দ্রীয় সরকারের অনুদানে চালায় একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। পড়ুয়া পিছু বরাদ্দ মাসে এক হাজার টাকা। রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে আদিবাসী পড়ুয়ারা এখানে পড়ে। বর্তমানে স্কুলে ছাত্র সংখ্যা ১৩৬। ছাত্রী রয়েছে ১২৪ জন। এই ঘটনায় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটির ভূমিকা ও খাবারের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। শনিবারের ঘটনার কথা প্রশাসনকে জানানো হয়নি। রবিবার ছাত্রী মৃত্যুর খবরও প্রায় চার ঘণ্টা পরে পায় প্রশাসন। এ দিন তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা স্কুলে বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের অভিযোগ, যে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা স্কুলটি চালায়, তার দায়িত্বে থাকা সিপিএম নেতারা দায়সারা ভাবে স্কুল চালিয়ে অর্থ নয়ছয় করছেন।
ওই সংস্থার সম্পাদক তথা সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য পারশ তিওয়ারির দাবি, “সরকারি নিয়ম মেনেই অডিট হয়। টাকা নয়ছয় করার কোনও প্রশ্ন নেই।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.