লিগ গোলের বিশ্বরেকর্ড: মৃগয়ায় ফের রাজপুত্র
মেসি বলেই ওই রকম ওয়াল খেলতে পারল
লেখাটা শুরু করার আগে পাঠকদের একটা অনুরোধ করব। ঠিক কত জন শনিবার রাতে বার্সেলোনার ম্যাচটা দেখেছেন, জানি না। যদি না দেখে থাকেন, ইউ টিউব খুলুন। লিওনেল মেসি সার্চ দিয়ে গোলটা আগে দেখুন। কাগজে ম্যাচ রিপোর্ট পড়ে বা বিশেষজ্ঞের বিশ্লেষণ শুনে মেসির শিল্পকে বুঝতে পারবেন না। আর বাজি ধরছি, একবার দেখলে বারবার দেখতে ইচ্ছে করবে।
আমার নিজের যেমন হচ্ছে। আজ মাঝে মাঝেই ইউ টিউবে গোলটা দেখছিলাম। সমালোচকদের মুখগুলো ভাবার চেষ্টা করছিলাম। কয়েক দিন ধরেই তো ফুটবল বিশ্বে বলাবলি হচ্ছিল, মেসি শেষ। ওর টিম বার্সেলোনা শেষ। পরপর দু’টো এল ক্লাসিকো হেরেছে। ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডোর কাছে ব্যক্তিগত যুদ্ধে মেসি হেরেছে। একটা যুগের বোধহয় শেষ হল।
আজ সকাল থেকে হেডলাইনগুলো মুহূর্তে পাল্টে গেল! আসলে কী জানেন, শিল্পীর শিল্পের কখনও মৃত্যু হয় না। মাঝে মাঝে শুধু হোঁচট খায় মাত্র।
শনিবার দেপোর্তিভো লা করুনা ম্যাচে মেসি তত্ত্বটা ফের বুঝিয়ে দিল। বার্সেলোনা জিতল ২-০। ৮৮ মিনিটে মেসির গোলটা। দেখুন, অনেকে ওর এই গোলটার সঙ্গে মারাদোনার ছ’জনকে ড্রিবল করা গোলটার তুলনা করছেন। আমি করব না। তবে এটাও অসাধারণ। সেন্টার লাইনের একটু উপর থেকে ইনিয়েস্তার থ্রু ধরে তিন জনকে ড্রিবল করে বেরিয়ে স্যাঞ্চেজের সঙ্গে ওয়াল খেলে বক্সে ঢুকে পড়ল। শতকরা আটানব্বই জন ফুটবলার ওই অবস্থায় বক্সে ঢুকে গোলকিপারকেও ড্রিবল করতে যেত। ‘ওয়াল’ খেলার কথা ভাবত না। মেসি এখানেই আলাদা। ও ধুরন্ধর, বুঝেছিল ড্রিবল করে বক্সে ঢুকে পড়লে গোলকিপার অ্যাডভান্টেজ পেয়ে যাবে। স্কোয়ার ডাইভ দেবে। মেসি তাই উল্টো রাস্তা ধরল। আরও একটা জিনিস ভাবতে হবে। ‘ওয়াল’ খেলার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে মেসি সময় পেয়েছিল সেকেন্ডের ভগ্নাংশ। ফুটবলমস্তিষ্ক তুখোড় হলে যেটা করা যায়। ‘পেরিফেরাল ভিশন’ কতটা দুর্দান্ত হলে ড্রিবল করতে করতে আন্দাজ করা যায় বক্সের ডান দিক ধরে স্যাঞ্চেজ উঠে আসছে। আর স্যাঞ্চেজেরও বাড়তি ধন্যবাদ প্রাপ্য। অসাধারণ ফাইনাল পাসটা না থাকলে, মেসির দুর্ধর্ষ স্কুপটা কি আর দেখতে পেতাম?
লিগ গোলের বিশ্বরেকর্ড
বিস্তারিত...
আসলে এত দিন বার্সার তিকিতাকা বিপক্ষের কাছে ‘প্রেডিক্টেবল’ হয়ে পড়ছিল বলে অসুবিধায় পড়ছিল মেসি। কিন্তু শেষ কয়েকটা ম্যাচ থেকে দেখছি, তিকিতাকা থেকে বেরিয়ে আসছে বার্সা। চার-পাঁচটা পাস খেলে লম্বা পাসে চলে যাচ্ছে। মেসির সমস্যা হল, ওর যুগে একটা রোনাল্ডো আছে। তুলনাটা তাই রোজ চলবে। ষাটের দশকে যেমন পেলে বনাম ইউসেবিও চলত। কিন্তু মেসি বা রোনাল্ডো শেষএই কথাটা লেখা কখনও উচিত নয়। ’৬৬ বিশ্বকাপে পেলেও তো আটকে গিয়েছিল। তা বলে ’৭০-এর বিশ্বকাপ জেতায়নি?
আর একটা ব্যাপারও এ বার ফুটবল বিশ্বের বোঝা উচিত। ডিফেন্সিভ স্ক্রিন রেখে, বা ‘ব্ল্যাঙ্কেট ডিফেন্স’ করে মেসিকে আটকানো সম্ভব নয়। ছোট-বড় অনেক টিমকেই করে ত দেখি বার্সার বিরুদ্ধে ম্যাচ পড়লে। শনিবার ও সব করে দেপোর্তিভো আটকাতে পারল? সম্ভব নয়। আসলে এই মুহূর্তে স্কিলে মেসির সঙ্গে পাল্লা কেউ টানতে পারবে না। ব্ল্যাঙ্কেট ডিফেন্সের সামনে রোনাল্ডো আটকে যেতে পারে। মেসি নয়। কারণ ও সব সময় জায়গা পাল্টাতে থাকে। ফাঁকা জায়গা খোঁজে যেখান থেকে টার্ন নিতে পারবে। তার পর শুরু হবে স্টেপ ড্রিবল। মানে, কখনও দেখবেন না প্রথম ড্রিবলের পর মেসির পা থেকে বল এত দূরে চলে যাচ্ছে যে, পরবর্তী ড্রিবলটা করা যাচ্ছে না। রোনাল্ডো ব্যাপারটাকে গতি দিয়ে ম্যানেজ করে। তবে সার্বিক ভাবে ড্রিবলিংয়ে মেসির বৈচিত্র বেশি। আমার তো মনে হয়, এ সি মিলানের বিরুদ্ধে ফিরতি ম্যাচে অন্য বার্সা নামবে। আগুনে মেসি কিন্তু ফিরছে।
ভাঙল ৭৫ বছর আগের রেকর্ড
এর আগে পোলিশ লিগে টানা ১৬ ম্যাচে গোল করার রেকর্ড ছিল থিওডর পিউটেরেকের। রুখ চারজৌ ক্লাবের হয়ে।
লা লিগায় এর আগে টানা গোল করার রেকর্ড ছিল ব্রাজিলের রোনাল্ডোর। ১০ ম্যাচে। যে রেকর্ড মেসি আগেই ভেঙে দিয়েছিলেন।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.