কেন্দ্রীয় সাহায্য অমিল। প্রত্যাশামতো আয়ও বাড়েনি। আসেনি নতুন শিল্পও, যা থেকে আয় বাড়তে পারে সরকারের। পঞ্চায়েত ভোটের ঠিক আগে সাধারণ মানুষের উপরে করের বোঝা চাপাতে নারাজ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এই অবস্থায় আজ, সোমবার বিধানসভায় বাজেট পেশ করবেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে সরকারের জনমোহিনী নীতি বজায় রেখে আয় বাড়ানোর পথ বের করাই এই বাজেটে অর্থমন্ত্রীর সামনে সব চেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। পাশাপাশি, সরকারের উন্নয়নমূলক কাজের জন্য পর্যাপ্ত টাকার সংস্থানও করতে হবে তাঁকে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ক্ষমতায় আসার পরে এটা দ্বিতীয় পূর্ণাঙ্গ বাজেট। গত বাজেটে মুখ্যমন্ত্রীর নিষেধ মেনে সাধারণ মানুষের উপরে করের বোঝা চাপাননি অমিত মিত্র। কর বাড়িয়েছিলেন কয়েকটি বিলাসপণ্যে। ফলে, সরকারের আয় সে ভাবে বাড়েনি। গত আর্থিক বছরে রাজস্ব আদায়ের যে লক্ষ্যমাত্রা রেখেছিলেন, তার থেকে অনেক পিছনে দৌড় শেষ করেছিলেন অর্থমন্ত্রী। এ বারে সেই লক্ষ্যমাত্রার কতটা কাছাকাছি পৌঁছতে পেরেছেন, তা বোঝা যাবে সোমবার তাঁর পেশ করা আর্থিক বিবরণী থেকেই।
মুখ্যমন্ত্রী শনিবারই দাবি করেছেন, চলতি আর্থিক বছরে ১০ হাজার কোটি টাকা বাড়তি আয় হয়েছে সরকারের। কিন্তু খরচের বহর কমেনি। বরাদ্দ বাড়েনি উন্নয়নমূলক কাজেও। উল্টে, রাজ্যের ক্লাবগুলিকে টাকা দেওয়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন উৎসবে দেদার খরচ করেছে রাজ্য। বাজার থেকে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা ধার করেছে সরকার। ১৯ তারিখ আরও দেড় হাজার কোটি ধার করার কথা। বিরোধীদের অভিযোগ, চলতি আর্থিক বছরে ধারের রেকর্ড গড়েছেন অমিত মিত্র। কোনও রাজ্য এত টাকা ধার করেনি বলেই বিরোধীদের দাবি।
অর্থ দফতর সূত্রের খবর, পঞ্চায়েত ভোটের আগে খয়রাতির বহর বাড়ার সম্ভাবনাই বেশি। এই অবস্থায় রাজ্যের আর্থিক হাল ফেরাতে অর্থমন্ত্রী কোন ক্ষেত্রকে বেছে নেন, সেটাই সোমবার দেখার। তবে অর্থ দফতর সূত্রের খবর, কর-সংস্কারের মাধ্যমে বেশ খানিকটা আয় বাড়াতে সক্ষম হয়েছে রাজ্য সরকার। এ বারে তাই অর্থমন্ত্রী এ ধরনের কিছু প্রশাসনিক পদক্ষেপ করে আয় বাড়ানোর চেষ্টা চালাতে পারেন। তবে তাতে সার্বিক ভাবে উন্নয়নের টাকার জোগান অব্যাহত রাখা যাবে কি না, তা নিয়ে সংশয় থাকছেই। |