রাজ্যের বিভিন্ন প্রাথমিক স্কুলে ৩৫ হাজারেরও বেশি শিক্ষক-পদ পূরণের জন্য ৩১ মার্চ পরীক্ষা নেওয়া হবে। নানা সময়ে প্রার্থীরা মামলা ঠুকে দেওয়ায় নিয়োগ প্রক্রিয়া বিলম্বিত হচ্ছিল। অবশেষে আইনি জটিলতা কাটিয়ে পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ নিয়োগ পরীক্ষার নির্ঘণ্ট ঘোষণা করল রবিবার। পরীক্ষার ঠিক এক সপ্তাহ আগে।
কী কী বিষয়ে পরীক্ষা হবে? এক ঘণ্টার পরীক্ষায় মাতৃভাষা ও ইংরেজির আলাদা প্রশ্ন থাকবে। মাতৃভাষার মধ্যে বাংলা, হিন্দি, উর্দু, নেপালি, সাঁওতালি, তেলুগু এবং ওড়িয়ায় পরীক্ষা দেওয়া যাবে। এ ছাড়া অঙ্ক, শিশু মনস্তত্ত্ব, পরিবেশ-বিজ্ঞান প্রভৃতি বিষয়েও প্রশ্ন থাকবে। সম্ভাব্য উত্তরগুলির মধ্যে নির্ভুল উত্তরটি বেছে নিতে হবে। পর্ষদের চেয়ারম্যান মানিক ভট্টাচার্য জানান, প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীর সহায়ক-লেখক নেওয়ার ব্যবস্থা থাকছে।
রাজ্যে শেষ প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ হয়েছিল ২০০৯ সালে। তার পরে বহু পদ খালি হলেও বিভিন্ন জেলায় প্রার্থীরা নানান অভিযোগ নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হওয়ায় নিয়োগ আটকে ছিল। পর্ষদের চেয়ারম্যান মানিকবাবু বলেন, “সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশেই প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় আইনি জটিলতা কেটেছে।” গত ২০ মার্চ শীর্ষ আদালতের দেওয়া নির্দেশ অনুযায়ী সফল পরীক্ষার্থীদের দু’টি তালিকা তৈরি করতে হবে। যে-সব প্রার্থী পিটিটিআই বা প্রাথমিক শিক্ষকের প্রশিক্ষণ নিয়েছেন, তাঁদের একটি তালিকা। আর একটি তালিকা তৈরি করতে হবে প্রশিক্ষণহীন সফল আবেদনকারীদের নিয়ে। প্রথম তালিকাভুক্ত অর্থাৎ প্রশিক্ষিত সফল প্রার্থীদের প্রথমে নিয়োগ করতে হবে। মানিকবাবু জানান, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত আবেদনকারীর সংখ্যা ১১ হাজার।
আপাতত আইনি সমস্যা মিটলেও বিপুল সংখ্যক প্রার্থীর পরীক্ষার ব্যবস্থা কী ভাবে হবে, তা নিয়ে চিন্তায় পড়ে গিয়েছিল পুলিশ-প্রশাসন। শেষ পর্যন্ত জেলায় জেলায় সুষ্ঠু ভাবে পরীক্ষার বন্দোবস্ত করার জন্য জেলাশাসকদের মাথায় রেখে একটি করে কমিটি গড়া হচ্ছে। পর্ষদকর্তারা এ দিন জানান, পরীক্ষায় বসার জন্য আবেদনকারীর সংখ্যা ৪৫ লক্ষেরও কিছু বেশি। তবে অনেক প্রার্থীই একাধিক জেলা থেকে আবেদন করেছেন। সেই হিসেবে চূড়ান্ত সংখ্যাটা অনেকটাই কমার কথা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্রার্থীর সংখ্যা কত দাঁড়াবে, এখনই তা বলা যাচ্ছে না। পর্ষদকর্তাদের দাবি, একসঙ্গে এত ব্যাপক ভাবে নিয়োগ পরীক্ষা আগে কখনও হয়নি। কলকাতা-সহ বিভিন্ন জেলায় সাড়ে ছ’হাজার পরীক্ষা কেন্দ্র খোলা হচ্ছে। কোন কেন্দ্রে কাদের পরীক্ষা পড়েছে, তা জানাতে তিনটি ওয়েবসাইট চালু করেছে পর্ষদ। সেগুলি হল: www.wbbpe.org, www.wbsed.gov.in এবং www. ebresults.inc.in। এ ছাড়া মোবাইলে এসএমএস-এর মাধ্যমে পরীক্ষা কেন্দ্র জেনে নেওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। পরীক্ষার্থী তাঁর ন’টি সংখ্যার রোল নম্বর লিখে ৫৬৭৬৭ অথবা ৫৬১৬১ নম্বরে এসএমএস করলেই জবাব চলে আসবে। আজ, সোমবার বিকেল থেকেই এই সুবিধা মিলবে। প্রতিটি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ ভবনে এবং জেলা স্কুল পরিদর্শকের দফতরেও পরীক্ষার্থীদের রোল নম্বর অনুযায়ী পরীক্ষা কেন্দ্রের সবিস্তার তথ্য নোটিসে ঝুলিয়ে দেওয়া হবে। |