ঝিল বোজানোর প্রতিবাদ করে পঞ্চায়েত সমিতির কাছে চিঠি দিয়েছিলেন বালি নিশ্চিন্দার সুকুমার ভট্টাচার্য। সেই ‘অপরাধ’-এ তাঁকে মারধরের অভিযোগ উঠল স্থানীয় কয়েক জন যুবকের বিরুদ্ধে। ওই ব্যক্তির দাবি, অভিযুক্তেরা তৃণমূলের। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব বিষয়টিকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেই দাবি করেছে।
পুলিশ জানায়, গত শনিবার রাতে সুকুমারবাবুর সঙ্গে স্থানীয় কিছু যুবকের বচসা ও মারামারি হয়। তিনি ও অপর পক্ষে স্থানীয় যুবক পিনাকী রায় আহত হন। ওই রাতেই তাঁরা পরস্পরের বিরুদ্ধে নিশ্চিন্দা থানায় লিখিত অভিযোগও করেন।
সুকুমারবাবু পুলিশকে জানান, ১৩ মার্চ তিনি দেখেন, তাঁর বাড়ির পিছনে ঝিলটিতে স্থানীয় কিছু যুবক ভিড় করেছে। তিনি বলেন, “দেখি ঝিলের পাড় থেকে বেশ কিছুটা অংশ বাঁশের খুঁটি পুঁতে ঘেরা হচ্ছে। ওরা জানায়, জায়গাটি ভরাট করে কয়েক জনকে ঘর করে দেওয়া হবে। প্রতিবাদ করলে ওরা হুমকিও দেয়।” ১৪ মার্চ বালি-জগাছা ব্লকের বিডিও ও পঞ্চায়েত সমিতির কাছে লিখিত ভাবে বিষয়টি জানান সুকুমারবাবু। |
বালিতে এই ঝিল ঘিরেই চাপান-উতোর। —নিজস্ব চিত্র |
সুকুমারবাবুর অভিযোগ, ১৬ মার্চ রাতে বাড়ি ফেরার সময়ে পঞ্চায়েতে কেন অভিযোগ করেছেন, সেই প্রশ্ন তুলে এক দল যুবক তাঁকে মারধর করে। তিনি বলেন, “কোনও মতে বাড়ি
ফিরে শুনি আমার জ্যাঠতুতো দাদাকেও ওরা মেরেছে।”
বালি জগাছা ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি চৈতালী দেবনাথ জানান, ২০১১ সালে একটি সংস্থাকে মাছ চাষের জন্য ঝিলটি লিজে দেওয়া হয়। ঝিল ভরাটের অভিযোগ পেয়ে ১৪ মার্চ মৎস দফতর, বিডিও, পুলিশ এবং ব্লকের ভূমি ও ভূমি রাজস্ব অফিসারের কাছে অভিযোগ করেন তিনি। বিডিও সুনন্দ ভট্টাচার্য বলেন, “অভিযোগটি বিএলআরও-কে খতিয়ে দেখতে বলেছি। এখনও রিপোর্ট পাইনি।”
ঝিল ভরাট ও মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে স্থানীয় তৃণমূল নেতা বিকাশ দে বলেন, “ঝিলে খুঁটি পোঁতা হয়েছে কেন জানি না। তবে সুকুমারবাবুকে ঝিলের কারণে কেউ মারধর করেনি।”
এ দিকে, বরাহনগরের প্রতি ওয়ার্ডে জলা ও পুকুরের তালিকা প্রকাশ্যে টাঙিয়ে দেওয়ার দাবি উঠল নাগরিক সভায়। বরাহগরের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের ঝিল ভরাটের বিরুদ্ধে এলাকার তিনটি ওয়ার্ডের নাগরিকেরা এক সভার ডাক দিয়েছিলেন। সেখানে স্থানীয় কাউন্সিলররা ছাড়াও ছিলেন বিভিন্ন ক্লাব-সংগঠনের প্রতিনিধিরা। খতিয়ান ও দাগ নম্বর-সহ প্রতিটি পুকুরের তালিকা প্রকাশ্যে টাঙিয়ে দেওয়া ছাড়াও জলা ভরাট করলে আইন মোতাবেক শাস্তির দাবি তোলা হয়। ১০ নম্বর ওয়ার্ডের শশিপদ ইনস্টিটিউট লেনেও বেআইনি ভাবে পুকুর ভরাট হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। চেয়ারপার্সন অপর্ণা মৌলিক নিজে ঘটনাস্থলে তদন্তে যান। |