|
|
|
|
ভিসেরা সংরক্ষণ |
চিলাপাতার বনে দেহ ছাত্র-নেতার |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কোচবিহার |
ছাত্র পরিষদের কোচবিহার শহর কমিটির প্রাক্তন সভাপতি ও যুব কংগ্রেসকর্মী রাজা দত্তের মুণ্ডুহীন দেহ উদ্ধারের ঘটনায় খুনের মামলা রুজু করল পুলিশ। রবিবার মৃতের পরিবারের তরফে কোচবিহার পুলিশে অভিযোগ করা হয়। শহরের সুভাষপল্লির বাসিন্দা রাজা ৬ মার্চ থেকে নিখোঁজ ছিলেন। ৭ মার্চ ডুয়ার্সের চিলাপাতা জঙ্গলে তাঁর দেহ মেলে। ৮ মার্চ পরিজনেরা কোতোয়ালি থানায় নিখোঁজের অভিযোগ জানাতে গিয়ে দেহ উদ্ধারের খবর পান। থানায় দেহ শনাক্ত করেন। শনিবার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে ময়নাতদন্তের পর রাতে পরিবারের লোকেরা দেহ নিয়ে যান। এ দিন বিকেলে কোতোয়ালি থানায় মৃতের দাদা রানা দত্ত ভাই খুন হয়েছে বলে অভিযোগ জানান। তাঁর সন্দেহ, “পুরনো শত্রুতার জেরে ভাইকে খুন করা হয়েছে।”
নিহতের কাকা কান্টু দত্ত বলেন, ‘‘পরিচিত কেউ না হলে চিলাপাতায় ও যেত না বলেই আমাদের ধারণা। ওর মোবাইলটি উদ্ধার হলে সূত্র মিলতে পারে।” ছাত্র পরিষদের প্রাক্তন জেলা সভাপতি রাকেশ চৌধুরী জানান, রাজনীতি করলেও তাঁর সঙ্গে কারও শত্রুতা ছিল বলে জানা নেই। পেশায় পাড়ার একটি ব্যায়াম স্কুলের প্রশিক্ষক রাজাবাবুর কাটা মুণ্ডুটি বানিয়া নদীর জলে পাওয়া যায়। কুড়ি ফুট দূরে পাড়ে উদ্ধার হয় দেহটি। চিলাপাতা রেঞ্জের বানিয়া বিটের আধিকারিক হাসিমারা ফাঁড়িতে অভিযোগ জানান। পুলিশ গিয়ে দেহ উদ্ধার করে। ময়নাতদন্তের পর ভিসেরা পরীক্ষার জন্য কলকাতায় পাঠাতে তা সংরক্ষণ করেছে পুলিশ। খুনের আগে রাজাকে অচৈতন্য করতে কিছু খাওয়ানো হয় কি না তা নিশ্চিত হতে চাইছে পুলিশ। এ দিন হাসিমারা ফাঁড়ির দুই অফিসার মৃতের বাড়িতে গিয়ে নানা তথ্য সংগ্রহ করেন। কোচবিহার পুলিশ সুপার অনুপ জয়সওয়াল এ দিন জানিয়েছেন, তাঁরা ওই অভিযোগ সংশ্লিষ্ট থানায় পাঠিয়ে দেবেন। জলপাইগুড়ি জেলার পুলিশ সুপার অমিত জাভালগি বলেন, “খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত করা হচ্ছে।”
খুনের ঘটনায় দোষীদের ধরার দাবিতে আন্দোলনে নামছে কংগ্রেসের ছাত্র-যুব সংগঠন। সোমবার কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকরা তাঁর বাড়ি থেকে মিছিল করে থানায় যাবেন। কাল বাসিন্দাদের নিয়ে অরাজনৈতিক মিছিল হবে। বৃহস্পতিবার কোচবিহার, জলপাইগুড়ি জেলার পুলিশ সুপার এবং আলিপুরদুয়ারের মহকুমা পুলিশ আধিকারিককে দোষীদের শাস্তির দাবিতে স্মারকলিপি দেবে দুই জেলার যুব কংগ্রেস এবং ছাত্র পরিষদের কর্মী-সমর্থক-নেতারা। যুব কংগ্রেসে কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্র সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক, প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অমিতাভ চক্রবর্তী প্রদেশ সভাপতির নির্দেশে বুধবার কোচবিহারে রাজার বাড়ি যাবেন। কংগ্রেস নেতৃত্বের দাবি, রাজা এতটাই বলশালী যে অচৈতন্য না করে ওঁর মুণ্ডু কেটে খুন করা দু’ তিন জনের পক্ষেও সম্ভব নয়। ছক কষেই যে খুনের ঘটনা ঘটেছে, তা স্পষ্ট।
পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে জানানো হয়েছে, ৬ মার্চ সন্ধ্যায় ঘুরে আসার কথা বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে ছিলেন রাজা। রাত সাড়ে ৭ টা নাগাদ তার কয়েক জন পরিচিত ফোন করেন। মোবাইলে রিং হয়ে হয়ে কেটে গেলেও তিনি তা তোলেননি বলে পরিচিতরা জানিয়েছেন। রাত ১০ টা নাগাদ বাড়ির লোকজনেরা ফোন করেন। সেই সময়ে রাজার মোবাইল ফোনটি বন্ধ ছিল। |
|
|
|
|
|