বরাহনগরের ১১ নম্বর ওয়ার্ডে সরকারি খাস জলাজমির উপরে কোনও বেআইনি প্রোমোটিং করা যাবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী সোমবার বলেছেন, “কোনও ভাবেই এই ঝিল ভরাট করে কোনও প্রোমোটিং করা যাবে না।” প্রোমোটিং-চক্র নানা অসাধু কাজের মধ্যে দিয়ে জলা বোজানোর চেষ্টা করে তা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “একটি জলাও বোজানো যাবে না। জলা বুজিয়ে কোনও নির্মাণ চলবে না।” এ দিন বিধানসভায় নিজের ঘরে বসে ঝিল ভরাটের অভিযোগ জানার সঙ্গে সঙ্গে এই ব্যবস্থা নেন মুখ্যমন্ত্রী।
ওই ঝিল ও সংলগ্ন জলা ভরাটের জমিতে যাতে কোনও নির্মাণ কাজ না করা হয়, বরাহনগর পুরসভার চেয়ারপার্সন অপর্ণা মৌলিককে সেই নির্দেশ দেওয়ার জন্য বরাহনগরের বিধায়ক তাপস রায়কে দায়িত্ব দেন মমতা। তাপসবাবু বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর স্পষ্ট নির্দেশ, ঝিলের পরিবেশ নষ্ট করা যাবে না। চেয়ারপার্সনকে তা জানিয়ে দিয়েছি।” মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ দেওয়ার সময়ে উত্তর ২৪ পরগনার জেলা তৃণমূলের সভাপতি বিধায়ক নির্মল ঘোষ উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, “দশ বছর আগে যে প্রোমোটিং-চক্র এই ঝিল বোজানোর চেষ্টা করেছিল, তারাই আবার সক্রিয় হয়েছে। আমি তখনও বাধা দিয়েছিলাম। এ বারও বাধা দেব।”
অভিযোগ, ১১৯ নিয়োগী পাড়া রোডে প্রেমার ঝিল নামে পরিচিত দু’টি বিশাল জলা বুজিয়ে বেআইনি প্রোমোটিং করার চেষ্টা হয়েছিল প্রায় দশ বছর আগে। তখন স্থানীয় মানুষের বাধায় বরাহনগর পুরসভা এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়। এই কাজে যুক্ত থাকার অভিযোগে স্থানীয় তিন সিপিএম নেতাকে দল থেকে সাসপেন্ড করা হয়। পুলিশ কয়েক জনকে গ্রেফতারও করে। কিন্তু তৎকালীন মৎস্যমন্ত্রী কিরণময় নন্দের নির্দেশ সত্ত্বেও জলার যে অংশ ভরাট হয়েছিল, সেখান থেকে ফ্লাই-অ্যাশ তোলা হয়নি। এখন নতুন করে প্রোমোটার-চক্র সক্রিয় হয়েছে। এই জলা নিয়ে মামলা রয়েছে। আদালতের স্পষ্ট নির্দেশ, এখানে মাছ চাষ ছাড়া কিছু করা চলবে না।
১১, ২৮ এবং ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের কয়েক হাজার মানুষ এই ঝিলে স্নান ও অন্যান্য কাজে ব্যবহার করেন। নানা ধরনের বক-সহ পরিযায়ী পাখিও এই ঝিলে আসে। জলা এলাকায় নির্মাণের কাজ করার জন্য ভিত কাটার কাজ শুরু হতেই রবিবার স্থানীয় মানুষেরা বাধা দেন। স্থানীয় কাউন্সিলর আশিস বিদ সোমবারই এর বিরুদ্ধে পুরসভায় চিঠি দিয়েছেন। সিপিএম-তৃণমূল বিভেদ ভুলে স্থানীয় মানুষ এর বিরুদ্ধে সই সংগ্রহেও নেমেছেন। |