নিজস্ব সংবাদদাতা • শামুকতলা |
এলাকার ব্যবসায়ীরা আন্দোলন স্থগিত রাখায় জাতীয় সড়ক তৈরির কাজ ফের শুরু হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। রবিবার আন্দোলনকারী ব্যবসায়ীদের আলোচনায় বসার জন্য প্রস্তাব দিয়েছে আলিপুরদুয়ার মহকুমা প্রশাসন।
মঙ্গলবার ওই আলোচনা হবে। এর পরেই আন্দোলন স্থগিত রাখার কথা ঘোষণা করেন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা। বারবিশা ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক কার্তিক সাহা বলেন, “ক্ষতিপূরণ বাবদ টাকা দেওয়া নিয়ে প্রতারণা করা হয়েছে। তাই নিরুপায় হয়ে রবিবার সর্বদলীয় বৈঠক করার পরে লাগাতার আন্দোলনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রথমেই অবস্থান, স্মারকলিপি দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মহকুমা প্রশাসন আলোচনায় ডাকায় তা তুলে নেওয়া হল।” আলিপুরদুয়ারের মহকুমাশাসক অমলকান্তি রায় বলেন, “আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি মিটবে আশা করছি।”
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, মহাসড়ক নির্মাণের জন্য দু’দফায় প্রায় ৪০ বিঘা জমি অধিগ্রহণ করা হয়। এলাকার অন্তত আটশো ব্যাবসায়ী ও চাষি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। প্রথম দফায় তাঁদের কিছু ক্ষতিপূরণের টাকা দেওয়া হলেও পরে কিছু মেলেনি। ওই পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীরা আদালতের দ্বারস্থ হন।
আদালত জলপাইগুড়ির বিভাগীয় কমিশনারকে দ্রুত ক্ষতিপূরণের টাকা মিটিয়ে দেওয়ার জন্য ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয়। এর পরে বিভাগীয় কমিশনার বারবিশায় এসে ১০৫ দিনের মধ্যে ক্ষতিপূরণের টাকা মিটিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। ব্যবসায়ীরা জানান, ৩১ ডিসেম্বর ২০১২ ওই সময়সীমা শেষ হলেও ক্ষতিপূরণের টাকা এখনও পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। গত ৩০ জানুয়ারি ব্যবসায়ীদের তরফে মহকুমা প্রশাসনের কর্তাদের চিঠি দিয়ে ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ক্ষতিপূরণের টাকা মিটিয়ে দেওয়ার সময় বেঁধে দেওয়া হয়। কিন্তু এর পরেও টাকা না মেলায় ক্ষতিগ্রস্তরা শনিবার জাতীয় সড়ক তৈরি করার কাজ বন্ধ করে দেন বলে অভিযোগ।
এ দিকে সড়ক তৈরির কাজ থমকে যাওয়ায় বিদেশি নির্মাণ সংস্থা কর্তৃপক্ষ লোকসান বেড়ে যাওয়ায় আশঙ্কায় ভুগছেন। ইটালিয়ান থাই ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড সংস্থার প্রোজেক্ট ম্যানেজার সাকসিথ সুয়ান্নাগার্ড ৩১ সি জাতীয় সড়কের উপর মহাকাল চৌপথি এলাকা থেকে বারবিশা হয়ে অসম সীমানা পর্যন্ত প্রায় ২৭ কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণের জন্য খরচ ধরা হয়েছে প্রায় ২২২ কোটি টাকা। তিন বছরের মধ্যে মহাসড়কের কাজ শেষ করার কথা। জমি অধিগ্রহণের সমস্যার জন্য সাত বছর পরেও সেটা সম্ভব হয়নি। ফলে লোকসান বেড়ে চলেছে। তিনি বলেন, “৯০ শতাংশ কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। মাত্র ১০ শতাংশ কাজের জন্য বসে থাকতে হচ্ছে। এ জন্য লোকসান দাঁড়িয়েছে প্রায় ৯০ কোটি টাকা। এ ভাবে কত দিন কাজ করা সম্ভব হয়ে তা নিয়ে সন্দেহ আছে।” তবে আন্দোলন তুলে নেওয়া হলে এবং প্রশাসন নিরাপত্তা দিলে তারা ফের কাজ করবেন বলে জানিয়েছেন। |