চলন্ত ট্রেনের কামরা সংরক্ষিত কামরার এক মহিলা যাত্রীর কান ছিঁড়ে সোনার দুল ছিনিয়ে নিল দুষ্কৃতীরা। আর ওই কামরার যাত্রীরা রক্তাত্ত মহিলাকে নিয়ে হাওড়া স্টেশনে অভিযোগ জানাতে গেলে কর্তব্যরত রেল পুলিশের কর্মীরা তা নিতে অস্বীকার করেন বলে অভিযোগ। রবিবার ভোরে এই ঘটনা ঘটেছে হাওড়াগামী মালদা ডাউন প্যাসেঞ্জার ট্রেনে। অভিযোগ জানাতে ব্যর্থ হয়ে শেষ পর্যন্ত ওই মহিলা জেসমিন বেগমকে কলকাতার নীলরতন সরকার হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করেন যাত্রীরাই। হাওড়া স্টেশনে জিআরপি থানায় তাঁদের ছিনতাইয়ের অভিযোগ নিতে রেলপুলিশ অস্বীকার করেছে বলে লিখিত নালিশও জানিয়েছেন তাঁরা। হাওড়ায় রেল পুলিশের সুপার মৃণালকান্তি দাসের কাছে রবিবার দুপুর পর্যন্ত মালদা টাউন প্যাসেঞ্জারের এই ঘটনার কোনও খবর অবশ্য পৌঁছায়নি। তিনি বলেন, “ছিনতাইয়ের বা অভিযোগ না নেওয়ার কোনও খবর আমার কাছে নেই। আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি কী ঘটেছে।”
যাত্রীদের অন্যতম মুর্শিদাবাদের অরঙ্গাবাদের সামাউন নবী বলেন, “হাওড়ার জিআরপি অফিসে অভিযোগ জানাতে গেলে কর্তব্যরত এক অফিসার জানান, ‘ছিনতাই হয়েছে’ বলে অভিযোগ লেখা যাবে না, পরিবর্তে তারা ট্রেনের লোহায় কান কেটে গিয়ে কানের দুল মাটিতে পড়ে গিয়েছে—এ ভাবে লেখার কথা বলে। অভিযোগ নিতে অস্বীকার করায় ওই অফিসারের সঙ্গে আমাদের বচসাও হয়। অভিযোগ জানাতে না পেরে ওই মহিলাকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।” তিনি আরও বলেন, “ঘটনার প্রায় ১০ ঘণ্টা পর রবিবার বিকেল নাগাদ ওই কামরার যাত্রীদের স্বাক্ষর করা লিখিত অভিযোগ হাওড়া ষ্টেশনের জিআরপি অফিসে জমা দিই। তবে সেই অভিযোগের এফআইআর লিপিবদ্ধ করা হয়নি।”
হাওড়াগামী মালদা প্যাসেঞ্জার ট্রেনটির ‘এস ৩’ সংরক্ষিত কামরার বেশিরভাগ যাত্রীই ছিলেন মুর্শিদাবাদের। এদের অন্যতম হলেন ফরাক্কার অর্জুনপুরের আজাদ আলি ও তার স্ত্রী জেসমিন বেগম। নীচের বাঙ্কে ঘুমিয়ে ছিলেন জেসমিন। গরমের জন্য মাথার কাছে জানালা খোলা ছিল। জেসমিন বলেন, “ট্রেনটি ভোর তিনটে নাগাদ সোমড়া বাজার স্টেশনে দাঁড়ায়। পরে ট্রেনটি ছাড়তেই দুষ্কৃতীরা জানলা দিয়ে হাত ঢুকিয়ে ডান কানের লতি ছিঁড়ে সোনার দুলটি ছিনিয়ে নেয়। আমি চিৎকার করতেই অন্য যাত্রীদের ঘুম ভেঙে যায়। কামরার মধ্যে হুগলির সিঙ্গুর হাসপাতালের এক চিকিৎসক ছিলেন। তিনিই কানের রক্ত বন্ধ করার চেষ্টা করেন। পরে ট্রেন হাওড়ায় পৌঁছালে যাত্রীরাই আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যান। এ দিন কামরায় পুলিশের দেখা পাইনি।” |