বড় শিল্পের জন্য জমি না থাকায় ছোট ও মাঝারি শিল্পের উপরেই জোর দিচ্ছে রাজ্য সরকার। কিন্তু ওই সব শিল্পই সব থেকে বেশি দূষণ ছড়ায় বলে মনে করেন পরিবেশবিদেরা। সোমবার পরিবেশবিদ সুভাষ দত্ত দাবি করেন, রাজ্যে দূষণকারী শিল্পের তালিকা তৈরি করলে প্রথম সারিতেই আসবে ছোট ও মাঝারি শিল্পগুলি। যার মধ্যে স্পঞ্জ আয়রন কারখানাই প্রধান। নজরদারির অভাবে ওই সব কারখানা দূষণ ছড়িয়েও পার পেয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ সুভাষবাবুর।
পরিবেশবিদদের বক্তব্য, দুর্গাপুর, আসানসোল-সহ রাজ্যের নানা জায়গায় স্পঞ্জ আয়রন কারখানা গজিয়ে উঠেছে। এই সব কারখানা থেকে নানা ধরনের দূষিত বর্জ্য পদার্থ নদী ও বাতাসে মিশছে। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। দূষিত হয়ে পড়ছে নদী ও জলাশয়ের জল। পানীয় জলেও ছড়িয়ে পড়ছে দূষণ। |
সুভাষবাবুর দাবি, “বায়ু দূষণের ফলে দুর্গাপুর-আসানসোলের মতো শিল্পাঞ্চলগুলি এক-একটি গ্যাস চেম্বারে পরিণত হয়েছে।” পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, এই ছোট-মাঝারি কারখানাগুলির অধিকাংশেরই উপযুক্ত পরিকাঠামো নেই। তার ফলে শিল্পজাত বর্জ্যে দূষণ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থাও তাদের থাকে না।
শিল্প দূষণের জন্য পরিবেশবিদেরা পরিবেশ দফতর ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের নজরদারির অভাবকেই মূলত দায়ী করলেও, তা মানতে চাননি দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান বিনয়কুমার দত্ত। তিনি বলেন, “স্পঞ্জ আয়রন-সহ বিভিন্ন কারখানার উপরে নজরদারি রয়েছে। সম্প্রতি ১৬ দফা নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছিল। তার পরে কারখানাগুলিতে বিশেষ পরিদর্শনও হয়েছে।”
রাজ্য সরকার যে দূষণ নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে উদাসীন তা রাজ্য বাজেটেই পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে বলে মন্তব্য করেন সুভাষবাবু। তিনি বলেন, ২০১৩-১৪ সালের বাজেটে রাজ্যে পরিবেশ খাতে খরচ কমানো হয়েছে। রাজ্য পরিবেশ দফতর সূত্রের খবর, নজরদারির জন্য যে পরিমাণ কর্মী থাকা প্রয়োজন তা তাদের নেই। এ বার রাজ্য বাজেটে পরিবেশ খাতে বরাদ্দ কমায় অতিরিক্ত নজরদার নিয়োগের প্রশ্নটিও বিশবাঁও জলে চলে গেল বলেই মনে করছেন সুভাষবাবুরা। যথাযথ নজরদারিতে যে শিল্প দূষণ কমে গুজরাতই তার উদাহরণ বলে মন্তব্য করেছেন পরিবেশবিদেরা। যদিও অন্য একটি অংশের মত, গুজরাতেও ছোট-মাঝারি শিল্প থেকে দূষণ ছড়ানোর অভিযোগ রয়েছে। |