গ্রেফতার আরও ৬
‘ভাঙচুর-শ্লীলতাহানি’, ধৃত মদনের আত্মীয়
রাজ্যের এক প্রভাবশালী মন্ত্রীর আত্মীয় তিনি। অভিযোগ, সেই পরিচয়কে সামনে রেখে তিনি এলাকার মানুষের উপরে নানা অত্যাচার চালান। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। শনিবার রাতে শ্লীলতাহানি, মারধর, ভাঙচুর, চুরি-সহ একাধিক অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে রাজ্যের পরিবহণ ও ক্রীড়ামন্ত্রী মদন মিত্রের ওই আত্মীয়কে। পুলিশ জানায়, ধৃতের নাম সৌম্য বন্দোপাধ্যায় ওরফে বনি। তিনি মদনবাবুর শ্যালকের ছেলে। বাড়ি ভবানীপুরের ধীরেন্দ্র ঘোষ রোডে।
মন্ত্রীর আত্মীয়কে পুলিশ গ্রেফতার করার পরে রবিবার দুপুরে ভবানীপুরের কাঁসারিপাড়া এলাকার বাসিন্দারা তাঁর শাস্তির দাবিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হন। মুখ্যমন্ত্রীর কালীঘাটের বাড়িতে গিয়ে বনির বিরুদ্ধে নিজেদের ক্ষোভের কথা জানান তাঁরা। মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের সাহায্যের আশ্বাস দেন বলে ওই বাসিন্দারা জানিয়েছেন। কাঁসারিপাড়া এলাকাটি মুখ্যমন্ত্রীর বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত।
ভাঙচুর হওয়ার পরে কাঁসারিপাড়ার সেই ক্লাব।—নিজস্ব চিত্র
মদনবাবু অবশ্য অভিযুক্তের পাশে দাঁড়াননি। শ্যালকের ছেলের গ্রেফতার প্রসঙ্গে এ দিন বিকেলে তিনি বলেন, “আমার পরিবার বলতে স্ত্রী এবং ছেলে। কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। আইন মাফিক যা হওয়ার তা-ই হবে।”
কী হয়েছিল শনিবার?
কাঁসারিপাড়ার বাসিন্দারা পুলিশের কাছে লিখিত ভাবে অভিযোগ করেন, ওই রাতে আড়াইটে নাগাদ বনি তাঁর দলবল নিয়ে এলাকার একটি ক্লাবে ঢুকে ভাঙচুর চালান। ক্লাবের সদস্যরা বাধা দিতে এলে তাঁদের মারধর করেন তিনি ও তাঁর সঙ্গীরা। মহিলাদের শ্লীলতাহানিও করা হয় বলে ওই অভিযোগে বলা হয়েছে। ক্লাব ভাঙচুরের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি ট্যাক্সিও ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ। আরও অভিযোগ, ঘটনার সময়ে বনি ও তাঁর সঙ্গীরা মত্ত অবস্থায় ছিলেন। কাঁসারিপাড়ার বাসিন্দা শ্যামলাল কামার নামে এক ব্যক্তির অভিযোগ, ওই হামলার নেতত্বে ছিলেন বনি। পাড়ার আর এক বাসিন্দা মীরা যাদবের অভিযোগ, তাঁকে মারধর করে শাড়ি ছিঁড়ে দিয়েছেন বনি ও তাঁর সঙ্গীরা। ওই ঘটনার পরে পুলিশ বনি এবং তাঁর তিন সঙ্গীকে গ্রেফতার করে। দু’পক্ষের মধ্যে মারামারির অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় ওই ক্লাবের তিন জনকেও। ধৃত সাত জনকেই রবিবার আলিপুর আদালতে তোলা হয়। মারধরের ঘটনায় অভিযুক্তদের ছ’জনকে ২৬ তারিখ পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। বনিকে শ্লীলতাহানি ও চুরির ঘটনায় ৩০ তারিখ পর্যন্ত পুলিশ হেফাজত দেওয়া হয়েছে।
শনিবার রাতের এই ঘটনার পরে এ দিন সকালে কাঁসারিপাড়ার বাসিন্দারা দেখা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের সঙ্গে। তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ জানান, মন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয় দিয়ে বনি এলাকায় নানা অত্যাচার চালাচ্ছে। পুলিশও তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না। ওই বাসিন্দারা জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের বলেছেন, দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে এসে স্থানীয় এক বাসিন্দা পুতুল রায় বলেন, “দীর্ঘদিন ধরেই বনি আমাদের উপরে অত্যাচার চালাচ্ছে। আমরা মুখ্যমন্ত্রীকে তা জানিয়েছি। তিনি আমাদের আশ্বাস দিয়ে বলেছেন, তাঁর কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দিতে।”
এই ঘটনায় কাঁসারিপাড়ার ক্লাবের বিরুদ্ধে অবশ্য পাল্টা অভিযোগ এনেছেন শাঁখারিপাড়ায় বনির ক্লাবের সদস্যরা। ওই ক্লাবের সদস্য প্রসেনজিৎ বসুর অভিযোগ, কাঁসারিপাড়ার ছেলেরাই তাঁদের আগে মারধর করেছে।
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, এলাকার এই দুই পাড়ার দুই ক্লাবের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই গণ্ডগোল চলছিল। তার জেরেই শনিবারের রাতের ঘটনা বলে মনে করছে পুলিশ।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.