ফুটবল বৈচিত্রে মেসি-রোনাল্ডোর ধারেকাছে আসবে না রুনি। তবু ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডে শেষ দশ বছর ধরে ওয়েন রুনির একটা আলাদা গুরুত্ব আছে। ফার্গুসনের খেলার স্টাইল-স্ট্র্যাটেজির সঙ্গে খাপ খেয়ে যায় রুনি। প্রচুর জায়গা নিয়ে খেলে। রবিবার এফএ কাপ কোয়ার্টার ফাইনালে রুনির ফ্রিকিক গোলটা টিভিতে দেখতে মামুলি লাগলেও বুদ্ধিমত্তার একটা ব্যাপার আছে। আমি মনে করি, রিয়াল মাদ্রিদের বিরুদ্ধে শুরু থেকে ওর খেলা উচিত ছিল। এ দিনই ওয়েবসাইটে দেখছিলাম, রুনির সঙ্গে নতুন চুক্তি করতে চান ফার্গুসন। পড়ে মনে হল, ম্যান ইউ বস বুঝেছেন, রুনির প্রতি তিনি সে দিন অন্যায় করেছিলেন।
আসলে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডে বেকহ্যাম-রোনাল্ডো-রুনি যত বড় ফুটবলারই খেলুক না কেন, দলটার আসল তারকা কোচ ফার্গুসন। কয়েক যুগ ধরে আছেন এই দায়িত্বে। এত বড় মাপের কোচ যে, টিমে ওঁর পছন্দ-অপছন্দের উপর ম্যাঞ্চেস্টারের প্রথম দল, রিজার্ভ বেঞ্চ নির্ভর করে। ওল্ড ট্র্যাফোর্ড থেকে এত হাজার মাইল দূরে বসেও আমার কেমন যেন বারবার মনে হচ্ছে, রিয়াল ম্যাচের আগে ফার্গুসনের কিছু অনুশাসন রুনি মানেনি বলেই অমন হাইভোল্টেজ ম্যাচেও বাদ পড়েছিল। |
আবার ফার্গুসনের টুর্নামেন্ট-বিপক্ষএ সব অনুযায়ী একটা অদ্ভুত ব্যাপার আছে প্রথম দল নামানোর ক্ষেত্রে। রিয়াল ম্যাচের ফরোয়ার্ড জুড়ি ফান পার্সি-ওয়েলবেক দুজনই এ দিন চেলসির বিরুদ্ধে রিজার্ভ বেঞ্চে। তার জায়গায় নতুন অ্যাটাকিং জুটিরুনি আর হার্নান্দেজ। শেষ জন এ বারের এফএ কাপের হায়েস্ট স্কোরার। এবং দেখুন, ম্যাচের ১১ মিনিটের মধ্যে ম্যাঞ্চেস্টার ২-০ এগিয়ে গিয়েছিল হার্নান্দেজ, রুনির গোলেই। হাফটাইমে যখন মনে হচ্ছিল, ইউরোপিয়ান ফুটবলে আদায়-কাঁচকলায় সম্পর্ক যে দুই কোচের, সেই রাফায়েল বেনিতেজের বিরুদ্ধে অ্যালেক্স ফার্গুসন হাসতে-হাসতে ম্যাচ বার করে নেবেন, তখনই চেলসি দ্বিতীয়ার্ধের প্রথম কুড়ি মিনিটে ২-২ করে কোয়ার্টার ফাইনাল লড়াইকে রিপ্লে-তে নিয়ে গেল। এবং হাজার্ড আর রামিরেজের দুর্দান্ত গোলের পর এখন নিজেদের মাঠ স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে আমার মতে অ্যাডভান্টেজ চেলসি।
বেনিতেজের এ দিন হাফটাইমে মিকেল আর হাজার্ডকে নামানোর ট্যাকটিক্সটা দারুণ কাজে লেগে গিয়েছে। গ্যালারিতে তখন চেলসির সমর্থকদের চিৎকার উঠেছে‘উই ওয়ান্ট স্পেশ্যাল ওয়ান’। মানে মোরিনহোকে চাই। গত বারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগ এবং এফএ কাপ চ্যাম্পিয়ন চেলসি এ বার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ থেকেই ছিটকে গিয়েছে। ইউরোপা লিগেও ছিটকে যাওয়ার মুখে। ইপিএলে এক নম্বর ম্যান ইউয়ের থেকে ১৯ পয়েন্ট পিছিয়ে আছে। আমার মনে হয়, ল্যাম্পার্ড-মাতাদের এত বিপর্যয়ের বড় কারণ, টিমের ঘনঘন কোচ পাল্টে যাওয়া। বেনিতেজ আসার পরে তবু একটু হলেও পুরনো চেলসিকে দেখা যাচ্ছে।
যাদের ১০ মার্চ, ২০১৩-ই ছিল ১০৮তম বর্ষপূর্তি দিবস। এমন দিনে চেলসি হারে কী করে? ফুটবলদেবতাও বোধহয় সেটা চাননি। |