তারাবাজি
মা মডেল ক্যাটওয়াক

নাম: লক্ষ্মী রানা
স্বামীর নাম: পুনিত দোভাল
স্বামীর পেশা: সেনাবাহিনীর কর্মী
বিয়ে হয়েছে: প্রায় সাত বছর হল
নাম: সোনালিকা সহায়
স্বামীর নাম: কমল মেহতা
স্বামীর পেশা: ব্যাঙ্কার
বিয়ে হয়েছে: প্রায় দশ বছর হল
নাম: ক্যারল গ্রেসিয়াস
স্বামীর নাম: স্যামুয়েল জিজা
স্বামীর পেশা: অনলাইন ব্যবসা
বিয়ে হয়েছে: গত মাসে

লক্ষ্মী, সোনালিকা, ক্যারল— তিন জনই ভারতের প্রথম সারির মডেল। শুধু এঁরা নন। নয়নিকা চট্টোপাধ্যায়, সুরিলি জোসেফ আর অ্যালিসিয়া রাউত-য়ের মতো অনেক মডেলই আছেন যাঁরা মাতৃত্বের পরে আজও র‌্যাম্পে নজর কাড়েন।
কিন্তু সিনেমার জগৎটা আলাদা। কিছু অভিনেত্রী বিয়ের পরেও ভাল কাজ করছেন। মালাইকা অরোরা খান মা হওয়া সত্ত্বেও মুন্নি সেজে সারা দেশ মাতিয়েছেন। মল্লিকা শেরাওয়াত অভিনয় করতে নামেন তাঁর বিবাহ বিচ্ছেদের পরে। তবু যে সংখ্যক বিবাহিত মডেল শো-স্টপার হন, তার থেকে অনেক কম সংখ্যক বিবাহিত নায়িকা বাণিজ্যিক ছবিতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন। গ্ল্যামারের দুই জগতে বয়স আর ম্যারিটাল স্টেটাস এতটা পার্থক্য তৈরি করে কী করে?
উইলস ইন্ডিয়া ফ্যাশন উইকে
কিরণ উত্তম ঘোষের পোশাকে ক্যারল গ্রেসিয়াস
মডেলিংয়ে বয়সটা ফ্যাক্টর নয়
কোনও মডেল নিজেকে মেনটেন করতে পারলে র‌্যাম্প তাঁকে জায়গা দেবে। ডিজাইনার কিরণ উত্তম ঘোষের মতে, “নয়নিকা, ক্যারল আর সোনালিকা এরা তিন জনই আমার খুব প্রিয়। আমি ওদের সঙ্গে যখন কাজ করি, ওদের ম্যারিটাল স্টেটাসটা মাথায় রাখি না। এই তো ক্যারল আমার জন্য শো করল দিল্লিতে। র‌্যাম্পে ভাল করতে গেলে প্রয়োজন হয় উম্ফ। সেটা যার আছে সে-ই ভাল কাজ করবে।” ডিজাইনার অভিষেক দত্ত বলেন, “বয়সের সঙ্গে থাকে অভিজ্ঞতা। ফিগারটা ঠিক থাকলে, বিয়ে বা মাতৃত্ব কোনও ফ্যাক্টর নয় র‌্যাম্পের ক্ষেত্রে।”

মাতৃত্বের পরেও গ্ল্যামার কমে না
তাঁর ছেলের যখন পাঁচ মাস বয়স তখন মডেল অ্যালিসিয়া রাউত আবার র‌্যাম্পে ফেরেন। ছেলের আজ ছ’ বছর বয়েস। এখনও তিনি চুটিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন। “বাচ্চা হওয়ার পরেও কিন্তু আমি ফিগার সম্পর্কে বেশ সচেতন ছিলাম। ফিটনেস আমার কাছে লাইফস্টাইলের বড় অঙ্গ,” বলেন তিনি। “মডেলিংয়ে ফিরলাম প্রায় দেড় বছর পরে। মনে হত পারব তো? আমার বিবাহিত জীবনে অশান্তি ছিল। তার একটা চাপ তো ছিলই। তবু এক বার যখন রানওয়েতে উঠলাম তখন আর ওসব কথা মনে ছিল না,” অ্যালিসিয়া জানান। কোনও দিন কি মনে হয়েছিল যে ওই সব খোলামেলা পোশাক পরে র‌্যাম্পে হাঁটলে ছেলের বন্ধুরা তাঁকে নিয়ে টিটকিরি দেবে? “না। এটা তো প্রোফেশন। আমার বাড়িতেও এ ভাবে কেউ ভাবে না।
যদি সমাজ এ রকম ভাবে তা হলেঅন্য ব্যাপার। আমার নিজের লোকেদের এ রকম কোনও ভাবনাচিন্তা নেই,” সাফ জানিয়ে দিলেন তিনি।


‘‘মডেলদের সারা ক্ষণ ধরে
কাজ করতে হয় না। কিন্তু
অভিনেত্রীদের ক্ষেত্রে
সিনেমা হল ২৪x৭ কাজ
’’

‘‘আমি কাজগুলো এমন ভাবে
বাছি যাতে উইকএন্ডগুলো
ছেলের (ছবিতে) সঙ্গে কাটাতে পারি
’’

‘‘মডেলদের কোনও
ইমেজের বোঝা
বইতে হয় না।
নায়িকাদের হয়
’’

মডেলরাও ভাল ঘরকন্না করেন
বিবাহিত সব মডেলই দাবি করেন যে, ঘরকন্না করতে তাঁরা বেশ এক্সপার্ট। “আমার বারো বছর বিয়ে হয়েছে। মেয়ের দশ বছর বয়স। মেয়ের যখন দু’বছর বয়স তখন ওয়েন্ডেল রডরিক্সের শো করি প্রথম। তার পর অঞ্জু মোদী, সব্যসাচী মুখোপাধ্যায়ের মতো ডিজাইনারদের জন্যে ও আমার সঙ্গে র‌্যাম্পে হেঁটেছিল। আমার কাছে আমার মেয়ে এখন সব চেয়ে বড় প্রায়োরিটি। তাই নিজের কাজটাও আমি সে ভাবে বেছে নিই। মডেলিং ছাড়িনি কারণ আমার বর সব সময় আমাকে বলে যে, ‘যেটা পাচ্ছ সেটা পুরোপুরি উপভোগ করো। পরে আফসোস কোরো না।’ আমার স্বামী এই প্রফেশনে ছিল বলে ও আমাকে খুব ভাল বোঝে। স্বামী বা শ্বশুরবাড়ির সাপোর্টটা খুব দরকার,” বলেন নয়নিকা। অ্যালিসিয়া বলেন, “আমি কাজগুলো এমন ভাবে বাছি যাতে উইকএন্ডগুলো ছেলের সঙ্গে কাটাতে পারি।”

তা হলে সিনেমাতে নিয়মভঙ্গ কেন
অ্যালিসিয়া অবশ্য বলেছেন যে ভারতীয় ছবিতে গ্ল্যামার আর বিবাহিত মহিলাদের মধ্যে কোনও দিনই কোনও সংঘাত ছিল না। “সত্তর বা আশির দশকের সিনেমা দেখুন। সব গ্ল্যামারাস নায়িকাই তো বিবাহিত ছিলেন। অনেকের ছেলেমেয়েও ছিল। তার পর থেকেই যেন সব হিসেবগুলো উলটে পালটে গেল। সবাই ভাবতে শুরু করলেন যে, বিয়ে মানেই সব স্টারডম চলে যাবে। আর বাণিজ্যিক ছবিগুলো বেশ হিরো-কেন্দ্রিক হতে লাগল। আজকাল একটু পালটেছে হয়তো। তবে হলিউডে এখনও সব বিবাহিত মহিলাই গ্ল্যামারাস রোল করেন। অ্যাঞ্জেলিনা জোলির একাধিক ছেলেমেয়ে আছে বলে তিনি কি কম গ্ল্যামারাস?” প্রশ্ন অ্যালিসিয়ার।
অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত মেয়ে হওয়ার ঠিক চার মাস পরেই ‘চারুলতা ২০১১’র শ্যুটিং শুরু করে দেন। তিনি জানান, “মডেলদের সারাক্ষণ ধরে কাজ করতে হয় না। ফ্যাশন উইক বা ফোটোশ্যুটের সময় ব্যস্ত থাকেন ওঁরা। কিন্তু অভিনেত্রীদের ক্ষেত্রে সিনেমা হল ২৪x৭ কাজ। এটার জন্য আলাদা ডেডিকেশন দরকার। সেটা অনেকের ফ্ল্যাকচুয়েট করে।”
দেব আর নীলের শাড়িতে লক্ষ্মী রানা
অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়ের মেয়ের বয়স তেরো। টলিউডে নানা ধরনের ছবি করেছেন তিনি। তাঁর মতে অনান্য বিবাহিত অভিনেত্রীদের অসুবিধাটা অন্য জায়গায়। “মডেলদের কোনও ইমেজের বোঝা বইতে হয় না। নায়িকাদের পাবলিক আর স্ক্রিন ইমেজটা মেনটেন করাটাই বড় ব্যাপার। ক’টা লোক জানে যে, কোন মডেল বিবাহিত, কি না? কিন্তু নায়িকাদের ক্ষেত্রে দর্শক সব জানে। কিছু হিরো বিবাহিত নায়িকাদের সঙ্গে কাজ করতে চান না,” জানালেন স্বস্তিকা। তাঁর মতে দু’টো ইন্ডাস্ট্রির কাজের ধরনটাও আলাদা। “কোনও মডেলের ওপর কোটি কোটি টাকার ব্যবসা নির্ভর করে না। নায়িকাদের ক্ষেত্রে তা করে। আর মডেলদের বিকল্প পাওয়া সহজ। এক জন পারল না তো অন্য জন সঙ্গে সঙ্গে সেই কাজটা করে দিতে পারে। সেটা নায়িকাদের ক্ষেত্রে হয় না। ছবিটাই আটকে যাবে,” বলেন তিনি।
আর সেই ভয়টাই হয়তো পেয়ে বসে প্রযোজকদের। যেটা নিয়ে ডিজাইনার বা ফ্যাশন কোরিওগ্রাফাররা অতটা চিন্তিত নন। তবে আশা করা যায় করিনা কপূর খান আর বিদ্যা বালন হয়তো শীঘ্রই সিনেমার জগতে গ্ল্যামার আর বিবাহিত নায়িকাদের সমীকরণটা পালটে দেবেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.