কোনওটা মৌর্য যুগের আবার কোনওটা গিয়াসুদ্দিন বলবন বা দিল্লির সুলতানি আমলের বলে দাবি। রবিবার এমনই কিছু প্রাচীন মুদ্রা উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অক্ষয়কুমার মৈত্রেয় সংগ্রহশালা কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দিলেন উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তের ৭ জন বাসিন্দা। একটি পুরনো নথিও তুলে দিয়েছেন এক ব্যক্তি। পুরনো ফেরিওয়ালার কাছে বিক্রি করা পুরনো কাগজপত্র থেকে তা উদ্ধার করেছিলেন তিনি। সোনার দোকানে গিয়ে পুরনো রুপোর টাকা দিয়ে অলঙ্কার বানাতে দিয়েছিলেন এক জন। স্বর্ণ ব্যবসায়ী নকশালবাড়ির বাসিন্দা বীরেন কর্মকার তা দেখে খদ্দেরকে বুঝিয়ে চিনের ওই মুদ্রাটি নিজে কিনে নেন। প্রবাসী বাঙালি ইন্দ্রজিৎ চৌধুরী লন্ডনে থাকেন। এক সময়ের রায়গঞ্জের বাসিন্দা ইন্দ্রজিৎবাবু নিলাম থেকে প্রচুর প্রাচীন মুদ্রা কেনেন। এ ভাবেই নানা জায়গা থেকে সংগ্রহ করা প্রাচীন মুদ্রাগুলি এ দিন সংগ্রহশালা কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেন তাঁরা। |
উপাচার্য সমীর কুমার দাস বলেন, “এই সমস্ত প্রাচীন মুদ্রা এবং নথি খুব গুরুত্বপূর্ণ। ইতিহাস লেখা বিশ্লেষণের কাজে এ সব খুবই সহায়ক হবে।” উপস্থিত ছিলেন সংগ্রহশালার ডিরেক্টর দ্যুতিশ চক্রবর্তী, অধ্যাপক আনন্দ গোপাল ঘোষ সংগ্রহশালার প্রাক্তন ডিরেক্টর রত্না সান্যাল-সহ অনেকেই। আনুষ্ঠানিক ভাবে উপাচার্যের হাতে এ দিন প্রাচীন মুদ্রা এবং নথিগুলি তুলে দেন বিভিন্ন ব্যক্তিরা।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের এক সময়ের ছাত্র ইন্দ্রজিৎবাবু ১৯৬৭ সাল থেকেই বিভিন্ন সময়ে অনেক প্রাচীন মুদ্রা সংগ্রশালায় দিয়েছেন। এ দিনো জালালউদ্দিন, গিসায়উদ্দিন বলবন, শেরশাহ, পাঞ্চ মার্ক, মৌর্য, কণিষ্ক, কুষাণ, পাল, চোল আমলের মোট ২২টি মুদ্রা দিয়েছেন। শিলিগুড়ির বাসিন্দা নিরোজ অগ্রবাল কোচবিহারের নারায়ণী মুদ্রা, শিবাজির সময়ের মুদ্রা দিয়েছেন। ২০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের ৫ টি মুদ্রা রয়েছে। নিলাম থেকে কোনটা ২ হাজার টাকা দিয়ে কোনটা ২৫০০ টাকা দিয়ে তিনি কিনেছিলেন বলে জানান। শিবমন্দিরের বাসিন্দা তথা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী অদিতি ঘোষ দিয়েছেন, একটি প্রাচীন ঘড়ি এবং প্রাচীন মুদ্রা। রায়গঞ্জের বাসিন্দা মুকুল ভৌমিক ভিয়েতনাম এবং কম্বোডিয়ার টাকা দিয়েছেন। অসুস্থতার জন্য তিনি এ দিন নিজে উপস্থিত থাকতে না পারলেও তাঁর ভাই অশোকবাবুর হাত দিয়ে সেগুলি পাঠিয়েছিলেন। শিবমন্দিরের বাসিন্দা বিজন চট্টোপাধ্যায় দিয়েছেন মোঘল আমলের কয়েকটি মুদ্রা। শিলিগুড়ির বাসিন্দা পূরণ ছেত্রী কোচবিহার রাজ্য ‘সেটেলমেন্ট’-এর একটি নথি তুলে দেন। |