সিপিআই কাউন্সিলরদের চিঠি ঘিরে চাপানউতোর চলছে। রবিবার বিষয়টি নিয়ে সিপিআইয়ের খড়্গপুর শহর নেতৃত্ব বৈঠক করেন। সিদ্ধান্ত হয়, কাউন্সিলরদের এই পদক্ষেপ দল অনুমোদন করছে না। তিন কাউন্সিলরকে চিঠি প্রত্যাহারের নির্দেশও দিয়েছে দল। সিপিআইয়ের জেলা সম্পাদক সন্তোষ রাণা বলেন, “দলের মত না নিয়েই কাউন্সিলররা চিঠি দেন। এই পদক্ষেপ দল সমর্থন করছে না। আশা করব ওঁরা চিঠি প্রত্যাহার করবেন।” না করলে কি তাঁদের দল থেকে বহিষ্কার করা হবে? সন্তোষবাবুর জবাব, “দলে আলোচনা করেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত হবে।”
রবিবার দিনভর এই চিঠি নিয়ে শোরগোল চলে খড়্গপুরে। সিপিআইয়ের জেলা নেতৃত্ব যোগাযোগ করেন খড়্গপুর শহর নেতৃত্বের সঙ্গে। শহর নেতৃত্ব নিজেরা বৈঠক করেন। তারপরই চিঠি প্রত্যাহারের নির্দেশ দেওয়া হয়। যদিও সন্ধ্যায় সিপিআই কাউন্সিলর তৈমুর আলি খান বলেন, “এখনও এমন নির্দেশ পাইনি।” শনিবার খড়্গপুরের মহকুমাশাসক আর বিমলাকে চিঠি দেন সিপিআইয়ের তিন কাউন্সিলর। জানান, তৃণমূলের জহরলাল পাল পুরপ্রধান হলে তাঁদের সমর্থন থাকবে। এরপরই শুরু হয় জল্পনা। ওই কাউন্সিলরদের বক্তব্য, পুরসভায় অচলাবস্থা চলছে। তা কাটাতেই তাঁরা তৃণমূল প্রার্থীকে পুরপ্রধান পদে সমর্থন করতে চান। যদিও কাউন্সিলরদের এই সাফাই নিয়ে প্রশ্ন ওঠে দলের মধ্যেই। মূলত দু’টি প্রশ্ন ঘোরাফেরা করে। এক, অনাস্থা এনেছিল কংগ্রেস। ফলে অচলাবস্থা চললে তার দায় সিপিআইয়ের নয়। সে ক্ষেত্রে আগ বাড়িয়ে কেন এমন চিঠি? তা-ও আবার দলীয় নেতৃত্বের মতামত না নিয়ে। দুই, এ ভাবে চিঠি দিয়ে কী পুরসভায় স্থিতাবস্থা ফেরানো যায়? যখন বিষয়টি বিচারাধীন রয়েছে।
শুধু সিপিআই নয়, চিঠি ঘিরে প্রশ্ন উঠেছে তৃণমূলের অন্দরেও। দলের একাংশের মতে, এমন চিঠির ফলে দলীয় কাউন্সিলরদের মধ্যে বিভাজন তৈরি হতে পারে। কারন, সিপিআই কাউন্সিলররা পুরপ্রধান হিসেবে জহরলাল পালকে চাইছেন। অন্য কাউকে নয়। যদিও এমন আশঙ্কার কথা উড়িয়ে দিচ্ছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোৎ ঘোষের বক্তব্য, “কাউন্সিলররা জনপ্রতিনিধি। ফলে, যে কোনও কাউন্সিলর পুরবোর্ডকে সমর্থন করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে সকলের সহযোগিতাই কাম্য। পুরসভার সঙ্গে দৈনন্দিন পরিবেষার প্রসঙ্গ জড়িত। এটা ভুলে গেলে চলবে না।” অন্য দিকে, প্রাক্তন পুরপ্রধান তথা তৃণমূল কাউন্সিলর জহরলাল পালেরও দাবি, “পুরপ্রধান হিসেবে যে কাজ করেছি, ওই চিঠি তাকেই মর্যাদা দিচ্ছে। পুরপ্রধান থাকাকালীন দলমত নির্বিশেষে সকলকে নিয়ে কাজ করেছি। আগামী দিনেও তা করতে চাই।”
সব মিলিয়ে সিপিআই কাউন্সিলরদের চিঠি ঘিরে রেলশহরে জলঘোলা অব্যাহত। দলীয় নেতৃত্বের নির্দেশ মেনে সিপিআই কাউন্সিলররা চিঠি প্রত্যাহার করেন কি না, সেটাই দেখার। প্রশ্নের উত্তর মিলবে আজ-কালের মধ্যেই। জানা যাবে, নির্দেশ না মানলে সিপিআই নেতৃত্ব কী পদক্ষেপ করেন, তাও। |