মেয়েকে খুন করে আত্মঘাতী হলেন মা। বহরমপুর থানার নিশ্চিন্তপুর গ্রামে মনোহরা বিবি (৩০) ও তাঁর কন্যা মেহেরুন্নেসা ওরফে চম্পার (১২) আগুনে পুড়ে মৃত্যুর পরে প্রাথমিক তদন্তে সেই সন্দেহই করছে পুলিশ। বহরমপুর থানার আইসি মোহায়মেনুল হক বলেন, “শারীরিক অসুস্থতার কারণেই গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন জ্বেলে আত্মঘাতী হয়েছেন বলে ওই মহিলা মৃত্যুর আগে পুলিশকে জানান।” কিন্তু তিনি তাঁর কন্যাকে কেন খুন করলেন? আইসি বলেন, “ওই মহিলা পুলিশকে বলেছেন, তাঁর মৃত্যুর পরে মেয়ের দেখাশোনা করার কেউ থাকবে না। তাই মেয়ের গায়েও তিনি কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। ঘটনার তদন্ত চলছে।”
তবে মনোহরাবিবির ভাই সরজান আলি শেখ বলেন, “জামাইবাবু আড়াই বছর আগে কর্মসূত্রে সৌদি আরবে গিয়েছেন। তাঁর পাঠানো টাকায় সংসার চলত। এদিন সকালে জামাইবাবু ফোন করলে দিদির সঙ্গে তাঁর ঝগড়া হয়। ফোনে দিদি তুমুল চিৎকার-চেঁচামেচিও করেন। কিন্তু কী কারণে ঝগড়া হয়, তা জানা যায়নি। এর পরেই গায়ে কেরোসিন ঢেলে দিনি মেয়েকে মেরে নিজে আত্মঘাতী হয়েছেন বলে জানতে পারি।” মনোহরাবিবির বছর আটেকের একটি ছেলেও রয়েছে। তার নাম ইউসুফ শেখ। এই দিন সকালেই মনোহরাবিবি ইউসুফকে পাশের গ্রামে তাঁর মায়ের বাড়ি দুর্গাপুরে পাঠিয়ে দেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ ঘরের ভিতর থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখে পাড়া-প্রতিবেশীরা ‘আগুন লেগেছে ভেবে’ মনোহরাবিবিকে ডাকাডাকি করতে থাকেন। কিন্তু ভিতর থেকে গোঙানির আওয়াজ পেয়ে প্রতিবেশীরা গ্রিল খুলে ভিতরে ঢুকতে গিয়ে দেখেন গ্রিলের দরজায় তালা। তালা ভেঙে মা ও মেয়েকে উদ্ধার করতে আধ ঘন্টারও বেশি সময় লেগে যায়। প্রতিবেশী নাসির শেখ, ফারুখ শেখদের কথায়, “গ্রিলের তালা ভাঙতেই আধ ঘন্টার বেশি সময় লাগে। তালা ভেঙে ভিতরে ঢুকে দেখি তত ক্ষণে চম্পা মারা গিয়েছে। মনোহরা বিবি তখনও বেঁচে।” এর পরেই বহরমপুর থানায় খবর দেওয়া হয়। পুলিশ এসে চম্পার মৃতদেহ উদ্ধার করে। সেই সঙ্গে আশঙ্কাজনক অবস্থায় মনোহরি বিবিকে উদ্ধার করে মেডিক্যাল কলেজে ভর্তির করানো হয়। হাসপাতালে ভর্তির কয়েক ঘন্টার মধ্যেই মারা যান ওই মহিলা। |