কালবৈশাখীর পথ খুলে ছন্দে ফিরছে চৈত্র
বিদায় নিতে দেরি করেছিল শীত। বসন্ত কবে যে এল আর কখন ধরল বিদায়ের পথ, সেটা মালুম হতে না-হতেই গরম তার আগমন জানান দিতে শুরু করেছে মহা-সমারোহে। হাওয়া অফিস বলছে, ছদ্ম-ঠান্ডার আবেশ কাটিয়ে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে প্রকৃতি। এতে বাড়ছে কালবৈশাখীর সম্ভাবনা। গ্রীষ্মের রুদ্র তেজই ঝড়বৃষ্টি ডেকে আনবে।
অথচ চৈত্রের প্রথম দশটা দিনকে প্রকৃত চৈত্র বলে মনেই হচ্ছিল না। মাঝরাত থেকে ভোর পর্যন্ত মিলছিল বিদায়বেলার শীতের আমেজ। বুধ-বৃহস্পতিবার ভোরেও ছিল পৌষালি হিম-হাওয়া। দিনে আকাশ জুড়ে মেঘ। হীনবল রোদ। বিকেল ও সন্ধ্যায় বসন্ত-বসন্ত হাওয়া। শনিবার রাত থেকে কিন্তু ছবিটা বদলাতে শুরু করেছে। কয়েক দিন ধরেই গভীর রাত ও ভোরের দিকে হাওয়ায় যে-ঠান্ডা ভাব মালুম হচ্ছিল, এ দিন সেটা কমে এসেছে। রোদ উঠতেই বাড়ছে গরম আর অস্বস্তি। শনিবারের থেকে রবিবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা এক ডিগ্রি কম থাকলেও এ দিন সকাল থেকেই ছিল চড়া রোদ আর গা-জ্বালানো আর্দ্রতা। ছুটির দিনে পথে বেরোনো মানুষকে রীতিমতো ঘামতে হয়েছে।
আবহাওয়ার হঠাৎ এ-হেন খামখেয়ালিপনা কেন?
হাওয়া অফিসের বক্তব্য, এটাই স্বাভাবিক। চৈত্রের শুরুতে শীতের আমেজটাই বরং ভেল্কি ছিল, খেয়াল ছিল। ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে বায়ুপ্রবাহে পরিবর্তনের সূত্রে বিলম্বিত হচ্ছিল শীতের বিদায়। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের আবহবিদেরা বলছেন, গত সপ্তাহখানেক ধরে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের উপরে একটি নিম্নচাপ অক্ষরেখা অবস্থান করছিল। ফলে দিনের আকাশে মাঝেমধ্যেই চোখে পড়ছিল মেঘের আনাগোনা। রাতে বদল ঘটছিল বায়ুপ্রবাহেও। সন্ধ্যা থেকে দখিনা হাওয়া ছোঁয়া দিয়ে গেলেও রাতে মাঝেমধ্যে উত্তুরে হাওয়া মালুম হচ্ছিল। ফলে গভীর রাতে বা ভোরের দিকে কিছুটা ঠান্ডা থাকায় হাল্কা চাদর গায়ে দিতে হচ্ছিল কলকাতা-সহ গোটা দক্ষিণবঙ্গের বাসিন্দাদের। দিনে-রাতে চৈত্রকে চিনে নিতে অসুবিধে হচ্ছিল। কারণ তার চোখরাঙানি প্রায় দেখাই যাচ্ছিল না।
অবশেষে হাওয়ার খেয়ালিপনা থামতেই স্বাভাবিক রুদ্রমূর্তিতে ফিরতে শুরু করেছে চৈত্র। আবহবিদেরা বলছেন, দিন দুয়েক ধরে উত্তরবঙ্গ থেকে বাংলাদেশ ও গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ হয়ে উপকূলীয় ওড়িশা পর্যন্ত বিস্তৃত থাকা নিম্নচাপ অক্ষরেখাটি দুর্বল হয়ে পড়েছে। তাই এ দিন সকাল থেকে আকাশে আর মেঘের দেখা মেলেনি। সারা দিন রক্তচক্ষু দেখাতে পেরেছে সূর্য। ফলে অনেক বেশি গরম মালুম হয়েছে। এ দিন কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায় সর্বাধিক তাপমাত্রা ছিল ৩৫.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস আর সর্বাধিক আর্দ্রতা ছিল ৯৩ শতাংশ।
হাওয়া অফিস বলছে, এটা বসন্ত বিদায় আর গ্রীষ্মের আগমনেরই ইঙ্গিত। সূর্য নিরক্ষরেখা অতিক্রম করেছে। এ বার ধীরে ধীরে দক্ষিণবঙ্গ-সহ গোটা রাজ্যেই গরম পড়বে দাপিয়ে। বাড়তে থাকবে তাপমাত্রাও। আবহবিদেরা মনে করছেন, আগামী কয়েক দিন কলকাতা এবং সংলগ্ন এলাকার তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রির আশেপাশে থাকবে। তাপের তপস্যাই ডেকে আনবে কালবৈশাখীকে। এই সময়ে যেটা স্বাভাবিক।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.