নন্দীগ্রামের আন্দোলনে সওয়ার হয়ে যারা শাসক হয়েছে, ওই আন্দোলন থেকেই তাদের শিক্ষা নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশিষ্ট জনেদের একাংশ।
নন্দীগ্রামে ২০০৭ সালের ১৪ মার্চ পুলিশের গুলিচালনায় ১৪ জন নিহত হন। ওই ঘটনার ছ’ বছর পূর্তিতে বৃহস্পতিবার অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টসের সামনে সভায় গায়ক প্রতুল মুখোপাধ্যায় বলেন, “নন্দীগ্রামের ঘটনা থেকে সরকারের শিক্ষা নেওয়া উচিত। কী করলে মানুষের থেকে বিচ্ছিন্ন হতে হয়, কী করতে নেই, তা যেন এখনকার সরকার খুব ভাল করে মনে রাখে।” সরকারের যত সংখ্যাগরিষ্ঠতাই থাকুক, বেআইনি বা অসাংবিধানিক কাজ করে যে পার পাওয়া যায় না, তা নন্দীগ্রামই শিখিয়েছে বলে জানান মানবাধিকার কর্মী সুজাত ভদ্র। |
বিধানসভার নন্দীগ্রাম দিবসে শহিদ বেদীতে শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন
পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার। —নিজস্ব চিত্র |
নন্দীগ্রামের আন্দোলনে যুক্ত থাকায় যাঁদের বিরুদ্ধে তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকার মামলা করেছিল, তাঁদের মামলা থেকে রেহাই দেওয়ার দাবি ওঠে ওই সভা থেকে। নন্দীগ্রামে অত্যাচারে জড়িত রাজনৈতিক-প্রশাসনিক ব্যক্তিত্ব এবং পুলিশ কর্মীদের বিচার ও শাস্তির দাবিও তোলেন বিশিষ্টরা। সুজাতবাবু ছত্রধর মাহাতো-সহ সমস্ত রাজনৈতিক বন্দির মুক্তির দাবি তোলেন। ওই সভায় নন্দীগ্রামের ‘শহিদ’দের স্মরণ করেন শাঁওলি মিত্র, জয় গোস্বামী, অর্পিতা ঘোষ, প্রসূন ভৌমিক, ভাস্কর গুপ্ত, প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, অশোকেন্দু সেনগুপ্ত প্রমুখ।
এ দিন বিধানসভার লনেও নন্দীগ্রামের ‘শহিদ’দের স্মরণে বেদিতে মালা দেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়, সরকারি মুখ্যসচেতক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
পার্থবাবু বলেন, “নন্দীগ্রামের সংগ্রামকে আমরা ভুলিনি। কখনও ভুলব না।” তবে কংগ্রেস বিধায়ক মানস ভুঁইয়া তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, “শাসক দল নন্দীগ্রাম দিবস পালন করল। কিন্তু সেখানকার বিচারপ্রার্থী মা-বোনেরা এখনও বিচার পাননি! তাঁদের স্বামী-সন্তানরা কোথায়, তা তাঁরা জানতে পারছেন না। মুখ্যমন্ত্রী নীরব কেন?” মানসবাবুর অভিযোগ, প্রশাসনের যাঁরা নন্দীগ্রামের ঘটনায় অভিযুক্ত, তাঁদের ‘জামাই আদর’ করে পদোন্নতি দিয়েছে মমতার সরকার।
|