|
|
|
|
নেতৃত্ব নিয়ে লড়াই নেই, দাবি করলেন ঘাটোয়ার |
নিজস্ব সংবাদদাতা • গুয়াহাটি |
দলে কোনও বিদ্রোহ নেই। কিছু বিধায়কের অভিমানকে মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি অনাস্থা হিসাবে দেখাবার অপচেষ্টা হয়েছে-এমনটাই মত উত্তর-পূর্ব উন্নয়নমন্ত্রী পবনসিংহ ঘাটোয়ারের। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল, স্বাস্থ্য ও শিক্ষামন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মাকে ঢাল হিসাবে রেখে, যুব বিধায়কদের ও চা জনগোষ্ঠীর বিধায়কদের একজোট করে তরুণ গগৈকে হঠিয়ে, অসমের সিংহাসন দখলের চেষ্টা করছেন তিনি। কিন্তু এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে ঘাটোয়ার বলেন, “কিছু মানুষের অপচেষ্টা ও অপব্যখ্যার ফলেই বিভিন্ন ধরণের গুজব রটছে। নেতৃত্ব নিয়ে কোনও লড়াই চলছে না।”
ঘাটোয়ার গত কালই দিল্লি থেকে ডিব্রুগড়ে চলে এসেছেন। হিমন্তও দিল্লি থেকে গুয়াহাটি ফেরেন। তিনি টুইট করেন, “দিল্লি থেকে অনেক সন্তুষ্টি নিয়ে ফিরলাম।” তবে, সন্তোষের কারণ খোলসা করেননি। অন্য দিকে, ঘাটোয়ার ডিব্রুগড় এসেই স্ত্রী তথা গগৈ-বিরোধী ‘গোপন বৈঠকে’ নেতৃত্ব দেওয়া বিধায়ক জীবনতারা ঘাটোয়ার এবং ওই বৈঠকে উপস্থিত চা জনগোষ্ঠীর বিধায়কদের নিয়ে দীর্ঘ বৈঠক করেন। সেখানে চা মজদুর সঙ্ঘের নেতারাও অংশ নেন। দলীয় সূত্রে খবর, বিধায়ক ও নেতারা চা বাগানের প্রতি গগৈ সরকারের অবহেলা ও শ্রমিকদের বঞ্চনার প্রতিবাদে মুখর হয়েছিলেন। ঠিক হয়েছে, চা শ্রমিকদের পাট্টাপ্রদানসহ বিভিন্ন দাবি নিয়ে গগৈকে চূড়ান্ত স্মারকপত্র প্রদান করা হবে। তাতে কাজ না হলে, বাগানগুলিতে বৃহত্তর আন্দোলন শুরু হবে। ঘাটোয়ার বলেন, “শ্রমিকদের অসন্তোষেই চা জনগোষ্ঠীর বিধায়কেরা একজোট হয়ে সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানিয়েছিলেন। তার অর্থ করা হয়েছে, বিধায়কেরা মুখ্যমন্ত্রীর বদল চান। এটি ঠিক নয়।”
এ দিকে, গগৈ সমর্থকেরা মুখ্যমন্ত্রীর সমর্থনে যে ‘আস্থা-সই’ সংগ্রহ অভিযান শুরু করেছিলেন সেখানে গগৈয়ের স্বপক্ষে ৫৮টির বেশি ভোট পড়েনি। গগৈ দিল্লি গিয়েই, সই সংগ্রহ বন্ধের নির্দেশ দেন।
গগৈ শিবির ও বর্তমানে বিরোধী শিবিরেরও বক্তব্য, ‘তৃতীয় পক্ষ’র হস্তক্ষেপেই পরিস্থিতি বিগড়েছে। ‘বিদ্রোহী’ বিধায়ক রেকিবুদ্দিন আহামেদ বলেন, “আমাদের কিছু ক্ষোভ থাকতেই পারে। তা নিয়ে দলের ভিতরেই আলোচনা করেছিলাম। সেই ঘটনা প্রকাশ করে যেভাবে রাজনৈতিক রং চড়ানো হয়েছে তা ষড়যন্ত্র। আমরা গগৈয়ের নেতৃত্বে মোটেই অনাস্থা জানাই নি, বা মুখ্যমন্ত্রীর অপসারণ চাইনি।” তবে, গগৈ শিবিরের বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রী কয়লা, মাছ, পান, চেক গেট, তামাক, জমি, লটারি সিন্ডিকেটগুলি ভেঙে দেওয়ার পদক্ষেপ নেওয়ায় ওইসব ব্যবসা কুক্ষিগত করে রাখা কয়েকজন বিধায়ক ও এক মন্ত্রীর উস্কানিতেই রাজ্য ও দলে বারবার অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে।
গগৈপন্থীরা আরও একধাপ এগিয়ে অভিযোগ এনেছেন, তামাক প্রস্তুতকারক সংস্থার আর্থিক আনুকূল্য ও চাপেই ‘তামাক-বিরোধী’ গগৈকে সরাবার চেষ্টা চলছে। তাই, শুক্রবার রাতে তড়িঘড়ি মুখ্যমন্ত্রী বিবৃতি প্রকাশ করে, অবিলম্বে রাজ্যে সব ধরনের তামাক, সিগারেট, গুটখা বিক্রয় ও প্রদর্শন নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন।
কংগ্রেস সরকারের জোট শরিক বিপিএফ প্রধান হাগ্রামা মহিলারিও মনে করছেন, “কংগ্রেসের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা বহিঃশক্তির চক্রান্ত।” এআইইউডিএফ-এর সঙ্গে কংগ্রেসের মিত্রতা নিয়ে এই দ্বন্দ্বের সূত্রপাত। ভাবা হয়েছিল, লোকসভা ভোটে এআইইউডিএফ-কংগ্রেস জোট হলে বিপিএফ সরে যেতে পারে। কিন্তু, হাগ্রামা জানান, যারাই ক্ষমতায় থাকবে, বিপিএফ তার সঙ্গেই থাকবে। বিরোধী আসনে বসবে না। এমনকী, কংগ্রেস সরে গিয়ে এআইইউডিএফ ক্ষমতায় এলে তারা আজমলের সঙ্গেও জোট বাঁধতে তৈরি। |
|
|
|
|
|