মহিলাদের আলাদা আসন নেই বাসে, ভোগান্তি চরমে
বাসের সংখ্যা খুব একটা বাড়ছে না। কিন্তু, যাত্রী সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে। ফলে, শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি রুটে বসে যাতায়াতের আসন পাওয়ার জন্য রোজই কার্যত যুদ্ধ করতে হয় নিত্যযাত্রীদের। সবচেয়ে সমস্যায় পড়তে হয় মহিলা নিত্যযাত্রীদের। ওই রুটের বাসে মহিলাদের জন্য ন্যূনতম কয়েকটি আসন সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেই। বহুবার ছাত্রী, শিক্ষিকা, বেসরকারি সংস্থায় কর্মরতারা নানা মহলে অনুরোধ করলেও মহিলাদের জন্য ওই রুটের কোনও বাসে আসন সংরক্ষণ হয়নি। এনবিএসটিসির বাসে মহিলাদের জন্য মাত্র দুটি আসন সংরক্ষিত রয়েছে। কলকাতা-সহ যে কোনও বড় শহরে সরকারি-বেসরকারি বাসে পর্যাপ্ত আসন মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত থাকে। তা হলে শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি রুটে কেন সেই প্রথা কার্যকরি হবে না? এই প্রশ্নে সরব পারমিতা দাশগুপ্ত, মণিদীপা সরকারের মতো নিত্যযাত্রীরা।
প্রতিদিন প্রায় ঝুলেই শিলিগুড়ির শক্তিগড়ের কাছে প্রাথমিক স্কুলে যাতায়াত করতে হয় পারমিতাকে। একই অভিজ্ঞতা শিলিগুড়ির মণিদীপার। ডুয়ার্স সহ অন্যান্য রুটের বাসেও একই ধরনের সমস্যায় পড়েন মহিলা যাত্রীরা। যেমন, কর্মসূত্রে শিলিগুড়ি থেকে ধূপগুড়িতে যাতায়াতে অভ্যস্ত ঈশিতা রায় বললেন, “মেয়েদের জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক আসন আলাদা করে না-থাকায় কী যে সমস্যা হয় বলে বোঝানো যাবে না। ভিড় বাসে ঠিকভাবে দাঁড়ানো যায় না। আরও কতরকম অসুবিধে আছে।”
পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, রোজ গড়ে শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি রুটে ২৩টি সুপার, ২০টি লোকাল বাস যাতায়াত করে। রয়েছে কয়েকটি সরকারি বাস। অফিসের ব্যস্ত সময়ে বাড়তি ভিড় হয় সব বাসেই। ফলে, আসন সংখ্যার তুলনায় দ্বিগুণ যাত্রী হয় অনেক সময়ই। সেই ভিড়ে মহিলা যাত্রীদের বেশি মাত্রায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সে কারণে মহিলা নিত্যযাত্রীদের দাবি, অন্তত ১২টি আসন মহিলাদের জন্য নির্দিষ্ট করা হোক। ভিড় হলে ওই আসনের সামনে তুলনামূলক স্বচ্ছন্দে দাঁড়াতে পারবেন মহিলা যাত্রীরা।
বছরের পর বছর এমন সমস্যা চলছে। তবুও নেতানেত্রী, প্রশাসনের আমলারা কেন ওই কাজটা করতে পারছেন না তা নিয়ে সব মহলেই চলছে নানা জল্পনা, চাপানউতোর। জলপাইগুড়ির প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ মিনতি সেন বলেন, “এটা সত্যিই দুর্ভাগ্যের। আমি অনেকবার বলেছি। কাজও এগিয়েছিল। এখন যাঁরা সরকারের রয়েছেন, তাঁরা এটা তাড়াতাড়ি করবেন বলে আশা করি।”
খেলার সুবাদে দেশ-বিদেশের বড় শহরে ঘুরেছেন টেবিল টেনিস তারকা মান্তু ঘোষ। তাঁর কথায়, “এটা খুব একটা বড় ব্যাপার নয়। মেয়েদের জন্য কয়েকটা আসন বাসে আলাদা করে রাখা। যেখানে মেয়েরা বসতে পারবে। মেয়েরা না-থাকলে ছেলেরাও বসতে পারে। তবে মেয়েরা উঠলে তা ছেলেদের ছেড়ে দিতে হবে। এই ছোট্ট কাজটা এতদিনেও হল না কেন সেটা ভেবেই অবাক হয়ে যাচ্ছি!”
শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি গ্রেটার ডেলি প্যাসেঞ্জার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক শান্তনু বসুরা অবশ্য অনেকদিন ধরেই মালিকপক্ষ ও সরকারের কাছে ওই আর্জি জানিয়েছেন। কাজের কাজ হয়নি। নর্থ বেঙ্গল প্যাসেঞ্জার ট্রান্সপোর্ট ওনার্স কো অর্ডিনেশন কমিটির সম্পাদক প্রণব মাণি বলেন, “শীঘ্রই আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।”
এই সমস্যার বিষয়টি এতদিন নজরে পড়েনি জলপাইগুড়ির জেলাশাসক স্মারকী মহাপাত্র ও দার্জিলিঙের জেলাশাসক সৌমিত্র মোহনের। দুজনে প্রায় এক সুরে বলেন, “আশ্চর্য! এটা এতদিন হয়নি কেন? এটা হওয়া বাঞ্ছনীয়। আমরা যা করার করব।’



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.