রক্ত সংগ্রহের কিটের অভাবে বন্ধ হয়ে গেল তিনটি রক্তদান শিবির। রবিবার দুর্গাপুরের এই ঘটনায় একটি শিবিরের আয়োজক ডিওয়াইএফের অভিযোগ, এই ঘটনা রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বেহাল দশারই প্রতিফলন। স্বাস্থ্য দফতরের তরফে অবশ্য জানানো হয়েছে, সরবরাহকারী সংস্থা কিট পাঠাতে না পারার ফলেই এই সমস্যা দেখা দিয়েছে।
এ দিন দুর্গাপুরে তিনটি রক্তদান শিবির হওয়ার কথা ছিল। পলাশডিহায় ডিওয়াইএফ, মামরা বাজারে ব্যবসায়ী সমিতি এবং আইটিআই কলোনিতে একটি সংস্থা এই তিনটি শিবিরের আয়োজক ছিল। আগাম সে কথা মহকুমা হাসপাতালকে জানিয়েছিলেন আয়োজকেরা। ডিওয়াইএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার হাসপাতাল থেকে তাদের জানানো হয়, কিট নেই। তাই রক্তদান শিবির করা যাবে না। |
দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে রবিবার এলেন স্বাস্থ্য পরিদর্শক দল। —নিজস্ব চিত্র |
বাকি দু’টি শিবিরের আয়োজকেরা খবর পান রবিবার সকালে। স্বাভাবিক ভাবেই ক্ষুব্ধ হন তাঁরা। তাঁদের বক্তব্য, রক্তের আকাল রয়েছে। এই অবস্থায় কিটের অভাবে শিবির না করতে পারার ঘটনা মোটেই মানা যায় না। ডিওয়াইএফের পক্ষে সিদ্ধার্থ বসুর অভিযোগ, “রক্তদান করতে চেয়েও মানুষ তা করতে পারছেন না, এটা খুবই দুঃখজনক।” ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষে খোকন পোদ্দার জানান, রবিবার সকালে হঠাৎ হাসপাতাল থেকে ফোন করে বলা হয়, কিট নেই। তাই রক্তদান শিবির করা যাবে না। ‘দুর্গাপুর মহকুমা ব্লাড ডোনার্স ফোরাম’-এর সাধারণ সম্পাদক কবি ঘোষের বক্তব্য, “খুবই দুঃখজনক ঘটনা। এমন চলতে থাকলে রক্তদাতা ও আয়োজকদের মনোবল ধাক্কা খাবে। রক্তের জোগানও কমে যাবে।”
এ দিন স্বাস্থ্য দফতরের একটি প্রতিনিধি দল দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতাল পরিদর্শনে আসে। তাতে ছিলেন জেলার ডেপুটি সিএমওএইচ দ্বৈপায়ন হালদার। তিনি জানান, রাজ্য জুড়েই রক্ত সংগ্রহের কিটের আকাল চলছে। সরবরাহকারী সংস্থা কিট না পাঠানোর ফলেই এমন অবস্থা তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন, “জেলা থেকে কিটের জন্য দরবার করা হয়েছে।” হাসপাতাল সুপার দেবব্রত দাস জানান, প্রায় দু’সপ্তাহ ধরে দুর্গাপুরে এই পরিস্থিতি চলছে। শনিবার লাউদোহায় একটি শিবির বাতিল করতে হয়েছে। কাঁকসার রাজবাঁধে একটি শিবিরে যা প্রয়োজন তার থেকে অনেক কম কিট পাঠাতে হয়। মঙ্গলবারেও একটি শিবির রয়েছে। সুপারের আশঙ্কা, সেটিও বাতিল হবে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, শিবির না করা গেলে রক্তের আকাল বাড়ার সম্ভাবনা থাকছেই। তাতে রোগীরা বিপদে পড়তে পারেন। যে গ্রুপের রক্ত ব্লাড ব্যাঙ্কে মজুত রয়েছে তা রোগীর প্রয়োজন না হলে একমাত্র ভরসা সেই গ্রুপের রক্তের দাতা জোগাড় করা। রোগীর পরিজনেরা যতক্ষণ না দাতা জোগাড় করে আনতে পারছেন, ততক্ষণ রোগী রক্ত পাবেন না। তবে মঙ্গলবারের পরে পরিস্থিতি বদলাবে বলে আশাপ্রকাশ করেন হাসপাতালের সুপার দেবব্রতবাবু। তিনি জানান, তত দিনে কিট চলে আসবে বলে মনে করা হচ্ছে। |