গঠনগত ত্রুটির কারণেই উল্টোডাঙা উড়ালপুলের একাংশ ভেঙে পড়ে বলে প্রাথমিক তদন্তে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ দলের অভিমত। তবে সেই ত্রুটি নকশাজনিত, নির্মাণজনিত কিংবা রক্ষণাবেক্ষণ জনিত সে বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের পরেই রাজ্য সরকারকে রিপোর্ট দেওয়া হবে বলে জানান তাঁরা। কিন্তু ভেঙে পড়া অংশটি ফের পুরোপুরি ব্যবহার করা যাবে না বলেই মত বিশেষজ্ঞদের। পাশাপাশি, ভাঙা অংশটি কী ভাবে সরানো যেতে পারে তা নিয়েও ধন্দে পড়েছে রাজ্য সরকার।
৩ মার্চ ভোরে মার্বেল বোঝাই দ্রুতগামী একটি লরি-সহ ভেঙে পড়ে উড়ালপুলটির বাঁকের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ‘কার্ভড বক্স গার্ডার’। রাজ্য সরকার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক দীপঙ্কর চক্রবর্তীর নেতৃত্বে একটি কমিটি গড়ে। বৃহস্পতিবার পরীক্ষার কাজ শুরু করে কমিটি। দীপঙ্করবাবু বলেন, “কয়েকদিনের মধ্যে কাজ শেষ হলে ওই ভাঙা অংশ সরানো যাবে।” |
বিশেষজ্ঞ দলের এক সদস্য সুরজিৎ দত্ত বলেন, “গঠনগত ত্রুটি রয়েছে। তবে তা নকশা, নির্মাণ না রক্ষণাবেক্ষণ জনিত, পূর্ণাঙ্গ তদন্তেই তা উঠে আসবে।” বিশেষজ্ঞেরা জানান, এ দিন তিন ধরনের পরীক্ষা হয়েছে। গার্ডারটির কংক্রিটের অংশ ব্যবহার করা যাবে না। লোহার অংশটি ব্যবহার করা যায় কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
আগেই উড়ালপুলের ওই ভাঙা অংশ ব্যবহারের ইচ্ছা প্রকাশ করেছিল রাজ্য সরকার। সূত্রের খবর, ভাঙা গার্ডারটি পুরোপুরি ব্যবহার করা উচিত না বলেই মত বিশেষজ্ঞদের। কেএমডিএ-র চিফ এগ্জিকিউটিভ অফিসার অরূপ সাহা বলেন, “ভাঙা অংশটি ব্যবহার করা গেলে ভাল হয়। তবে বিশেষজ্ঞদের রিপোর্ট পেলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।” দুর্ঘটনার ১৮ দিন বাদেও খালে পড়ে যাওয়া লরিটি সরানো যায়নি। এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ দলের সঙ্গে কেএমডিএ-র আধিকারিকদের আলোচনাও হয়েছে। যদিও দীপঙ্করবাবু বলেন, “ভাঙা অংশটি সরাতে ৫০০ টন ওজন তুলতে সক্ষম ক্রেন দরকার। তা রয়েছে রেলের। কিন্তু সেটি শহরের রাস্তা দিয়ে ঘটনাস্থলে আনা যাবে না। অংশটি অটুট রেখে তুলে লাভ নেই। ভেঙে সরাতে হবে সেটি।” কবে, কারা সেটি সরাবে, ক’টি অংশে বিভক্ত করা হবেএ সবের সঠিক উত্তর এ দিন মেলেনি। কেএমডিএ-র পদস্থ এক আধিকারিক বলেন, “অভিজ্ঞ কোনও ঠিকাদারকে এর টেন্ডার দেওয়া হবে।”
লরিটি ও ভাবে নীচে পড়ে থাকা উড়ালপুলের পক্ষে ক্ষতিকারক, এ কথা স্বীকার করেছেন রাজ্যের নগরোন্নয়ন সচিব তথা সরকারের পাঁচ সদস্যের অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান দেবাশিস সেন। তিনি বলেন, “লরিটি তুলতে কেএমডিএ পুলিশকে চিঠি দিয়েছে। আমিও কথা বলেছি পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে।” |