আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে হুগলিতে সার্বিক ঐক্যের লক্ষ্যে আজ, সোমবার ফের বৈঠকে বসছে বামফ্রন্ট। সেই ঐক্যের রূপরেখা কী হবে, কোন আসনে কাদের প্রার্থী দেওয়া হবে, এ সব নিয়ে চূড়ান্ত আলোচনার জন্যই ওই বৈঠক ডাকা হয়েছে বলে ফ্রন্ট সূত্রে জানা গিয়েছে।
রাজ্যে ক্ষমতায় না থাকার এই অসময়ে ফ্রন্টের অন্দরে ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়ার বিষয়টির উপর সব দলের নেতারাই জোর দিচ্ছেন। কিন্তু সর্বত্র প্রার্থী খুঁজে পাওয়াটা যে এই আবহে বেশ কঠিন তা ঠারে-ঠোরে কবুল করছে সব শরিক দলই। তার উপর রয়েছে ঘরছাড়াদের বিষয়টি। জেলার মধ্যে আরামবাগ মহকুমাতেই বর্তমানে ঘরছাড়াদের সংখ্যা সবথেকে বেশি। জেলা সিপিএমের এক শীর্ষ স্তরের নেতার কথায়, “প্রার্থী বাছাই নিয়ে দলে জোর আলোচনা চলছে। বৈঠকে ঐকমত্যে পৌঁছনো হবে।” ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সভাপতি নৃপেন চক্রবর্তী বলেন, “পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বামফ্রন্টের সার্বিক ঐক্যের বিষয়টি অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে। বকেয়া কিছু আলোচনা শেষ করেই প্রার্থী ঘোষণা করা হবে।”
গত কয়েকটি পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বামফ্রন্টের শরিক দলের মধ্যে আসন রফা নিয়ে রীতিমতো চাপান-উতোর চলেছিল। ঐক্যমত্যে পৌঁছতে পারেনি ফ্রন্ট। অনেক শরিকই নিজেদের মতো করে প্রার্থী ঘোষণার হুমকি দেয়। বিশেষ করে ফরওয়ার্ড ব্লকের সঙ্গে সিপিএমের বিরোধ চুড়ান্ত আকার নেয় ধনেখালি, আরামবাগ, গোঘাট-সহ বিভিন্ন জায়গায়। বহু জায়গায় গোঁজপ্রার্থীও দাঁড়িয়ে পড়েন।
এ বার সেই সমস্যা এড়াতে আগেভাগেই কোমড় বেঁধে নেমেছে ফ্রন্ট। তবে, তারকেশ্বর, ধনেখালি, জাঙ্গিপাড়া এবং আরামবাগ মহকুমার ছ’টি ব্লক নিয়েই ফ্রন্ট নেতারা বেশি চিন্তিত। কারণ ওই সব এলাকায় প্রার্থী পাওয়ার ব্যাপারে সব দলই সন্দিহান। তা ছাড়া, এই বাস্তবতাও নেতাদের অনেকেই মানছেন, দল ক্ষমতায় না থাকায় অনেকেই প্রার্থী হওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। তার উপরে শাসক দলের বিরুদ্ধে ভোটে দাঁড়িয়ে ‘অত্যাচারের’ মুখোমুখি হতেও অনেকেই আর আগ্রহী নন। তা ছাড়া, ৫০ শতাংশ মহিলা প্রার্থীও ভাবাচ্ছে দলগুলিকে। তাই পরিস্থিতি অনুযায়ী যেখানে সমস্যা হবে, সেখানে সার্বিক গ্রহণযোগ্যতা আছে, এমন নির্দল প্রার্থীদের সমর্থন করার ব্যাপারেও সব দল চিন্তাভাবনা করছে।
ফরওয়ার্ড ব্লকের এক জেলা নেতা বলেন, “আমাদের তালিকা তৈরিই আছে। ঘরছাড়াদের ফেরানোর ব্যাপারে পুলিশ প্রশাসনকে জানিয়ে কোনও ফল হয়নি। শেষ পর্যন্ত জেলা প্রশাসন কিছু ব্যবস্থা না নিলে নির্বাচন কমিশনকেই বিষয়টি জানাতে হবে।”
|