ধাপার মাঠপুকুরে হত্যাকাণ্ডের সময় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন বাঁকুড়ায়। সেখান থেকেই নিজের দলের অভিযুক্ত কাউন্সিলর শম্ভুনাথ কাওকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেন তিনি। কিন্তু শম্ভুনাথ এখনও ফেরার। মুখ্যমন্ত্রী এই নিয়ে পুলিশের উপরে কিছুটা ক্ষুব্ধ।
কলকাতায় ফেরার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে, বৃহস্পতিবার রাতে মাঠপুকুরে নিহত তৃণমূল নেতা অধীর মাইতির বাড়ি গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ফের বুঝিয়ে দিলেন, এলাকায় ‘কুখ্যাত’ ওই কাউন্সিলরের পাশে দল বা সরকার কোনও ভাবেই দাঁড়াচ্ছে না। গার্ডেনরিচে পুলিশ অফিসার তাপস চৌধুরীর হত্যাকাণ্ডে জড়িয়ে গিয়েছে তৃণমূলেরই অন্য কাউন্সিলর মহম্মদ ইকবাল ওরফে মুন্নার নাম। সেই ঘটনার সময়েও মুখ্যমন্ত্রী শহরে ছিলেন না। তবে মমতা নিহত পুলিশ অফিসারের বাড়ি যেতে সময় নেন প্রায় তিন দিন। তত দিনে বিরোধী দলনেতা, রাজ্যপাল-সহ অনেকেই তাপসবাবুর বাড়ি ঘুরে এসেছেন। |
এ বার অবশ্য বেশি সময় নেননি মমতা। অধীরবাবুর স্ত্রীর হাতে রাতেই দু’লক্ষ টাকার চেক তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী। অধীরবাবুর পরিবার সূত্রের খবর, পরিবারের দু’জনকে চাকরি দেওয়ারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।
পুলিশি সূত্রের খবর, প্রতিদিনের মতো বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ময়দান এলাকায় হাঁটতে বেরিয়েছিলেন মমতা। তাঁর সঙ্গে ছিলেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। তাঁকে নিয়ে ময়দান থেকে গাড়িতে সোজা মাঠপুকুর রওনা হন তিনি। রাত ৮টা ১০ মিনিট নাগাদ অধীরবাবুর বাড়িতে পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী। মিনিট পনেরো পরিবারের লোকেদের সঙ্গে কথা বলে মুখ্যমন্ত্রী নিহত নেতার বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান।
দিঘা সফর সেরে গার্ডেনরিচ কাণ্ডে নিহত কলকাতা পুলিশের সাব-ইনস্পেক্টর তাপস চৌধুরীর বাড়িতে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কথা বলেছিলেন তাপসবাবুর স্ত্রী ও মেয়ের সঙ্গে। অর্থ সাহায্য করেছিলেন। তাপসবাবুর মেয়ের হাতে তুলে দিয়েছিলেন চাকরির নিয়োগপত্র।
মাইতি পরিবার সূত্রের খবর, বাড়িতে ঢুকে অধীরবাবুর স্ত্রী মিনুদেবীর মাথায় হাত বুলিয়ে সান্ত্বনা দেন মুখ্যমন্ত্রী। মিনুদেবীকে তিনি বলেন, “আমি পাশে আছি। যখন প্রয়োজন হবে ডাকবেন।” মুখ্যমন্ত্রী অধীরবাবুর দুই মেয়ে অনিতা মাইতি এবং সুনীতা বাগ এবং জামাই স্বস্তি মাইতি ও শান্তি বাগের মুখ থেকে ঘটনার বিবরণ শোনেন। ওই বাড়িতে দাঁড়িয়েই মুখ্যমন্ত্রী একাধিক বার জানিয়ে দেন, ‘ক্রিমিনালদের’ গ্রেফতার করা হবেই। সুনীতার ছ’মাস বয়সি ছেলে সুকোমলের মাথায় হাত বুলিয়ে আদরও করেন মমতা।
পরে বাড়ির বাইরে এসে এলাকার লোকজনের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “দোষীদের গ্রেফতার করা হবেই।”
|